গণমাধ্যমে সবচেয়ে বেশি নিয়ন্ত্রণ ইরিত্রিয়ায়

গণমাধ্যমে সবচেয়ে বেশি নিয়ন্ত্রণ ইরিত্রিয়ায়

গণমাধ্যমের ওপর সবচেয়ে বেশি নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয় আফ্রিকার দেশ ইরিত্রিয়ায়। নিউ ইয়র্কভিত্তিক সংগঠন কমিটি টু প্রোটেক্ট জার্নালিস্টের (সিপিজে) প্রতিবেদন অনুযায়ী, ‘সবচেয়ে বেশি সেন্সরশিপ’ আরোপিত দেশগুলোর এই তালিকায় এর পরই আছে উত্তর কোরিয়া, সিরিয়া ও ইরান।

বৃহস্পতিবার বিশ্ব মুক্ত সাংবাদিকতা দিবস সামনে রেখে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের গণমাধ্যম পরিস্থিতি, সরকারের নিয়ন্ত্রণ বা সেন্সরশিপ আরোপ নিয়ে বুধবার এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে সিপিজে। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোকে প্রবেশে বাধা, অভ্যন্তরীণ গণমাধ্যমের ওপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরো এবং সংবাদ প্রচার-প্রকাশে নানা ভাবে বাধা দেওয়া হয় এমন শীর্ষ ১০ দেশের একটি তালিকা দেওয়া হয়েছে এই প্রতিবেদনে।

এই তালিকার বাকি ছয়টি দেশ হলো- বিষুবীয় গিনি, উজবেকিস্তান, মিয়ানমার, সৌদি আরব, কিউবা ও বেলারুশ।

প্রতিবেদনটি প্রকাশ উপলক্ষে সিপিজের নির্বাহী পরিচালক জোয়েল সাইমন এক বিবৃতিতে বলেন, “উন্নয়নে স্থিতিশীলতা আনার নামে এসব দেশের সরকার মুক্ত সাংবাদিকতার চর্চাকে দমিয়ে রাখছে, প্রচারণা চালাচ্ছে। নাগরিকদের নিয়ন্ত্রণ করার জন্য নানাভাবে প্রযুক্তির ব্যবহার করছে।”

“এসব দেশের সরকার সাংবাদিকদের হুমকি হিসেবে দেখে। সংবাদ প্রকাশের কারণে প্রায়ই তাদের খেসারত দিতে হয়”, যোগ করেন তিনি।

সিপিজে এই তালিকা তৈরি করেছে ১৫টি নিয়ামকের ওপর ভিত্তি করে, যার মধ্যে রয়েছে- ওয়েবসাইট বন্ধ করা, ইলেক্ট্রনিক রেকর্ডিংয়ের ওপর নিষেধাজ্ঞা, বেসরকারি বা মুক্ত গণমাধ্যমের অনুপস্থিতি এবং সাংবাদিকদের চলাফেরার ওপর বিধিনিষেধ।

প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রেসিডেন্ট ইসাইয়াস আফেবেরকি লৌহশাসনে ইরিত্রিয়ায় কোনো বিদেশি সাংবাদিককে ঢুকতে দেওয়া হয় না। দেশটির সব গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ করে সরকার।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০০৬ সালের তালিকায় শীর্ষে থাকা উত্তর কোরিয়া এখনও একটি ‘অতি গোপনীয় স্থান’ হয়ে আছে। তবে সরকারের কঠোর সেন্সরশিপে ‘হালকা ফাটল’ দেখা দিয়েছে। এ বছর অ্যাসোসিয়েট প্রেসের (এপি) ব্যুরো অফিস খুলতে দেওয়া হয়েছে রাজধানীতে।

“সিরিয়া ও ইরানে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা দেখা দেওয়ায় সেন্সরশিপ আরও বেড়েছে। সিরিয়া বিদেশি সাংবাদিকদের সে দেশে ঢোকায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে এবং স্থানীয় সাংবাদিকদের মুক্তভাবে ঘুরতে দিচ্ছে না। ইরানে অনেক ওয়েবসাইট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তথ্য প্রকাশ ও প্রচার রোধে সাংবাদিকদের জেলে ঢোকানো হচ্ছে।”

সিপিজে বলছে, বিষুবীয় গিনিতে সব গণমাধ্যম সরাসরি বা পরোক্ষভাবে নিয়ন্ত্রণ করেন প্রেসিডেন্ট। উজবেকিস্তানে স্বাধীনভাবে সাংবাদিকতা করা যায় না। বিদেশি সংবাদ সংস্থার স্থানীয় প্রতিনিধিরা হয়রানি ও মামলার শিকার হচ্ছেন।

মিয়ানমারেরর সামরিক জান্তাও সেন্সরশিপ আইন শিথিল করেনি বলে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে। সৌদি আরবে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা দেখা দেওয়ায় গণমাধ্যমের ওপর নিয়ন্ত্রণ আরও বাড়ানো হয়েছে।

এছাড়া কিউবায় কমিউনিস্ট পার্টি এখনও সব স্থানীয় গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ করছে। বেলারুশে যাই বা কিছু মুক্ত গণমাধ্যম ছিল, ধরপাকড়ের জন্য তারা আন্ডারগ্রাউন্ডে চলে গেছে বলে জানিয়েছে সিপেজি।

আন্তর্জাতিক