ঢাকা-বরিশাল রূটে চলাচলকারী দ্রুতগামী বিলাস বহুল লঞ্চ এমভি গ্রিনলাইন-২ ওয়াটার ওয়েজ চাঁদপুরের মেঘনা নদীতে ঝড়ের কবলে পড়ে ডুবতে ডুবতে বেঁচে গেছে। এতে প্রাণে রক্ষা পেয়েছেন পাঁচ শতাধিক যাত্রী। তবে আতঙ্কিত হয়ে হুড়োহুড়িতে আহত হয়েছেন ১৫-২০ জন যাত্রী।
আজ শনিবার দুপুরে চাঁদপুর নৌ সীমানার মেঘনা ও পদ্মা নদীর গভীরে মোহনায় ঝড়ের কবলে পড়ে লঞ্চটি। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন লঞ্চের মাস্টার ফরিদুল ইসলাম ও স্টাফ কামাল হোসেন। লঞ্চটি চাঁদপুর স্টিমার ঘাটে নোঙর করেছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে রবিবার বরিশাল পৌঁছবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
প্রত্যক্ষদর্শী একজন জানান, মেঘনা মোহনায় প্রচণ্ড বাতাসে হঠাৎ লঞ্চের সামনের অংশের গ্লাস ফেটে যায়। এর কিছুক্ষণ পরে লক ভেঙে সামনের প্রধান গেটটিও খুলে যায়। লঞ্চের স্টাফরা চেষ্টা করেও গেটটি আর বন্ধ করতে পারেননি। এর ফলে প্রচণ্ড ঢেউয়ে লঞ্চের ভেতরে পানি প্রবেশ করতে থাকে।
লঞ্চের আরেক যাত্রী বরিশাল সদর ভূমি অফিসের কর্মকর্তা মো. ফিরোজ আহমেদ জানান, দ্রুতগামী যাত্রীবাহী লঞ্চটি ঢাকা নৌ-টার্মিনাল থেকে সকাল সোয়া ৮টায় ছেড়ে বরিশালের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। পথিমধ্যে চাঁদপুর নৌ-সিমানার পদ্মা মেঘনা নদীর মোহনা পাড়ি দেওয়ার সময় নদীর গভীরে আসলে প্রচ- ঝড়ের কবলে পড়ে লঞ্চটি। প্রবল গতিতে আসা ঢেউ ও ঝড়ো বাতাসের চাপে বিকট শব্দে লঞ্চের সামনের অংশের গ্লাস ফেটে যায়। তার কিছুক্ষণ পরেই লক ভেঙে প্রধান গেটটি খুলে যায়। এতে গেটটি আর বন্ধ করা সম্ভব হয়নি। প্রচ- ঢেউয়ে ভেতরে পানি প্রবেশ করে। এ পরিস্থিতিতে যাত্রীরা ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে চিৎকার শুরু করেন। চালক গতি কমিয়ে লঞ্চটিকে দক্ষতার সঙ্গে হরিনা ঘাট পর্যন্ত পৌঁছান। ঢেউ এসে লঞ্চে আঘাত করতে থাকলে লঞ্চটি আর সামনের দিকে না গিয়ে মেঘনা নদীর পশ্চিমে গিয়ে চর এলাকায় নোঙর করে। বিকেলে ঝড় হাওয়া কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসলে যাত্রীদের অনুরোধে ও নৌ-পুলিশের সহযোগিতায় লঞ্চটিকে চাঁদপুর স্টিমার ঘাটে এনে রাখা হয়। রাতে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত লঞ্চটি চাঁদপুর স্টিমার ঘাটে অবস্থান করছে।
লঞ্চ কর্তৃপক্ষ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, পরিস্থিতি স্বাভাবিক মনে হলে গ্রীনলাইন-২ পুনরায় বরিশালের উদ্দেশে যাত্রা করবে।
চাঁদপুর বন্দরের কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান জানান, গ্রীনলাইন-২ চাঁদপুর ঘাটে আছে। তবে তারা ত্রুটি দূর করতে পারলে আজই বরিশালের উদ্দেশে রওয়ানা করবে।
এমভি গ্রিন লাইন-২ ও এমভি গ্রিন লাইন-৩ এ জাহাজ দুটি বিমানের আদলে করে তৈরি করা হয়েছে। সম্পূর্ণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত অত্যাধুনিক এ জাহাজ দুটি মাত্র ৫ ঘণ্টায় যাত্রীদেরকে ঢাকা থেকে বরিশাল পৌঁছে দিতে পারে। এ জাহাজে একদিনের মধ্যেই বরিশাল থেকে ঢাকা এসে আবার বরিশালে ফেরা সম্ভব হয়।
দুটি শ্রেণিতে মোট ৬০০ জন করে যাত্রী বহনে সক্ষম। আসন ব্যবস্থা ক্যাটাম্যারান টাইপের ব্রিটিশ এয়ারলাইনসের বিমানের মতো চেয়ার সিট।