স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় যেদিন থেকে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়রের পদ শূন্য ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করবে তার ৯০ দিনের মধ্যে সেখানে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ আজ রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আনিসুল হকের মৃত্যুজনিত কারণে আসনটি শূন্য ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করবে। শূন্য ঘোষণার ৯০ দিনের মধ্যে সেখানে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’
তিনি বলেন, আসন শূন্য হওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করার আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তাই প্রজ্ঞাপন হাতে পেলে নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু করা হবে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, স্থানীয় সরকারের সকল পর্যায়ের নির্বাচন এখন নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের প্রতীকে অনুষ্ঠিত হবে। ডিএনসিসিতেও মেয়র পদে উপ-নির্বাচন প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীকে অনুষ্ঠিত হবে।
সম্প্রতি ডিএনসিসির সঙ্গে যুক্ত হওয়া নতুন ১৮টি ওয়ার্ডের নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সেখানে এখনই কাউন্সিলর পদে নির্বাচন হবে কি না তা বলা যাচ্ছে না। কারণ বিষয়টি জটিল। ভোটার তালিকা হয়েছে। এখন সিডি নির্মাণের কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এটি হলে কমিশনে উপস্থাপন করা হবে। পরে কমিশন এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন।
গত ২৯ জুলাই নাতিকে দেখতে লন্ডন গিয়েছিলেন মেয়র আনিসুল হক। চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় রাত ১০টা ২৩ মিনিটে তিনি ইন্তেকাল করেন। শনিবার তার মরদেহ বাংলাদেশ বিমানের একটি বিশেষ ফ্লাইটে ঢাকায় আনা হলে লাখো নগরবাসী তাকে শেষ শ্রদ্ধা জানায়। আর্মি স্টেডিয়ামে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন ও জানাজা শেষে বিকেল সোয়া ৫টায় বনানী কবরস্থানে তিনি মা ও ছোট সন্তানের পাশে চির নিদ্রায় শায়িত হন।
মেয়রের অসুস্থতাজনিত কারণে গত সেপ্টেম্বরের শুরুতে প্যানেল মেয়র হিসেবে তিন জনের নাম ঠিক করে দেয় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। এদের মধ্যে ২১ নম্বর ওয়ার্ডের কমিশনার ওসমান গণি এখন ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্ব পালন করছেন।
তবে আনিসুল হক মারা যাওয়ায় এখন প্যানেল মেয়র দিয়ে বাকি মেয়াদ পার করা যাবে না। ২০১৫ সালের ১০ মে দায়িত্ব গ্রহণ করেন আনিসুল হক। সেই হিসাবে আড়াই বছর মেয়াদ থাকতে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। আইন অনুযায়ী বাকি সময়ের জন্য মেয়র পদে নির্বাচন করতে হবে।
২০০৯ সালে প্রণীত স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন এর ১৬ ধারায় বলা হয়েছে, সিটি কর্পোরেশনের মেয়াদ শেষ হওয়ার ১৮০ দিন আগে মেয়র বা কোন কাউন্সিলরের পদ শূন্য হলে তার ৯০ দিনের মধ্যে তা পূরণ করতে হবে এবং যিনি এই পদে নির্বাচিত হবেন তিনিই কর্পোরেশনের অবশিষ্ট মেয়াদের জন্য বহাল থাকবেন।
পদ শূন্য হওয়ার বিষয়ে আইনে উল্লেখ রয়েছে- কেউ যদি মেয়র বা কাউন্সিলর হওয়ার অযোগ্য হয়ে পড়েন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শপথ গ্রহণ করতে ব্যর্থ হন বা হলফনামা দিতে না পারেন, কেউ যদি পদত্যাগ করেন, কেউ যদি অপসারিত হন বা কেউ যদি মারা যান, তাহলেও এই পদ শূন্য হবে।
তবে স্থানীয় সরকার আইন অনুযায়ী এই নির্বাচনের বিষয়ে নির্বাচন কমিশন নিজে থেকে নির্বাচনের উদ্যোগ নেবে না। মন্ত্রণালয় থেকে তাদের কাছে অনুরোধ পাঠানো হবে এবং তারা ভোটের উদ্যোগ নেবেন।