গজারিয়া দুর্ঘটনা: দুই নৌযানের মালিকও দোষী

গজারিয়া দুর্ঘটনা: দুই নৌযানের মালিকও দোষী

মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় লঞ্চডুবিতে হতাহতের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত লঞ্চ এবং ওই লঞ্চকে আঘাতকারী মালবাহী জাহাজের মালিককে দায়ী করে তদন্ত কমিটি বলেছে, তারা অদক্ষ চালক দিয়ে নৌযান চালানোর কারণেই ওই দুর্ঘটনা ঘটে।

ওই ঘটনায় গঠিন তিনটি তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে তৈরি ‘সমন্বিত প্রতিবেদন’ প্রকাশ করে বৃহস্পতিবার নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে নৌ-পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান এ তথ্য জানান।

গত ১৩ মার্চ গভীর রাতে গজারিয়ার মেঘনা নদীতে ‘সিটি-১’ নামের কার্গো জাহাজটির ধাক্কায় শরীয়তপুর-১ নামের যাত্রীবাহী লঞ্চটি ডুবে গেলে অন্তত ১৪৭ জনের প্রাণহানী ঘটে।

নৌমন্ত্রী বলেন, আঘাতকারী কার্গো জাহাজের চালক ও সুকানীসহ ১২ জন কর্মী এবং ক্ষতিগ্রস্ত লঞ্চের মালিক লুৎফর রহমান চৌধুরীর বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

এর আগে গত ১৭ এপ্রিল মুন্সীগঞ্জের লঞ্চ দুর্ঘটনার জন্য দায়ী ‘সিটি-১’ নামের কার্গো জাহাজটিকে আটক করে জাহাজের ১২ কর্মীকে পুলিশে সোপর্দ করে কোস্টগার্ড।

তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই রাতে এমভি শরীয়তপুর-১ লঞ্চে ১৬০ থেকে ১৭০ জন যাত্রী এবং লঞ্চের ডেকে প্রায় ২০০ বস্তা মরিচ ছিল। এ কারণে যাত্রীরা ডেক ছেড়ে ছাদে অবস্থান নেন। ওই অবস্থার মধ্যেই লঞ্চের চালক বেপরোয়াভাবে নৌযান চালাচ্ছিলেন।

এছাড়া সরকারি আদেশ লঙ্ঘন করে রাতে চলাচলকারী মালবাহী জাহাজ সিটি-১ এর চালকও বেপরোয়া গতিতে চালাচ্ছিলেন বলে মনে করেছে তদন্ত কমিটি। ওই জাহাজের আঘাতের পরপরই লঞ্চটি ডুবে যায়।

মন্ত্রী জানান, ১৯৯১ থেকে গত ২০ বছরে দেশে নৌ-দুর্ঘটনার জন্য ৩৮৭টি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে ৩৫০টি মামলার নিষ্পত্তি হয়েছে। প্রচলিত আইন অনুযায়ী দোষীদের সর্বোচ্চ নয় বছরের কারাদণ্ড এবং বিভিন্ন অংকের জরিমানা করা হয়েছে এসব মামলায়। সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত ক্ষতিপূরণও আদায় করা হয়েছে।

লঞ্চ দুর্ঘটনায় শত শত যাত্রীর প্রাণহানীর পরও চালকের ফাঁসি বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের মতো শাস্তি না হওয়ার কারণ সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে শাজাহান খান বলেন, “বর্তমান আইনে এ ধরনের অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ তিন বছরের কারাদণ্ড এবং পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানার বিধান রয়েছে। আইন পরিবর্তন না হওয়া পর্যন্ত এর বেশি শাস্তি দেওয়া সম্ভব নয়।”

বাংলাদেশ