এম ইলিয়াস আলীকে ঘিরে বিএনপির পাঁচ দিনের হরতালের পর উদ্ভূত রাজনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যে ব্যবসায়ীরা কী করতে পারেন, তা নিয়ে রাজধানীর একটি হোটেলে দেড় ঘণ্টার একটি বৈঠক করেছেন শীর্ষ ব্যবসায়ী নেতারা।
এফবিসিসিআইয়ের একজন সাবেক সভাপতি বলেন, “দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আমরা বৈঠকে বসেছিলাম। আমরা আবার বৈঠকে বসব।”
বুধবার সন্ধ্যা সোয়া ৬ টার পর থেকেই ব্যবসায়ী নেতারা একে একে ওয়েস্টিন হোটেলের লবির পাশের একটি কক্ষে জড়ো হন। সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিট পর্যন্ত তারা রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন।
এ সময় এই প্রতিবেদক ওই কক্ষ থেকে বের হয়ে আসতে দেখেন একে একে আনিসুল হক, সৈয়দ মঞ্জুর এলাহী ও মাহবুবুর রহমানকে। তিন জনই এর আগে দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ী সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের প্রধানের দায়িত্ব পালন করেছেন।
একটু পর সেখান থেকে বের হন এফবিসিসিআইয়ের বর্তমান সভাপতি এ কে আজাদ, সাবেক সভাপতি মীর নাসির হোসেন ও কাজী আকরাম হোসেন।
সবশেষে বেরিয়ে আসেন সাবেক সভাপতি সালমান এফ রহমান ও আবুল কাসেম।
এই বৈঠক সম্পর্কে সাংবাদিকদের আগে কিছু জানানো হয়নি।
লবিতে এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে মাহবুবুর রহমান বলেন, “প্লিজ, এখন এ নিয়ে লেখালেখি করবেন না। তাহলে আমাদের উদ্যোগ সফল হবে না। সময় হলে আমরাই আপনাদের (সাংবাদিক) ডেকে বিস্তারিত জানাব।”
সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে সবাই নিজ নিজ গাড়িতে হোটেল ছেড়ে যান।
মাহবুবুর রহমানের বলা উদ্যোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে সালমান এফ রহমান টেলিফোনে বলেন, “এফবিসিসিআইয়ের বর্তমান সভাপতি এ কে আজাদকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি অন্য সবার সঙ্গে (বর্তমান ব্যবসায়ী নেতা) আলাপ করে বর্তমান পরিস্থিতিতে ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া যায়, তা আমাদের জানাবেন। এরপর আমরা আমাদের পরবর্তী পদক্ষেপ নেব।”
চলমান রাজনৈতিক সমস্যা নিরসনে ব্যবসায়ীরা কোনো উদ্যোগ নেবে কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, “সেটা আলোচনার মাধ্যমেই ঠিক হবে। এখন কিছুই বলা যাবে না।”
এই ধরনের বৈঠকে এর আগেও একবার বসেছিলেন বলে জানান ব্যবসায়ী নেতারা। তাতে এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু ও আব্দুল আউয়াল মিন্টুও ছিলেন বলে ওই বৈঠকে উপস্থিত এক জন নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, “দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে এর আগেও আমরা একটি বৈঠকে মিলিত হয়েছিলাম। গত ২৮ এপ্রিল রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে ওই বৈঠকটি হয়েছিল।”
“এটা মূলত এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতিদের উদ্যোগ। এর সঙ্গে বর্তমান ব্যবসায়ী নেতাদের সম্পৃক্ত করে দেশের জন্য মঙ্গল হয়, এমন কিছু করাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য,” বলেন তিনি।
হরতালে দেশের অর্থনীতির মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে মন্তব্য করে বৈঠকে উপস্থিত আরেকজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “এ পরিস্থিতিতে আমরা বসে থাকতে পারি না। দেশের অর্থনীতির যাতে ক্ষতি না হয়, সে লক্ষ্যেই আমরা ভবিষ্যতে বড় পরিসরে উদ্যোগ নেব।”