চীনের ভিন্ন মতাবলম্বী চেন গুয়াংচেং পালিয়ে বেইজিংয়ে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসে আশ্রয় নিয়েছেন বলে জানা গেছে। তার সহকর্মী ও বন্ধু হু জিয়া শনিবার এ কথা জানিয়েছেন।
তিনি জানান, বাড়ির উঁচু দেয়াল টপকে বাইরে বের হয়ে কয়েকশ’ কিলোমিটার পথ গাড়ি চালিয়ে বেইজিং পৌঁছান চেন।
কিন্তু চেন অন্ধ হওয়া সত্ত্বেও কীভাবে এই অসাধ্য সাধন করলেন সেটাও এক বিস্ময়ের ব্যাপার।
এদিকে একটি সমর্থিত সূত্রে জানা গেছে, চেন এখন যুক্তরাষ্ট্রের হেফাজতে আছেন। চীনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে এ ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের আলোচনা চলছে।
চীনের হিউম্যান রাইটস চেনের পরিচিত একটি সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, তার ভাতিজা চেন কেগুইকে ধরে নিয়ে গেছে পুলিশ। প্রায় ৩০ জন পুলিশ তাকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যায় বলে জানানো হয়েছে।
গত রোববার পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে গৃহবন্দিত্ব থেকে পালাতে সক্ষম হন চীনের প্রখ্যাত ভিন্নমতাবলম্বী চেন গুয়াংনচেং। আলোচিত এই অন্ধ মানবাধিকার কর্মী দীর্ঘদিন নিজ গৃহে অন্তরীণ ছিলেন।
মানবাধিকার আইনজীবি হিসেবে বিখ্যাত চেন চীন সরকারের বিভিন্ন নীতির ঘোর সমালোচক ছিলেন। সরকারের প্রণীত জোরপূর্বক গর্ভপাত ও এক সন্তান নীতির বিরোধী কণ্ঠ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন তিনি।
এক সন্তান নীতি ও জোরপূর্বক গর্ভপাতের বিরোধিতা করে চেন আলোচনায় আসেন ২০০৫ সালে। দুর্নীতির প্রতিবাদ করায় এসময় শানডং প্রদেশের স্থানীয় কর্মকর্তাদের বিরাগভাজন হন তিনি। সরকারের নীতির বিরোধিতার কারণে তাকে বিভিন্ন ভাবে নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে।
তার কণ্ঠ রোধ করতে না পেরে অবশেষে শেষ তাকে কারাগারে পাঠায় কর্তৃপক্ষ। ২০১০ সাল পর্যন্ত কারাগারে বন্দি ছিলেন তিনি। তবে পরবর্তীতে আনুষ্ঠানিক ভাবে মুক্তি দেওয়া হলেও পূর্বাঞ্চলীয় শানডং প্রদেশে অবস্থিত লিনই গ্রামের নিজ বাড়িতে তাকে অন্তরীণ রাখা হয়।
ইউটিউবে পোস্ট করা একটি ভিডিও চিত্রে চেন তার পালানোর খবর নিশ্চিত করেন। ভিডিওতে তিনি তাকে ও তার পরিবারকে নির্যাতনের ব্যাপারে তদন্তের নির্দেশ দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী ওয়েন জিয়াবাওয়ের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি অভিযোগ করেন, তাকে ও তার পরিবারকে স্থানীয় কর্র্তৃপক্ষ নির্মমভাবে নির্যাতন করেছে।