ফেসবুকে ধর্মীয় উস্কানিমূলক পোস্ট দেয়াকে কেন্দ্র করে রংপুর সদর উপজেলার খলেয়া ইউনিয়নের ঠাকুরপাড়ায় হিন্দুদের বাড়িতে অগ্নি সংযোগ, ভাঙচুর ও পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে দায়ের করা মামলার ৫ আসামিকে রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।
রোববার দুপুর একটায় কোতোয়ালি আমলি আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন জানান মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। শুনানি শেষে আদালতের বিচারক তারিখ হোসেন আসামি মাওলানা সিরাজুল ইসলাম, জিল্লুর রহমান ও আমিনুল ইসলামের চারদিন করে এবং রশিদুল ইসলাম ও আবদুল আলীমের একদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
ঠাকুরপাড়ায় তাণ্ডবের ঘটনায় গত ১০ নভেম্বর রাতে পুলিশ বাদী হয়ে গঙ্গাচড়া ও কোতোয়ালি থানায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের করে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কোতোয়ালি থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) ফেরদৌস আহমেদ জানান, অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আসামিদের রিমান্ড আবেদন জানানো হয়।
মহানবীকে (সাঃ) নিয়ে ফেসবুকে কটূক্তি ও অবমাননাকর ছবি পোস্ট করার অভিযোগ এনে গত ৬ নভেম্বর ঠাকুরপাড়ার মৃত খগেন রায়ের ছেলে টিটু রায়ের বিরুদ্ধে রংপুর সদর উপজেলার খলেয়া ইউনিয়নের শলেয়াশাহ গ্রামের মুদি দোকানি রাজু মিয়া গঙ্গাচড়া থানায় তথ্য প্রযুক্তি আইনে একটি মামলা দায়ের করেন।
এরপর শুক্রবার (১০ নভেম্বর) জুমা নামাজের পর টিটু রায়ের ফাঁসির দাবিতে শলেয়াশাহ বাজারে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করে স্থানীয়রা। পরে কয়েক হাজার মানুষ ঠাকুরবাড়ি গ্রামে হিন্দু সম্প্রদায়ের কয়েকটি বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর, অগ্নি সংযোগ ও লুটপাট করে। এ নিয়ে স্থানীয় মুসল্লি ও গ্রামবাসীর সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে এক যুবক নিহত হন। এ ঘটনায় আহত হন পুলিশসহ ১৫ জন।
এ ঘটনায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবু রাফা মোহাম্মদ রাকিবকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সার্কেল-এ) সাইফুর রহমান ও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান।
এদিকে কমিটিকে সাতদিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হলেও নির্দিষ্ট সময়ে প্রতিবেদন দেয়া সম্ভব না হওয়ায় আরও সাতদিন সময়সীমা বাড়ানোর আবেদন করা হবে বলে জানান কমিটির সদস্য সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান।