‘কাতালোনিয়ার স্বাধীনতা কয়েক দিনের মধ্যেই’

‘কাতালোনিয়ার স্বাধীনতা কয়েক দিনের মধ্যেই’

স্পেনের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল কাতালোনিয়া কয়েক দিনের মধ্যেই স্বাধীনতা ঘোষণা করে স্পেন থেকে আলাদা হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন অঞ্চলটির নেতা কার্লেস পুজদেমন।

মঙ্গলবার বিবিসিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন।

গত রবিবার কাতালোনিয়ার স্বাধীনতার প্রশ্নে গণভোটের পর এই প্রথম সাক্ষাৎকার দিলেন কার্লেস পুজদেমন।

তিনি বলেন, তার সরকার এই সপ্তাহের শেষে অথবা এর পরের সপ্তাহের শুরুতে কাজ শুরু করবে।

এরই মধ্যে স্পেনের রাজা ষষ্ঠ ফেলিপ বলেছেন, গণভোটের আয়োজকরা নিজেদের আইনের বাইরে নিয়ে গেছেন। এ গণভোট অবৈধ।

সাক্ষাৎকারে কার্লেসের কাছে জানতে চাওয়া হয় স্পেনের সরকার যদি হস্তক্ষেপ করে এবং কাতালোনিয়া সরকারের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে তখন কী করবেন। জবাবে কার্লেস বলেন, এটা ভুল হবে, যা সবকিছুই বদলে দেবে।

কাতালোনিয়ার নেতা বলেন, বর্তমানে মাদ্রিদে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে তার প্রশাসনের কোনো যোগাযোগ নেই। সোমবার ইউরোপীয় কমিশনের বিবৃতির সঙ্গে তিনি দ্বিমত পোষণ করেন, যাতে বলা হয়েছে কাতালোনিয়ার ঘটনা স্পেনের অভ্যন্তরীণ ইস্যু। স্পেনের রাজার ভাষণের কিছুক্ষণ পরই কার্লেস কথা বলেন।

গণভোটে কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশে পুলিশ বাধা দেয় এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হামলায় প্রায় ৯০০ জন আহত হয়। এর প্রতিবাদে লাখ লাখ মানুষ রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করছে। মাদ্রিদে স্পেনের কেন্দ্রীয় সরকার বলছে, এ গণভোট অবৈধ।

জাতির উদ্দেশে ভাষণে স্পেনের রাজা বলেন, যেসব কাতালান নেতা এ গণভোটের আয়োজন করে তারা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার প্রতি অসম্মান করেছেন। তারা আইনের শাসনের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ভেঙেছেন।

তিনি বলেন, ‘আজ কাতালান সমাজ বিভক্ত হয়ে পড়েছে।’ এ ভোট দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল কাতালোনিয়ার অর্থনীতিকে এবং পুরো স্পেনকেই ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে।

পুলিশের বরাত দিয়ে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, কাতালোনিয়ার রাজধানী বার্সেলোনাতেই ৭ লাখ মানুষ বিক্ষোভে অংশ নিয়েছে। তবে কেন্দ্রীয় সরকার তা নিশ্চিত করেনি।

বার্সেলোনার ৫০টির বেশি সড়ক অবরোধ করেছে বিক্ষোভকারীরা। ফলে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। ট্রেড ইউনিয়ন সূত্র জানিয়েছে, শহরের সমুদ্র বন্দর স্থবির হয়ে পড়েছে। পর্যটন কেন্দ্রগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। বার্সেলোনার বৃহত্তম পাইকারি খাদ্যের বাজার মার্কাবার্না লোক সমাগম শূন্য। এখানে দিনভর ৭৭০টি খাবার দোকান বন্ধ রয়েছে।

শহরের স্কুল, বিশ্ববিদ্যালয়, হাসপাতাল বন্ধ হয়ে পড়েছে বা ন্যূনতম পর্যায়ে কার্যক্রম চলছে। রবিবার গণভোটে পুলিশি বাধার বিষয়টি বিক্ষোভকারীরা অধিকার ও স্বাধীনতা লঙ্ঘন হিসেবেই দেখছে।

আন্তর্জাতিক