যথাযথ শিক্ষার প্রতি মনোযোগ দিন : প্রধানমন্ত্রী

যথাযথ শিক্ষার প্রতি মনোযোগ দিন : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে যাতে শিক্ষা কর্মকান্ড যথাযথভাবে পরিচালিত হয়, সেদিকে মনোযোগ দেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘আমাদের ছাত্র-ছাত্রীরা মেধাবী এবং তাদেরকে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দেয়া হচ্ছে। তাহলে কেন তারা পরীক্ষায় পাস করবে না। তাই আমি মনে করি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে যাতে শিক্ষা কর্মকান্ড যথাযথভাবে পরিচালিত হয়, সেদিকে মনোযোগ দিতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী শনিবার সকালে গণভবনে বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন এবং এ বছরের প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি), ইবতেদায়ী, জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি), জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) এবং সমমানের পরীক্ষার ফলাফল গ্রহণকালে এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে বই হস্তান্তরের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ কর্মসূচি উদ্বোধন করেন।
প্রধানমন্ত্রী আধুনিক বিশ্বের কথা মাথায় রেখে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য সময়োচিত পাঠ্যসূচি প্রণয়ন করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন।
তিনি বলেন, বিশ্ব নিয়মিত পরিবর্তন হচ্ছে। তাই আমাদেরকে আধুনিক বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে সময়োচিত পাঠ্যসূচি প্রণয়ন করতে হবে।

শিক্ষকদের জন্য প্রশিক্ষণ কার্যক্রম আরো জোরদারের ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে তবে এটি আরো জোরদার করতে হবে… আমরা যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যাওয়ার গতি ধরে রাখতে চাই।’
পিইসি, জেএসসি এবং সমমানের অন্যান্য পরীক্ষা চালুর কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, পাবলিক পরীক্ষার ভয় নিরসনের মাধ্যমে শিশুদের আত্মবিশ্বাসী করে তুলতে এসব পরীক্ষা সহায়ক হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দারিদ্র নিরসনের মাধ্যমে উন্নত ও সমৃদ্ধ জাতি গঠনের জন্য তাঁর সরকার শিক্ষার প্রতি সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছে। শিক্ষা ছাড়া কোন জাতি প্রত্যাশিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারে না। দেশকে প্রত্যাশিত লক্ষ্যে এগিয়ে নেয়ার জন্য একটি শিক্ষিত প্রজন্ম গড়ে তুলতে তাঁর সরকার প্রয়োজনীয় সবকিছুই করে যাচ্ছে।
শিক্ষাকে সম্পদ হিসেবে বর্ণনা করে শেখ হাসিনা সুশিক্ষিত হিসেবে নিজেদের বিকাশে জন্য শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, শিক্ষাকে কেউ চুরি অথবা ছিনতাই করতে পারে না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার পরপরই বঙ্গবন্ধু সরকার শিক্ষাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়ার পাশাপাশি প্রাথমিক শিক্ষা বাধ্যতামূলক এবং বিপুলসংখ্যক প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করা হয়।
তিনি উল্লেখ করেন যে, তাঁর দল সকল স্টেক হোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা সভা, সেমিনার সিম্পোজিয়াম এবং বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে পরামর্শের পরে শিক্ষানীতি তৈরি করেছে। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে পাঠ্যবই বিতরণ ও বৃত্তি প্রদান এবং বিদ্যালয়ে খাবার সরবরাহ কার্যক্রম নেয়া হয়েছে। স্কুল ও কলেজে মাল্টিমিডিয়া শ্রেণীকক্ষ স্থাপন করা হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ত্রিশ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে এ দেশের স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে। তিনি বলেন, ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত দেশ গঠনের লক্ষ্যেই বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ স্বাধীন করেছেন… যখন আমরা ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত সোনার বাংলা নির্মাণ করতে পারবো তখনই তাঁর স্বপ্ন বাস্তবায়িত হবে। বিশ্বে বাংলাদেশকে একটি মর্যাদাপূর্ণ দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রী তাঁর দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করে বলেন, অন্যদের কাছে ভিক্ষা নয়, আমরা আমাদের মাথা উঁচু করে রাখতে চাই।
শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী এডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। শিক্ষা সচিব সোহরাব হোসেন অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন।
শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ জেএসসি এবং জেডিসি এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান আনুষ্ঠানিকভাবে পিইসি ও এবতেদায়ীর ফলাফল প্রধানমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মোতাহার হোসেন, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী এবং প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ