আয়কর আদায়কারী কর্মীরা করবান্ধব না হলে শাস্তি পেতে হবে জানিয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, আয়কর আদায়কারী কর্মীরা যেন মানুষের বন্ধু হন। কেননা তারা কর প্রদানকারী মানুষের বন্ধু হলে যেমন পুরস্কার আছে, তেমনি বন্ধু না হতে পারলে শাস্তিও পেতে হবে।
মঙ্গলবার আয়কর ক্যাম্প ও করদাতা উদ্বুদ্ধকরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মুহিত এসব কথা বলেন। মিরপুর কনভেনশন সেন্টারে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর অঞ্চল-৩ এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ঢাকা-১৬ আসনের সংসদ সদস্য ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লা, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান। এতে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা কর অঞ্চল-৩ এর কর কমিশনার নাহার ফেরদৌসি বেগম।
অর্থমন্ত্রী বলেন, আমরা অতিরিক্ত কর আদায় করব, অতিরিক্ত সেবা প্রদান করব। দেশে সমৃদ্ধি আনব। বর্তমানে বাজেট রয়েছে ৪ লাখ ২২৬ কোটি টাকার, আগামীতে সেটা সাড়ে ৪ লাখ কোটি টাকায় উন্নীত হবে। পরের বছর তা আরও বাড়বে। এভাবে কিছু দিনের মধ্যে বাজেটকে একটি স্থিতিশীল পর্যায়ে পৌঁছাতে পারব। তবে এজন্য করপ্রদানকারীদের এগিয়ে আসতে হবে।
সবাইকে কর দেয়ার আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, আয়কর দিলে দেশ সমৃদ্ধ হবে। এখন আয়কর দিতে সবাই সহোযোগিতা করছে। এখন দেখা যায় বেশিভাগ করদাতার বয়স ৪০ থেকে ৫০ বছর। এটা আমাদের জন্য সুখকর।
পুলিশ বাহিনীর সুনাম করে মন্ত্রী বলেন, পুলিশ না হলে বেঁচে থাকা মুশকিল। তারা না থাকলে চুরি-চামারিতে দেশ ছেয়ে যেত। এই জিনিসটা যেন আমরা মনে রাখি, তারা না থাকলে শান্তিতে ঘুমাতে পারতাম না। বেশির ভাগ মানুষ রাস্তাঘাটে নির্বিঘ্নে চলাচল করতে
পারতাম না। এই বিষয়টা আমাদের খেয়াল রাখা উচিৎ। পুলিশ বাহিনী মানুষের সেবায় কাজ করছে। আর করের টাকা দিয়েই তাদের বেতন দেয়া হয়।
মুহিত বলেন, এই সমাজে অনেকগুলো প্রতিষ্ঠান আছে যেগুলো আপাত দৃষ্টিতে সে রকম প্রয়োজন মনে হয় না। কিন্তু আমদের তারা বিভিন্ন সেবা দিয়ে যাচ্ছে। এ সেবা দেয়ার জন্য আমাদের টাকা প্রয়োজন আর এ অর্থের প্রধান রসদ হলো রাজস্ব।
২০২৪ সালের মধ্যে দেশে কোনো গরীব থাকবে না- এমন মন্তব্য করে অর্থমন্ত্রী বলেন, আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে আমরা অর্থনীতিতে স্থিতিশীল জায়গায় পৌঁছে যাবো।
তবে ৭ শতাংশ গরীব সব সময়ই থাকে। উদাহরণ হিসেবে তিনি প্রতিবন্ধী ও বৃদ্ধদের কথা বলেন। মন্ত্রী বলেন, সরকারকে তাদের সহযোগিতা করতে হবে।
২০২০ সালে জাতিসংঘ বাংলাদেশকে মধ্য আয়ের দেশ হিসেবে ঘোষনা করবে বলেও আশা প্রকাশ করেনি তিনি।
নজিবুর রহমান বলেন, সরকার যে বড় বড় প্রজেক্ট হাতে নিয়েছে তার জন্য রাজস্ব প্রয়োজন। কারণ, রাজস্ব হলো উন্নয়নে অক্সিজেন। আসছে নভেম্বরে আয়কর মেলা হবে বলেও জানান তিনি।
মন্ত্রী বলেন, এনবিআর অতীতের দুর্নাম ঘুচিয়ে এখন জনবান্ধব কাজ করছে। তিনি সবাইকে রাজস্ব দিয়ে সরকারকে সহায়তার আহবান জানান।
ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লা দেশের বড় ব্যবসায়ীদের রাঘব-বোয়াল আখ্যায়িত করে বলেন, তারা যেন সবাই করের আওতায় আসে।
এনবিআরবের এক ভিডিও প্রচারের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে ডাক্তারই তার আয়কর সম্পর্কে বুঝছে না , তাহলে সাধারণ জনগন কিভাবে বুঝবে। রাজস্ব সেবা সম্পর্কে এনবিআরকে আরও প্রচারের ব্যবস্থা করতে হবে।