সরকারের কাছে হাজার কোটি টাকা চেয়েছে বিমান

সরকারের কাছে হাজার কোটি টাকা চেয়েছে বিমান

সংস্থার আর্থিক সঙ্কট মোকাবেলায় সরকারের কাছে এক হাজার কোটি টাকা চেয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। এর মধ্যে জরুরি ভিত্তিতে চাওয়া হয়েছে ৫০০ কোটি টাকা।

পরপর তিন বছর টানা লোকসানের কারণে বিমানের দৈনন্দিন কাজ চালানোই দুরূহ হয়ে পড়েছে। এর সঙ্গে রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী এয়ারলাইন্সের দেনা রয়েছে দেড় হাজার কোটি টাকার ওপরে। এ অবস্থায় প্রতিষ্ঠানকে বাঁচাতে এই অর্থ চেয়েছে বিমান কর্তৃপক্ষ।

বিমানের নির্ভরযোগ্য একধিক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। তবে বিষয়টি স্পর্শকাতর হওয়ায় এ নিয়ে বিমানের উর্ধ্বতন কর্তাদের কেউ কাছে নাম উল্লেখ করে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

বিমানের পরিচালনা পর্ষদের অন্যতম সদস্য ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ তারেকের মাধ্যমে এই অর্থ চাওয়া হয়েছে। বিমান নিজেদের আর্থিক পরিস্থিতি বর্ননা করে সরকারের কাছে অর্থ চাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।

অর্থ চাওয়ার পেছনে বিমান যুক্তি হিসেবে দেখিয়েছে, বোয়িং এর নতুন উড়োজাহাজ কেনা, এই উড়োজাহাজ চালাতে ৮০ প্রকৌশলীকে প্রশিক্ষণ, বোয়িং ৭৭৭ চালাতে বৈমানিকদের প্রশিক্ষণ, জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যাওয়াসহ বিমানের সার্বিক খরচ বেড়ে যাওয়া।

তাছাড়া প্রতিবেশী দেশ ভারতের রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী এয়ারলাইন্স এয়ার ইন্ডিয়াকে সেদেশের সরকার সব মিলিয়ে প্রায় ৩০ হাজার কোটি রুপি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। এ বিষয়টিও বিমানকে অর্থ পেতে যুক্তি হিসেবে দাঁড় করাতে উদ্বুদ্ধ  করেছে।

বিমান সূত্রে জানা গেছে, বোয়িংয়ের নতুন দুটি উড়োজাহাজ ‘পালকি’ ও ‘অরুণ আলো’র কিস্তি বাবদ বিমানকে তিনমাস পরপর ৬০ কোটি টাকা দিতে হচ্ছে। কিন্তু অর্থ না থাকার কারণে ডিসেম্বরের কিস্তি এখনও দিতে পারেনি বিমান। এজন্য বোয়িংয়ের কাছে সময় চেয়েছে রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী এয়ারলাইন্স।

এয়ারলাইন্সের দুরবস্থার জন্য বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি বিমানের অনিয়ম ও দুর্নীতিকে দায়ী করেছে।

সূত্র জানায়, বিমান যদি সরকারের কাছ থেকে এই অর্থ না পায়, তবে শুধু দৈনন্দিন কাজই নয়, বিমানের কর্মীদের বেতনভাতা দেওয়াও কঠিন হয়ে পড়বে। গেল বছরে বিমান ১৯৯ কোটি টাকা লোকসান দিয়েছে। এর আগের দুই বছরে যথাক্রমে ৮০ কোটি টাকা ও ১৫ কোটি টাকা লোকসান দেয়।

এই লোকসানের কারণের ব্যাখ্যা চেয়ে বিমান মন্ত্রণালয় থেকে বিমানের কাছে জবাবদিহিতাও চাওয়া হয়েছে। কিন্তু বিমান কর্তৃপক্ষ এর জবাব দেয়নি।

অর্থ বাণিজ্য