গ্রিস নির্বাচন জনগণের সামনে ‘হয় কৃচ্ছ্রসাধন নয় গণদারিদ্র্য’

গ্রিস নির্বাচন জনগণের সামনে ‘হয় কৃচ্ছ্রসাধন নয় গণদারিদ্র্য’

আগামী রোববার অনুষ্ঠেয় নির্বাচনের শেষ মুহূর্তের প্রচারণায় গ্রিসের বামপন্থি নেতা ইভানজেলোস ভিনজেলোস বলেছেন, গ্রিসকে কৃচ্ছ্রসাধন এবং গণদারিদ্র্যের মধ্যে যেকোন একটিকে বেছে নিতে হবে।

রাজধানী এথেন্সের সিনটেগমা স্কয়ারে নির্বাচনী প্রচারণার সমাবেশ শেষে এক ভাষণে তিনি বলেন, ‘রোববারই আমাদের জনগণের ভাগ্য নির্ধারিত হবে।’

ঋণসঙ্কটে জর্জরিত ইউরোজোন রাষ্ট্র গ্রিস সঙ্কট উত্তরণে সরকারে ব্যয়সঙ্কোচন নীতি নিতে বাধ্য হচ্ছে। তথাকথিত ট্রইকা বা ইইউ, ইউরোপিয়ান সেন্ট্রাল ব্যাংক এবং আইএমএফ তাদের এ শর্তই দিয়েছে। কিন্তু সাধারণ জনগণের তীব্র আপত্তির মুখে এ শর্ত বাস্তবায়ন অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এ অবস্থায় রোববারের নির্বাচনে কৃচ্ছ্রসাধনের পক্ষের নেতা বা দল জনসমর্থন হারাবে বলেই মনে করা হচ্ছে।

সেই হিসাবে মধ্যডানপন্থি দল নিউ ডেমোক্র্যাসির উত্থান ঘটতে পারে বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা। এ দলটি জনগণের দাবির পক্ষে কথা বলছে। যদিও বিশ্লেষকরা মনে করছেন, গ্রিসকে উদ্ধার পেতে হলে আইএমএফ’র শর্ত মেনে চলা ছাড়া গত্যন্তর নেই।

বামপন্থি পাসোক পার্টি কৃচ্ছ্রসাধনের পক্ষেই কথা বলছে। এ দলের নেতা ইভানজেলোসের মতে, সঙ্কট কাটাতে গ্রিসকে কৃচ্ছ্রসাধনের মতো কঠোর তবে নিরাপদ পথকেই বেছে নিতে হবে। তা না করলে বহু দশক পিছিয়ে গিয়ে দেশকে ব্যর্থতার এবং গণদারিদ্র্যের দিকে ঠেলে দেওয়া হবে বলে মনে করেন তিনি।

এর জবাবে নিউ ডেমোক্র্যাসির নেতা অ্যান্টোনিস সামারাস বলেছেন, ‘বিরোধী দল দেশের ইউরোপীয় ভবিষ্যৎ নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে।’

এর জবাবে সমাবেশে সমর্থকদের উদ্দেশে ভেনিজেলোস বলেন, ‘ইউরোপে এবং ইউরোতে আমাদের অবস্থান কী হবে তা রোববারেই নির্ধারিত হবে।’

অপর দিকে নির্বাচনের আগে আলেকজান্দ্রোপোলিসে আয়োজিত শেষ সমাবেশে সামারস বলেছেন, ‘বামরা সব কিছু নষ্ট করতে চায়… এরা সঙ্কটে ঘৃতাহুতি দিচ্ছে।’

বামপন্থি পাসোক পার্টির নেতা ভেনিজেলোস দলের দায়িত্ব নেওয়ার জন্য গত মার্চে পদত্যাগের আগে পর্যন্ত অর্থমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। গত নভেম্বর থেকে তার দল নিউ ডেমোক্র্যাসির সঙ্গে জোট গঠন করে সরকারে বড় অংশীদারে পরিণত হয়েছে।

পাসোক-নিউ ডেমোক্র্যাসি জোট সরকার ব্যয় সঙ্কোচন নীতির বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করছে। কিন্তু উভয় দলই এর বিরোধিতা করে আসছে।

রোববারের নির্বাচনে এই একটি ইস্যুই নির্বাচনের অংশগ্রহণকারী দলগুলোর ভাগ্য নির্ধারণ করবে।

এদিকে মতামত জরিপে দেখ গেছে, মধ্য ডানপন্থি নিউ ডেমোক্র্যাসি ২২ শতাংশ ভোট পেয়ে প্রথম স্থানে থাকবে। ১৮ শতাংশ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকবে বামপন্থি পাসোক পার্টি আর কট্টর ডানপন্থি গোল্ডেন ডন পার্টি ৫ শতাংশ ভোট পেয়ে প্রথমবারের মতো পার্লামেন্টে জায়গা করে নিতে পারে।

এদিকে, ট্রইকার শর্তের বিরোধিতাকারী বামদলগুলো জোটবদ্ধভাবে ৩০ শতাংশ ভোট পেতে পারে বলে মতামত জরিপে পাওয়া গেছে।

আন্তর্জাতিক