মন্ত্রিসভায় কঠোর বালাইনাশক আইন অনুমোদন

মন্ত্রিসভায় কঠোর বালাইনাশক আইন অনুমোদন

 মন্ত্রিসভায় আজ প্রস্তাবিত বালাইনাশক আইন অনুমোদিত হয়েছে। এতে ফসল রক্ষার নামে পোকামাকড় দমনের ভেজাল বালাইনাশক মজুদ ও বাজারজাতকরণের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির প্রস্তাব করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার নিয়মিত সাপ্তাহিক বৈঠকে এই বালাইনাশক আইন-২০১৭’র অনুমোদন দেয়া হয়।
বৈঠক শেষে বাংলাদেশ সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. শফিউল আলম বলেন, প্রস্তাবিত আইনে নকল লেবেল ও ট্যাগ এবং বিজ্ঞাপণের জন্যও কঠোর শাস্তির বিধান রয়েছে।
এ ধরনের অপরাধ সংঘটনের দায়ে প্রথমবার ১ লাখ টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে একবছর কারাদন্ড এবং অপরাধের পুনরাবৃত্তি হলে জরিমানা ও কারাদন্ড দ্বিগুণ হবে।
তিনি বলেন, বালাইনাশক পণ্যের জন্য ভুয়া ঘোষণা দিয়ে ডিলারদের কাছে বিক্রি করতে চাইলে সে ক্ষেত্রে উৎপাদকের ৫০ হাজার টাকা জরিমানা হবে।
অননুমোদিত নিবন্ধন ব্যবহারের অপরাধে ৭৫ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ১ লাখ টাকা জরিমানা অথবা কমপক্ষে একবছর থেকে সর্বোচ্চ দুই বছর কারাদন্ড হতে পারে।
আলম বলেন, নি¤œমানের বালাই নাশক বিক্রি, পরিদর্শকদের দায়িত্ব পালনে বাধা এবং নিবন্ধনের সময় মিথ্যা তথ্য দেয়ার জন্য প্রস্তাবে অনুরূপ শাস্তির বিধান রয়েছে। এই আইন প্রয়োগে ভ্রাম্যমাণ আদালতকে ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। তবে, কোন আদালত সংশ্লিষ্ট পরিদর্শক ও সংরক্ষকের লিখিত অভিযোগ ছাড়া মামলা গ্রহণ করবে না।
আইনটি ১৯৭১ সালের বালাইনাশক অধ্যাদেশের স্থলাভিষিক্ত হবে। প্রস্তাবিত আইনটির পরিধির বিস্তৃতি ঘটেছে। এতে বালাইনাশকের সঙ্গে কীট-পতঙ্গ, ছত্রাক, আগাছা, ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া ও ইঁদুর দমনের বলাইনাশকও যুক্ত হয়েছে।
পূর্ববর্তী অধ্যাদেশের প্রয়োজনীয় সংশোধনীর মাধ্যমে নতুন এ আইন প্রণীত হয়েছে।
প্রস্তাবিত আইনে বলা হয়েছে, সরকার প্রজ্ঞাপণের মাধ্যমে কীটনাশকের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ও ডিলারদের কমিশন নির্ধারণ করে দেবে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, বৈঠকের শুরুতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ মন্ত্রিপরিষদে গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহ বাস্তবায়নের ত্রৈমাসিক প্রতিবেদন (জুলাই-সেপ্টেম্বর) উপস্থাপন করে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী বর্তমান বছরের তৃতীয় ত্রৈমাসিকে মন্ত্রিপরিষদ ৯টি বৈঠকে ৮০টি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। এর মধ্যে ৫৯টি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হয় এবং ২১টি বাস্তবায়নের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এই ত্রৈমাসিকে সংসদে ছয়টি আইন পাস হয় এবং ৯টি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৬ সালের একই সময়ে মন্ত্রিপরিষদ ৮টি বৈঠকে ৫৬টি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। এর মধ্যে ৩৬টির বাস্তবায়ন হয়েছে এবং ২০টি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। ওই ত্রৈমাসিকে সরকার ৪টি এমওইউ স্বাক্ষর করে এবং সংসদ ১০টি আইন তৈরি করে।
এর আগে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক প্রধানমন্ত্রীর কাছে দু’টি পুরস্কার হস্তান্তর করেন। তথ্য ও যোগাযোগ ক্ষেত্রে সাফল্যের জন্য সম্প্রতি আন্তর্জাতিক সংস্থার কাছ থেকে পুরস্কার দুটি লাভ করে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি)।
২০১৭ সালের ১২ সেপ্টেম্বর তাইওয়ানের তাইপেই-এ অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে বিসিসিকে এএসওসিআইও ২০১৭ আইসিটি এডুকেশন অ্যাওয়ার্ড শীর্ষক প্রথম পুরস্কারটি প্রদান করে এশিয়ান-অসেনিয়ান কম্পিউটিং অর্গানাইজেশন (এএসওসিআইও)।
‘২০১৭ ই-এশিয়া অ্যাওয়ার্ড’ (সিলভার অ্যাওয়ার্ড) শীর্ষক দ্বিতীয় পুরস্কারটি প্রদান করে এশিয়া প্যাসিফিক কাউন্সিল ফর ট্রেড ফ্যাসিলিটেশন অ্যান্ড ইলেকট্রনিক বিজনেস (এএফএসিটি)। বিসিসি কর্তৃক ন্যাশনাল আইসিটি ইনফ্রা নেটওয়ার্ক ফর বাংলাদেশ গভর্নমেন্ট (ইনফো-গভ.) প্রজেক্ট সফলভাবে বাস্তবায়নের জন্য এই পুরস্কার প্রদান করা হয়।
মন্ত্রিপরিষদ জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের স্ত্রী শিলা ইসলামের মৃত্যুতে একটি শোক প্রস্তাবও গ্রহণ করে। গত ২৩ অক্টোবর তিনি লন্ডনে ইন্তেকাল করেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, শিলা ইসলামের মৃত্যুতে মন্ত্রিপরিষদ গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করে এবং তার শোকাহত পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানায়।

বাংলাদেশ