সরিষাবাড়ির মেয়রকে ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি

সরিষাবাড়ির মেয়রকে ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি

নিখোঁজের দু’দিন পর জামালপুরের সরিষাবাড়ি পৌরসভার মেয়র ও ব্যবসায়ী মো. রুকুনুজ্জামানকে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল থেকে রাতেই ঢাকায় আনা হয়েছে। রাতে ডিবি কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদের পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে মেয়র রুকুনুজ্জামানকে।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নতুন ভবনের ৬০১ নং কেবিনে চিকিৎসাধীন রয়েছে তিনি। হার্টের সমস্যা, উচ্চ রক্তচাপের কারণে শারীরিকভাবে অসুস্থ।

২৫ সেপ্টেম্বর (সোমবার) রাজধানীর উত্তরার ১১ নং সেক্টর থেকে মেয়র রুকুনুজ্জামান নিখোঁজ হন। এরপর গ্রাম পুলিশের সহযোগিতায় মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল থেকে বুধবার দুপুরে তাকে উদ্ধার করে পুলিশ।

মেয়রের বরাত দিয়ে মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার জানান, তাকে একটি কাল মাইক্রোবাসে করে এনে এখানে নামিয়ে দেয়া হয়। মাইক্রোবাসে তার চোখ বাঁধা ছিল। জানা গেছে, পৌর মেয়রের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি তিনি ব্যবসায় জড়িত। ‘ড্রেসম্যান বাইং হাউজ’ নামে একটি প্রতিষ্ঠানের অ্যাডভাইজার হিসেবে আছেন রুকুনুজ্জামান রুকন। সোমবার সকালে বাসা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর থেকে মোবাইলফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

অনেক খোঁজাখুঁজির পর ভাইয়ের সন্ধান চেয়ে থানায় জিডিও করেছেন বড় ভাই সাইফুল ইসলাম টুকন। উত্তরা পশ্চিম থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) নং-১৬১১।

নিখোঁজের আগে মেয়র গত রোববার রাত ৯টা ১৩ মিনিটে সর্বশেষ একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন, তাতে তিনি লেখেন, ‘তোমাদের এই ভালোবাসা আমি কোনদিন ভুলতে পারব না। তোমাদের এই ভালোবাসার কাছে মনে হয় আমি হেরে গেলাম bcoz আমি তোমাদের জন্য কিছুই করতে পারলাম না। তারপরেও বলতে চাই ‘ভলোবাসি ভালোবাসি’ এই ভলোবাসা নিয়েই সব কিছু জয় করতে চাই এবং এই ভালোবাসা নিয়েই মরতে চাই। নতুন প্রজন্মের কাছে আমার আহ্বান আমাকে হত্যা করা হলেও ‘তোমাদের সিক্ত ভালোবাসা যেন অটুট থাকে এবং আমার উন্নয়নের ধারাবাহিকতা তোমরা ধরে রাখবা’।

মেয়র উদ্ধারের পর কয়েক দফায় জাগো নিউজের সঙ্গে কথা হয় বড় ভাই সাইফুল ইসলাম টুকনের। তিনি বৃহস্পতিবার সকালে বলেন, খুব টেনশনে ছিলাম, ভাইকে জীবিত ফেরত পাব কিনা। তবে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সার্বিক সহযোগিতা ও গণমাধ্যম ভাইয়ের সংবাদ পরিবেশনের কারণে আমার ভাইকে জীবিত ফিরে পেয়েছি।

তিনি বলেন, রাতেই মৌলভীবাজার থেকে ফিরে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা কার্যালয়ে আমাদের ডাক পড়ে। সেখানে প্রাথমিকভাবে অপহরণ সংক্রান্ত বিষয়ে মেয়রের কাছে ডিবি পুলিশ কিছু তথ্য নিয়েছে। তবে সে ব্যাপারে আমাকে কিছু বলা হয় নি।

সাইফুল ইসলাম টুকন বলেন, মেয়রের হার্টের সমস্যা, উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে। উদ্ধারের পর তাকে টিভিতে ও পত্রিকায় ছাপানো ছবিতে খুব উদ্বিগ্ন দেখেছি। রাতে আমার সঙ্গে দেখা ও কথা হয়েছে। মেয়র শারীরিকভাবে অসুস্থতার কথা জানালে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি করি। তিনি ঢামেক হাসপাতালের নতুন ভবনের ৬০১ নং কেবিনে চিকিৎসাধীন।

উল্লেখ্য যে, রুকুনুজ্জামান এক সময় বিএনপির রাজনীতি করতেন। তিন বছর আগে আওয়ামী লীগে যোগ দেন এবং এই দল থেকে প্রার্থী হয়ে সরিষাবাড়ি পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হন। পৌর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতিও রুকুনুজ্জামান রুকন। ব্যবসায়িক ও অফিসের কাজে ঢাকায় আসলেই তিনি উত্তরায় ভাড়া নেয়া ওই বাসায় থাকতেন।

অন্যান্য বাংলাদেশ