আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. মহিউদ্দিন খান আলমগীর বলেছেন, “ইলিয়াস আলীর লালিত সন্ত্রাসীরাই তাকে খুন করেছে।” বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। বিএনপি জামায়াতের কর্মসূচির নামে মানুষ হত্যার প্রতিবাদে বঙ্গবন্ধু একাডেমি এ সভার আয়োজন করে। এতে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাজী মো. সেলিম।
ড. মহিউদ্দিন খান আলমগীর বলেন, “বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলী ‘সন্ত্রাসী’ হিসেবে সারা দেশে নিজের পরিচয় ছড়িয়েছেন।”
তিনি বলেন, “ইলিয়াস আলীর গুমকে বিএনপি সমর্থন করে। নইলে তারা সরকারের সঙ্গে এক হয়ে তাকে উদ্ধারে কাজ করতো।”
“এ ঘটনায় আমরা উদ্বিগ্ন। তাকে উদ্ধারে মূলত কাজ করবে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। কিন্তু বিভিন্ন কর্মসূচি দিয়ে তাদের ব্যস্ত করে রেখেছে বিএনপি” অভিযোগ করেন মহিউদ্দিন খান।
তিনি বলেন, “এই ঘটনাকে পুঁজি করে বিএনপি রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে ব্যস্ত হয়ে উঠেছে। ইলিয়াসকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে তারা আখের গোছাতে চাইছে।”
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ সিনিয়র নেতারা ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন বলেও উল্লেখ করেন মহিউদ্দিন খান আলমগীর।
“তারা হরতালের নামে ছয়জনকে হত্যা করেছে। জনগণের জানমালের নিরাপত্তায় বিঘ্ন ঘটিয়েছে। এখন আদালতেও যেতে সাহস পাচ্ছে না। তাদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। তাদেরও কি আমরা গুম করেছি” প্রশ্ন তোলেন তিনি।
সৎ সাহস থাকলে পালিয়ে না থেকে আইনি লড়াইয়ের মুখোমুখি হতে বিএনপি নেতাদের প্রতি আহবান জানান মহিউদ্দিন খান আলমগীর।
গত ২৯ এপ্রিল বেলা ৩টা ৫১ মিনিটে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় লক্ষ্য করে বোমা নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর সন্ধ্যায় এ ঘটনায় বিএনপিকে দায়ী করে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু সাংবাদিকদের বলেছিলেন, “এর দায় হরতালকারীদেরই নিতে হবে। চোরাগোপ্তা হামলা বন্ধ না করলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সাঁড়াশি অভিযান চালাতে বাধ্য হবে।”
ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনাতে শাহবাগ থানায় একটি মামলা হয়েছে। ওই মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ ২৮ জনকে আসামি করা হয়েছে। রোববার রাতেই থানার এসআই হীরেন্দ্রনাথ প্রমানিক বাদী হয়ে মামলাটি করেছেন।
মামলায় অন্য আসামিদের মধ্যে আছেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটি সদস্য আসম হান্নান শাহ, ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকা, যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানী এমপি, আমানুল্লাহ আমান, আব্দুস সালাম, কর্নেল অব. অলি আহমেদ প্রমুখ।
বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি ইলিয়াস আলী ১৭ এপ্রিল মধ্যরাতে ঢাকা থেকে রহস্যজনকভাবে ‘নিখোঁজ’ হন। তার ব্যবহৃত প্রাইভেট কার ও একটি
মোবাইল ফোন বনানীতে তার বাসার অদূরে পরিত্যক্ত অবস্থায় পায় পুলিশ। তার গাড়িচালক আনসারের খোঁজও পাওয়া যাচ্ছে না। ইলিয়াস আলীর পরিবার ও বিএনপির পক্ষ থেকে এ নিখোঁজ ঘটনায় সরকারের কোনো গোয়েন্দা সংস্থা অথবা র্যাবের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে।
সভায় আরো বক্তৃতা করেন আওয়ামী লীগ নেতা আহম্মদ হোসেন, শেখ মো. জাহাঙ্গীর আলম, সৈয়দা রাজিয়া মোস্তফা, মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই প্রমুখ।