বরিশালের হিজলা উপজেলার মিয়ারচর সংলগ্ন মেঘনা নদীতে পাঁচ শতাধিক যাত্রী নিয়ে বিকল হয়ে যাওয়া বেসরকারি নৌযান গ্রীন লাইন ওয়াটারওয়েজ-২ চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে বিআইডব্লিউটিএ। নৌপথে চলাচলে গ্রীন লাইন ওয়াটারওয়েজকে পুনরায় নৌপরিবহন অধিদফতর থেকে ফিটনেস সার্টিফিকেট নিতেও বলা হয়েছে।
বিআইডব্লিউটিএ বরিশাল কার্যালয়ের নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের উপ-পরিচালক আজমল হুদা মিঠু জানান, গ্রীন লাইন-২ ওয়াটারওয়েজে প্রায়ই যান্ত্রিকত্রুটির কারণে যাত্রীদের দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। গতকালও পাঁচ শতাধিক যাত্রী নিয়ে মেঘনায় বিকল হয়ে যায় গ্রীন লাইন-২। এসব কারনে নৌপথে চলাচলে গ্রীন লাইন ওয়াটারওয়েজকে পরীক্ষা-নীরিক্ষা করিয়ে পুনরায় নৌপরিবহন অধিদফতর থেকে ফিটনেস সার্টিফিকেট নিতে বলা হয়েছে। সার্টিফিকেট না নেয়া পর্যন্ত গ্রীন লাইন ওয়াটারওয়েজ-২ চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ।
শুক্রবার দুপুর দেড়টার দিকে ইঞ্জিন বিকল হয়ে হিজলা উপজেলার মিয়ারচর সংলগ্ন মেঘনা নদীতে পাঁচ শতাধিক যাত্রী নিয়ে আটকে যায় গ্রীন লাইন ওয়াটারওয়েজ-২। শনিবার সকালে সেটি উদ্ধার করে মেরামতের জন্য অন্য একটি নৌযানের সাহায্যে টেনে নারায়ণগঞ্জের মদনপুর এলাকায় গ্রীন লাইন ওয়াটারওয়েজের নিজস্ব ডকইয়ার্ডে নেয়া হয়েছে
গ্রীন লাইন ওয়াটারওয়েজের যাত্রীরা জানিয়েছেন, প্রায় ছয় ঘণ্টা গ্রীন লাইন ওয়াটারওয়েজের মধ্যে আটকা পড়েছিলেন। এতে ২৫ জন বিদেশি যাত্রীও ছিলেন।
গ্রীন লাইন ওয়াটারওয়েজ-২ এর যাত্রী ব্যবসায়ী অসীম ভট্টাচার্য্য জানান, নৌযানটি গতকাল সকাল ৮টার দিকে ঢাকা থেকে বরিশালের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। দুপুর দেড়টার দিকে হিজলায় পৌঁছালে এর দুটো ইঞ্জিনই বিকল হয়ে পড়ে।
তিনি অভিযোগ করেন, গ্রীন লাইন ওয়াটারওয়েজের দুটি ইঞ্জিনের একটি আগেই বিকল ছিল। ওই অবস্থায় ঢাকা থেকে রওনা হলে পথে অপর ইঞ্জিনটিও বিকল হয়। সেখানে অবস্থানরত পাঁচ শতাধিক যাত্রীর খাবার ও পানি সংকট দেখা দেয়। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কয়েকজন যাত্রী ট্রলারে নেমে যান। তবে অধিকাংশই গ্রীন লাইনে আটকে ছিলেন। প্রায় ছয় ঘণ্টা পর বরিশাল থেকে তিনটি লঞ্চ গিয়ে আটকা পড়া যাত্রীদের উদ্ধার করে নিয়ে আসে। বরিশালে পৌঁছাতে রাত ১০টা বেজে যায়।
বরিশাল নৌ বন্দর পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো বেল্লাল হোসেন জানান, বরিশাল নৌ বন্দর থেকে ঘটনাস্থল প্রায় অর্ধশত কিলোমিটার দূরে। যাত্রীদের উদ্ধারে হিজলার ধুলখোলায় তিনটি লঞ্চ পাঠানো হয়। রাত ১০টার দিকে যাত্রীদের উদ্ধার করে বরিশালে নিয়ে আসা হয়।
গ্রীন লাইন ওয়াটারওয়েজের বরিশাল কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক শামসুল আরেফীন লিপটন জানান, ঢাকা-বরিশাল নৌপথে অসংখ্য ডুবো চর। হিজলা উপজেলার মিয়ারচর সংলগ্ন মেঘনা নদীতে এ রকম একটি ডুবো চরে আটকে পড়ে গ্রীন লাইন ওয়াটারওয়েজ- ২ এর সুকান ভেঙে যায়। তবে নৌযানটি ইঞ্জিনে কোনো ত্রুটি ছিল না। নৌযানে খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিলে বরিশাল থেকে স্পিড বোট যোগে খাবারের ৪০০ প্যাকেট ও পানি পাঠানো হয়। পরে তিনটি লঞ্চ যোগে যাত্রীদের বরিশালে পৌঁছে দেয়া হয়।