‘সরকার সুন্দরবনকেন্দ্রীক একটি আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার পরিকল্পনা নিয়েছে। এজন্য সুন্দরবনকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করতে হবে। আর ব্যাপক জনসচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে এটি বাস্তবায়ন করা সম্ভব।’
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী ডা. আ ফ ম রুহুল হক শনিবার সকালে নগরীর সিএসএস আভা সেন্টারে খুলনা বনবিভাগ আয়োজিত সুন্দরবনকেন্দ্রীক জনসচেতনতামূলক কর্মশালার উদ্বোধনকালে এ কথা বলেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, সুন্দরবনের উপর নির্ভরশীল জনগোষ্ঠী এবং বনজীবীদের উদ্বুদ্ধ করার পাশাপাশি তাদের জন্য বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা নেয়া জরুরী। এরফলে সুন্দরবনের উপর চাপ কমবে এবং সুন্দরবন আরও আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে।
তিনি বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনকে রক্ষার জন্য বনবিভাগসহ জনপ্রতিনিধি ও সকল পেশাজীবীদের এক হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান। সুন্দরবন এনভায়রনমেন্টাল অ্যান্ড লাইভলিহুডস সিকিউরিটি (সিলস) প্রকল্পের আওতায় অনুষ্ঠিত কর্মশালার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক মো. আকবর হোসেন।
বিশেষ অতিথি ছিলেন খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক, বন অধিদপ্তরের প্রধান বন সংরক্ষক মোঃ ইউনুছ আলী এবং বিভাগীয় কমিশনার মোঃ মসিউর রহমান। স্বাগত বক্তৃতা করেন সুন্দরবন পশ্চিম বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা জহির উদ্দিন আহমদ।
অন্য বক্তারা বলেন, সুন্দরবনের ওপর ২৫ লাখ লোক নির্ভরশীল এদের মধ্যে ৬ লাখ প্রত্যক্ষভাবে এ বনের উপর নির্ভরশীল যা ক্রমান্বয়ে জনসংখ্যা বৃদ্ধির তালে তালে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর ফলে বন ধ্বংস হচ্ছে দ্রুততার সঙ্গে।
এর থেকে উত্তরণের জন্য বনজীবীদের বিভন্ন পেশায় নিয়োজিত করা প্রয়োজন। এছাড়া দেশপ্রেম ও জনসচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে সুন্দরবনকে রক্ষা করতে গণমাধ্যম বিরাট ভূমিকা রাখতে পারে।
প্রসঙ্গতঃ খুলনা বন বিভাগ ২০১১ সাল থেকে সিলস প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করে আসছে। এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য হল- বন বিভাগের কর্মীদের দক্ষতা বাড়ানো এবং সুন্দরবনের ওপর নির্ভরশীল ৬ লাখ জনগোষ্ঠীকে বিকল্প কর্মসংস্থানের মাধ্যমে সুন্দরবনের উপর চাপ কমানো।
প্রকল্পটিতে অর্থের যোগান দিচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। ১২৭ কোটি ৯২ লাখ টাকার এই প্রকল্পটি শেষ হবে ২০১৪ সালে।
কর্মশালায় খুলনা ও সাতক্ষীরা জেলার জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, সিভিল সার্জন, উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউএনওসহ অন্যান্য সরকারি-বেসরকারি দপ্তরের প্রতিনিধি ও গণমাধ্যমকর্মীরা অংশ নেন।
উদ্বোধন শেষে কর্মশালায় কয়েকটি কারিগরি পর্বে প্রশিক্ষণদান ও সুপারিশ গ্রহণ করা হয়।