শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে এক নারীর লাশ রেখে তার শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই নারী ভেদরগঞ্জ উপজেলার চরকোরালতলী গ্রামের মজিবর দেওয়ান ওরফে গোলাম মাওলার স্ত্রী শান্তা আক্তার। গতকাল সোমবার বিকেল ৪টার দিকে লাশটি রেখে শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা পালিয়ে যায়।
অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে ওই নারীর মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।
শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল ও স্থানীয় বাসিন্দা সূত্র জানায়, শান্তা আক্তারকে দুপুরে বাঁ হাতসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম অবস্থায় ভেদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। জরুরি বিভাগের চিকিৎসকরা ওই নারীর রক্তক্ষরণ বন্ধ করতে পারছিলেন না। তার অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়।
বিকেল ৪টার দিকে ওই নারীর ভাশুর লাল মিয়া দেওয়ান তাকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসেন। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এর কিছুক্ষণ পরই ওই নারীর শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যান। খবর পেয়ে শান্তার বাবার বাড়ির লোকজন সন্ধ্যায় শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে আসেন।
একই উপজেলার নারায়ণপুর পুটিয়া গ্রামের লাল মিয়া তালুকদারের মেয়ে শান্তা আক্তার। ১০ বছর আগে মজিবর দেওয়ানের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। আবির নামে তাদের ৫ বছর বয়সী একটি ছেলে রয়েছে। মজিবর দেওয়ান সৌদি আরব প্রবাসী ছিলেন। এক বছর ধরে দেশে এসে গরুর খামার শুরু করেন।
শান্তার মা ঝিলু বেগম বলেন, ‘বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে শান্তার স্বামী মুঠোফোনে তার মৃত্যুর খবর জানায়। সে জানায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে শান্তা মারা গেছে। তার লাশ শরীয়তপুর হাসপাতালে আছে। আমরা ছুটে এসে দেখি আমার মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।’
ভেদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মেঘনাথ সাহা বলেন, সান্তা নামের এক নারীর শরীরের বিভিন্ন স্থানে ক্ষত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছিল। তার ক্ষতস্থান থেকে প্রচুর রক্ত ঝরছিল। রক্ত বন্ধ করতে না পেরে তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। শরীয়তপুর পর্যন্ত নেয়া হলে তিনি মারা যান। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে তার মৃত্যু হয়েছে।
ভেদরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মেহেদি হাসান বলেন, ‘এক গৃহবধূর মৃত্যুর খবর পেয়েছি। কী কারণে নারীর মৃত্যু হলো, তা তদন্ত হচ্ছে।’