বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণ ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের দলিল (ওয়ার্ল্ডস ডকুমেন্টারি হেরিটেজ) হিসেবে স্বীকৃতি অর্জন করায় আজ শনিবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নাগরিক সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে।
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের এই নাগরিক সমাবেশে নৌকায় বসেই ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এমন তথ্য জেনে অনেকেই হয়তো ভাবতে পারেন এ আবার কেমন কথা। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ডাঙায় নৌকা আসবে কোথা থেকে কিংবা প্রধানমন্ত্রী নৌকায় বসে ভাষণ দেবেন কিভাবে! কিন্তু সত্যি সত্যিই তিনি নৌকায় বসেই অর্থাৎ নৌকার আদলে নির্মিত মঞ্চে বসে ভাষণ দেবেন আজ।
নাগরিক সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে জাতির উদ্দেশে দিক নির্দেশনামূলক বক্তব্য দেবেন শেখ হাসিনা। দুপুর আড়াইটায় সমাবেশ শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।
শনিবার সকাল সাড়ে ৭টায় সরেজমিনে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ঘুরে দেখা গেছে সমাবেশের মূল মঞ্চ নৌকার আদলে নির্মিত হয়েছে। দূর থেকে দেখলে মনে হয় ডাঙায় কোনো একটি নৌকা ভেসে আছে। শুধু মঞ্চই নয়, উদ্যানের চারদিক জুড়ে শুধুই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সেই ঐহিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের নানা স্মৃতি চিহ্ন। ইতিহাসের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু অঙ্গুলি উঁচিয়ে স্বাধীনতা সংগ্রামের যে ডাক দিয়েছিলেন তার প্রতিচ্ছবি গোটা উদ্যান জুড়ে লক্ষ্য করা যায়।
‘এবারের সংগ্রাম স্বাধীতার সংগ্রাম, রক্ত যখন দিয়েছি আরও দেবো’ সহ ভাষণের বিভিন্ন বক্তব্য সংবলিত প্ল্যাকার্ড দিয়ে সাজানো হয়েছে চারপাশ। মঞ্চের ওপর অস্ত্র হাতে সেনাবাহিনীর সদস্যদের অবস্থান করতে দেখা যায়।
তখনও পর্যন্ত সমাবেশস্থলের সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়নি। মাইকে বার বার হ্যালো মাইক্রোফোন, টেস্টিং চেক চেক. হ্যালো শব্দ ভেসে আসছিল। কয়েকজন শ্রমিককে বিশাল সাইজের একটি ব্যানার টানানোর কাজ করতে দেখা যায়। উদ্যানে প্রবেশের প্রতিটি গেটে পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের অবস্থান করতে দেখা যায়। গেট দিয়ে সাধারণ মানুষকে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না। দুপুর আড়াইটায় সমাবেশ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও সকাল ১১টার পর থেকে সমাবেশস্থলে প্রবেশ করতে দেয়া হবে বলে জানালেন একজন পুলিশ কর্মকর্তা। উদ্যানের ভেতর সমাবেশস্থলে যেখানে চেয়ার রাখা হয়েছে সেখানে ছোট ছোট প্রবেশগেট নির্মাণ করা হয়েছে। কঠোর তল্লাশির পর সমাবেশে প্রবেশ করতে দেয়া হবে।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করবেন জাতীয় এমিরেটাস অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান। সমাবেশ পরিচালনা করবেন নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার ও শহীদ বুদ্ধিজীবী ডা. আলীম চৌধুরীর মেয়ে ডা. নুজহাত চৌধুরী।
শিল্পকলা একাডেমির শিল্পীদের জাতীয় সংগীত পরিবেশনার মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হবে। পবিত্র ধর্মগ্রন্থ পাঠ শেষে কবি নির্মলেন্দু গুণ নিজের লেখা ‘স্বাধীনতা শব্দটি কিভাবে আমাদের হলো’ কবিতাটি আবৃত্তি করবেন। এরপর বক্তব্য রাখবেন বরেণ্য বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে নজরুল গবেষক অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম, শহীদ জায়া শ্যামলী নাসরীন চৌধুরী ও দৈনিক সমকালের সম্পাদক গোলাম সারওয়ার।
সমাবেশে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেবেন ইউনেস্কোর কান্ট্রি ডিরেক্টর বিট্রিস কালদুল। ধন্যবাদ জানিয়ে বক্তব্য রাখবেন অাওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওয়াবদুল কাদের। আজকের সমাবেশে শাহীন সামাদ নজরুল সংগীত, সাজেদা আকবর রবীন্দ্র সংগীত ও চন্দনা মজুমদারের লালন সংগীত পরিবেশনের কথা রয়েছে। এছাড়া দেশাত্মবোধক কবিতা আবৃত্তি করবেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর।