আল কায়েদা নেতা ওসামা বিন লাদেনের ১৭টি চিঠি ইন্টারনেটে প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্র সেনা বাহিনীর কমব্যাটিং টেরোরিজম সেন্টার গত বৃহস্পতিবার এসব চিঠি প্রকাশ করে।
চিঠির ভাষায় বুঝা যায়, শেষ সময়ে নিজের সংগঠন অকার্যকর হওয়ার আশঙ্কায় খুব চিন্তিত ছিলেন বিন লাদেন। এছাড়া বিশ্ব মুসলিম সম্প্রদায়ের আস্থা হারানোর ভয়ও ছিল তার। এই মুসলিমদের তাদের সরকার এবং পশ্চিমা শক্তির বিরুদ্ধে উত্তেজিত ও প্রতিরোধী করে তোলার অঙ্গীকার নিয়েই তিনি আল কায়েদা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
ইন্টারনেটে প্রকাশিত মোট ১৭২ পৃষ্ঠার নথিগুলো সব আরবি ভাষায় লেখা। আর এগুলো গত বছরের ২ মে পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদের সেই কম্পাউন্ড থেকে উদ্ধার করা ৬ হাজার নথির একটি অংশ। এ কম্পাউন্ডে মার্কিন বিশেষ বাহিনী সিলের অভিযানে নিহত হন আল কায়েদা নেতা ওসামা বিন লাদেন।
পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদ থেকে মাত্র ২০ কিলোমিটার দূরে গ্যারিসন শহর অ্যাবোটাবাদের সেই কম্পাউন্ডের নিরাপত্তা নিয়ে বেশ খুশি এবং নিশ্চিন্তই ছিলেন- প্রকাশিত নথিতে বিন লাদেনের এমন বক্তব্য রয়েছে।
তবে ওসামা বিন লাদেন বা আল কায়েদাকে পাকিস্তান সরকার বা সরকারি কোনো প্রতিষ্ঠান সরাসরি সমর্থন দিত এমন কোনো ইঙ্গিত নথিপত্রগুলোতে পাওয়া যায়নি।
প্রকাশিত চিঠির ভাষায় আরো বুঝা যায়, এই আল কায়েদা নেতা তার সন্ত্রাসাবাদী নেটওয়ার্কের ভঙ্গুর পরিস্থিতিতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলেন। সরকার ও পশ্চিমা শক্তির বিরুদ্ধে চালিয়ে যাওয়া লড়াইয়ে মুসলিম জনগোষ্ঠীর সমর্থন হারানোর ভয়ে তিনি শঙ্কিত ছিলেন।
নথিগুলোর বরাত দিয়ে আল জাজিরার প্রতিবেদক অ্যালান ফিশার জানিয়েছেন, তথাকথিত আল কায়েদা সহযোগীদের কার্যকলাপ মূল আল কায়েদার সুনাম ক্ষুণ্ন করবে এমন ভয়ে ভীত ছিলেন বিন লাদেন। আল কায়েদা তার হামলায় কোনো মুসলিম নয় বরং মার্কিনিদের প্রাধান্য দিত বলেই বুঝা যায়।
প্রসঙ্গত, ২০১১ সালের ২ মে বিন লাদেন নিহত হওয়ার পর আল কায়েদার ভবিষ্যৎ নিয়ে অনেকটা সংশয় দেখা দিয়েছিল। অনেকে ধারণা করেছিলেন- বিন লাদেনের বিকল্প পাওয়া কঠিন হবে আর তাৎক্ষণিক নেতৃত্ব সঙ্কটের কারণে সংগঠনটি ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়তে পারে।
তবে সংগঠনের মধ্যে নেতৃত্ব নিয়ে প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব সেভাবে কারো চোখে পড়েনি। বর্তমানে আল কায়েদার প্রধান নেতা আইমান আল জাওয়াহিরি।