ইরাকে আইএস অধ্যুষিত এলাকাগুলো জঙ্গিরা কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করত সে বিষয়ে বেশ কিছু নথি প্রকাশ হয়েছে। আইএসের অভ্যন্তরীণ শাসন ব্যবস্থা এবং তাদের যেসব যোদ্ধারা আইন অমান্য করেছে তাদের ভাগ্যে যে কঠিন পরিণতি ঘটত সে সব নিয়ম-নীতি সংক্রান্ত গোপন নথিপত্র সামনে এসেছে। খবর আল জাজিরা।
ইরাকে ইসলামিক স্টেট সম্পর্কে বিভিন্ন প্রমাণাদি রয়েছে এসব নথিতে। ইরাকের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর পশ্চিমাঞ্চলীয় আল বাজ জেলা থেকে এসব নথি জব্দ করা হয়। গত জুনেই ওই শহরটি জঙ্গিদের হাত থেকে পুনর্দখল করে সেনাবাহিনী।
জঙ্গিরা কাউকে ধরে নিয়ে গেলে বা আটক করলে তাদের নিজস্ব আদালতেই তার সাজা দেয়া হতো। মধ্যপ্রাচ্যের সশস্ত্র সংগঠনগুলোর জর্ডানের বিশেষজ্ঞ হাসান আবু হানিয়াহ বলেছেন, এসব আদালতে অধিকাংশ সময়ই বন্দীদের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেয়া হয় কারণ পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা যোদ্ধাদের বেশিরভাগই যুদ্ধে অংশ নিতে অস্বীকার করে থাকে বা জঙ্গি সংগঠন থেকে তাদের নিজেদের দেশে চলে যাওয়ার অনুরোধ জানায়।
আল জাজিরা এসব নথি থেকে আরও জানিয়েছে, আইএসের নিজস্ব পুলিশও রয়েছে। যাদের কাজ হচ্ছে কেউ কোনো নিয়ম বা আইন ভঙ্গ করছে কিনা সে বিষয়ে নজর রাখা।
মদ্যপান, শিশুদের যৌন হয়রানি, চুরি এবং ব্লাসফেমির মতো অপরাধের কারণে পুলিশের হাতে আটক হওয়া লোকজনের নাম, ঠিকানা, জাতীয়তা এবং তাদের ছবিসহ বিভিন্ন তথ্য এসব নথিতে রয়েছে।
আবু হানিয়াহ জানান, কেউ চুরি করলে তার হাত কেটে দেয়া হয়, মদ্যপান করলে দোররা মারা হয় এবং কারাদণ্ড দেয়া হয়। যদি কোনো যোদ্ধা কোনো শিশুকে যৌন হয়রানি করে তবে তাদের অসংখ্যবার দোররা মারা হয় এবং কারাদণ্ড দেয়া হয়। যদি দু’জন পুরুষের মধ্যে সমকামী সম্পর্ক থাকে তবে তাদেরকে উঁচু ভবন থেকে ফেলে মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত করা হয়।
যারা যুদ্ধ করতে অস্বীকার করেছে বা দেশে ফিরে যেতে চেয়েছে তাদের সম্পর্কে বেশ কিছু নথি রয়েছে। এদের মধ্যে অধিকাংশই ফ্রান্স, সুইজারল্যান্ড, বেলজিয়াম এবং ইউরোপের বিভিন্ন দেশের নাগরিক।
গত মাসে ইরাকের প্রধানমন্ত্রী হায়দার আল আবাদী দেশটির হায়িজা শহর পুনর্দখলের ঘোষণা দেন। এটাই আইএসের সর্বশেষ শক্তিশালী ঘাঁটি ছিল।