সব রোহিঙ্গাকে কুতুপালং ক্যাম্পে রাখার সিদ্ধান্ত : মায়া

সব রোহিঙ্গাকে কুতুপালং ক্যাম্পে রাখার সিদ্ধান্ত : মায়া

মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতনের হাত থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের সবাইকে কক্সবাজারের কুতুপালং ক্যাম্পে অস্থায়ীভাবে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ব্যবস্থাপনার সুবিধার্থে রোহিঙ্গাদের একই স্থানে রাখতে অন্যান্য সব ক্যাম্প বন্ধ করে দেয়া হবে বলেও জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া।

বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী এ কথা জানান।

গত ২৫ আগস্ট থেকে ৪ অক্টোবর পর্যন্ত বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গাদের সংখ্যা ৫ লক্ষাধিক জানিয়ে ত্রাণমন্ত্রী বলেন, ‘সবাইকে কুতুপালং ক্যাম্পে রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ক্যাম্পের ভেতরে নিরাপত্তা, শৃঙ্খলা, খাদ্য সরবরাহ, স্যানিটেশন, রেজিস্ট্রেশন ও চিকিৎসা দেয়াসহ সব কাজ সুচারুভাবে করার স্বার্থে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।’

jagonews24

তিনি বলেন, ‘কুতুপালং ক্যাম্পের বাইরে যে সব ক্যাম্পে রোহিঙ্গারা থাকছেন ক্রমান্বয়ে তা গুটিয়ে আনা হবে। ইতোমধ্যে ক্যাম্পের বাইরে পাহাড়ি এলাকায় ও অন্যান্য স্থানে যে সব রোহিঙ্গাআশ্রয় নিয়েছেন তাদের ফিরিয়ে আনার কাজ শুরু হয়েছে। গত ৩ অক্টোবর বান্দরবানে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে আনার কাজ শুরু হয়েছে।’

এখন পর্যন্ত ৬১ হাজার রোহিঙ্গার বায়োমেট্রিক নিবন্ধন করা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘প্রতিদিন গড়পড়তা ৭ থেকে ৮ হাজার লোকের রেজিস্ট্রেশন করা হচ্ছে। এ কাজে সেনাবাহিনী ও পাসপোর্ট অধিদফতর সহযোগিতা করছে।’

‘ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ১৪ ও ১৯ সেপ্টেম্বর রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে দুই দফা সমন্বয় সভা হয়েছে। সেখান থেকে সব মন্ত্রণালয়কে ২২টি নির্দেশনা পাঠানো হয়। এর আলোকে সব মন্ত্রণালয় দিনরাত কাজ করে রোহিঙ্গা পরিস্থিতিকে স্বাভাবিক পর্যায়ে নিয়ে আসছে।’

কুতুপালং ক্যাম্পকে ২০টি ব্লকে ভাগ করা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘প্রত্যেক ব্লকের জন্য একটি প্রশাসনিক ও পরিসেবা ইউনিট ও একটি গোডাউন স্থাপন করা হচ্ছে। এতে সব ধরনের সেবা দেয়া সহজ হবে। পরবর্তী সময়ে ব্লকগুলো ক্যাম্পে রূপান্তর করা হবে। ব্লকের কার্যাবলী সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য একজন করে কর্মকর্তা পদায়ন করা হয়েছে।’

jagonews24

মায়া বলেন, ‘৪ লাখ ২০ হাজার লোক হিসাব করে প্রথমে ৮৪ হাজার শেড নির্মাণের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছিল। ইতোমধ্যে ৭৫ হাজারেরও বেশি শেড নির্মাণ করা হয়েছে। বর্তমানে রোহিঙ্গাদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় মোট এক লাখ ৫০ হাজার অস্থায়ী শেড নির্মাণের সিদ্ধান্ত হয়েছে। যা দেশি বিদেশি এনজিওদের সহায়তায় দ্রুত নির্মাণ কাজ শেষ করা হবে।’

ক্যাম্পের চারপাশে বেড়া দেয়া হবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘কুতুপালং ক্যাম্পে নতুন ফায়ার সার্ভিসের ইউনিট স্থাপন করা হবে। ক্যাম্পের ভেতর আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় নতুন পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপন করা হবে এবং পর্যাপ্ত আনসার সদস্য মোতায়েন করা হবে।’

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী বলেন, ‘প্রাথমিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১৪টি গোডাউন নির্মাণের অংশ হিসেবে ইতোমধ্যে ৫টি গোডাউন নির্মিত হয়েছে। বাকি ৯টির নির্মাণ কাজ এ সপ্তাহে শেষ হবে। এর বাইরে ২০টি ব্লকে ২০টি গোডাউন নির্মাণ করা হবে।’

এ সময় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ সচিব মো. শাহ কামালসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ