বিএনপি নেতা ও সাবেক ছাত্রনেতা কামরুজ্জামান রতনকে শাহবাগ ও তেজগাঁও থানার দুটি মামলায় আটক করা হয়েছে। সোমবারেই তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হচ্ছে বলে বাংলানিউজকে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (জনসংযোগ) মাসুদুর রহমান।
তিনি জানান শাহবাগ থানায় দায়ের করা একটি সহিংসতার মামলা ও তেজগাঁও থানায় দায়ের করা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সামনে গাড়ি পোড়ানোর মামলায় কামরুজ্জামান রতনকে গ্রেফতার দেখানো হচ্ছে।
রোববার দিবাগত রাত পৌনে ১টায় রাজধানীর মৌচাক এলাকা থেকে রতনকে আটক করে গোয়েন্দা পুলিশ। তবে সে সময় পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ সে কথা অস্বীকার করে। জানায় ওই নামে কেউ গ্রেফতার হয়নি।
আটকের সাত ঘণ্টা পর ডিএমপি জানায় গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) তাকে আটক করেছে। সোমবার সকাল ৮টার দিকে রতনকে আটকের কথা স্বীকার করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (জনসংযোগ) মাসুদুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ডিবিই তাকে আটক করেছে তবে কেনো কামরুজ্জামান রতনকে আটক করা হলো তা ওই সময় জানাননি এডিসি মাসুদ।
সোমবার সকাল ৯টার দিকে ডিএমপি’র এডিসি (জনসংযোগ) জানান, দুটি মামলায় রতনকে আটক করা হয়েছে। সোমবারই তাকে আদালতে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।
এদিকে সোমবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকেও রতনের স্ত্রী নূরে জান্নাত তার স্বামীর আটকের পর তার বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে জানান।
আটকের সময় কামরুজ্জামান রতনের সঙ্গে ঘটনাস্থলে থাকা তার ভাই মুসা কলিম উল্লাহ জানান, মৌচাক মোড়ে অবস্থিত দেশ টিভি ভবনের সামনের রাস্তা থেকে ডিবি পরিচয় দিয়ে রতনকে একটি মাইক্রোবাসে তুলে নেওয়া হয়। মাইক্রোবাসে ডিবি লেখা ছিল বলে জানান তিনি। দেশটিভিতে অনুষ্ঠিত একটি টক শোতে অংশ নিয়ে বের হয়ে আসার সময়েই এই ঘটনা ঘটে বলে জানান মুসা।
এদিকে রতন আটকের খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ডিবি অফিসে ছুটে যান তার স্ত্রী নুরে জান্নাত। রাত পৌনে দুইটার সময় তাকে ডিবি অফিসে কর্তব্যরত কর্মকর্তাদের কাছে স্বামীর খোঁজ করতে দেখা যায়। এ সময় তিনি বলেন, ‘আমি আমার স্বামীর জীবন নিয়ে শঙ্কিত। আমি তাকে জীবিত ফেরত চাই।’
ইলিয়াস আলীর মতো তার স্বামীরও একই পরিণতি হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
সোমবার বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের সঙ্গে আলোচনা করে পরিবারের পক্ষ থেকে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে রাতেই জানান রতনের স্ত্রী।
উল্লেখ্য, গত ১৭ এপ্রিল নিখোঁজ হওয়া বিএনপি নেতা এম ইলিয়াস আলীর ছাত্র রাজনীতির সময়ে তার একজন ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন রতন। ৮০ দশকের শেষের দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে তাদের পরিচালিত গ্রুপটি ইলিয়াস-রতন গ্রুপ নামে পরিচিতি ছিল।