ভাঙলো সুচরিতার ২৩ বছরের সংসার

ভাঙলো সুচরিতার ২৩ বছরের সংসার

ঢালিউডের সত্তর ও আশির দশকের জনপ্রিয় নায়িকা সুচরিতার সংসার ভেঙে গেছে। স্বামী চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির সভাপতি ও বিশিষ্ট চলচ্চিত্র ব্যবসায়ী কেএমআর মঞ্জুরের সঙ্গে তার ডিভোর্স সম্পন্ন হয়েছে । সেই সঙ্গে ভেঙে গেছে, তাদের দীর্ঘ ২৩ বছরের সংসার।

এই নিয়ে দ্বিতীয়বার সুচরিতার সংসার ভাঙলো। আশির দশকের প্রথম দিকে ক্যারিয়ারের তুঙ্গে থাকা অবস্থায় প্রেমের বিয়ে হয়েছিল তার প্রয়াত নায়ক জসিমের সঙ্গে। ভালোবাসার সেই সংসারের আয়ু হয়েছিল বছর-তিনেক।

ঢালিউডের চলচ্চিত্রের সোনালী সময়ে   ‘ড্রিমগার্ল’ খ্যাত সুচরিতা দ্বিতীয়বার বিয়ের পিঁড়িতে বসেন ১৯৮৯ সালে। চলচ্চিত্র ব্যবসায়ী ও ঢাকার কয়েকটি সিনেমা হলের মালিক কেএমআর মঞ্জুর সঙ্গে সুচরিতার এই বিয়েটিও ছিল প্রেমের। তাদের সংসারে পর পর আসে ৩টি সন্তান। সন্তান আর সংসারের ব্যস্ততায় সুচরিতা একসময় ঢালিউড থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেন। সম্প্রতি অবশ্য আবারও চলচ্চিত্র অভিনয় শুরু করেছেন তিনি।suchorita

বিশ্বস্তসূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে কেএমআর মঞ্জুর ও সুচরিতা আলাদা বসবাস করছিলেন। গতবছর শেষের দিকে কেএমআর মঞ্জুর ডিভোর্স নোটিশ পাঠান সুচরিতাকে। এ বিষয়ে শুনানীর জন্য বিধি অনুযায়ী সুচরিতাকে সিটি কর্পোরেশনের সালিশি পরিষদ একাধিকবার স্বশরীরে হাজির হওয়ার জন্য তলব করে। কিন্তু সুচরিতা এতে সাড়া দেন নি। এরই পরিপ্রেক্ষিতে পারিবারিক আইন অনুযায়ী নোটিশের তৃতীয় মাসে তাদের ডিভোর্স কাযর্কর হয়েছে।

এ বিষয়ে ফোনে কথা বলে সুচরিতার সঙ্গে। তিনি বলেন, কেএমআর মঞ্জুরের সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নাই এক যুগেরও বেশি সময় ধরে। সম্পর্কটা কেবল টিকে ছিল কাগজে কলমেই। কেবল কাগজের কোনো সম্পর্কের মূল্য আমার কাছে নেই। এবার কাগজে-কলমে ডিভোর্স হয়ে গেল। এ নিয়ে আমার বলার মতো কিছু নেই। সবই আমি মেনে নিয়েছি। নামে মাত্র সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার চেয়ে না-থাকাই ভালো।

এ প্রসঙ্গে জানার জন্য বিশিষ্ট ব্যবসায়ী চলচ্চিত্র প্রদর্শক কেএমআর মঞ্জুরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ১৪ বছর ধরে আমরা আলাদা আছি। তার সঙ্গে অনেক চেষ্টা করেও কোনো বনিবনা হয়নি। আগামীতে বনিবনা হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। কেবল কাগজে-কলমে স্বামী-স্ত্রী সম্পর্ক টিকিয়ে রাখা অর্থহীন । তাই এবার সবকিছুর ইতি টেনে তাকে মুক্তি দিলাম আর আমি নিজেও মুক্ত হলাম।
kmr-monjur
কেএমআর মঞ্জুর ও সুচরিতা দাম্পত্যজীবনে তিন সন্তানের জনক-জননী। তাদের সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়ে জানা গেছে, তিনজনই বর্তমানে মালয়েশিয়া পড়াশোনা করছেন। তাদের পড়াশোনাসহ সব খরচই বহন করছেন কেএমআর মঞ্জুর। এ বিষয়ে তিনি বলেন, বাবা হিসেবে সন্তানের জন্য যা কিছু দরকার সবই আমি করছি এবং করবো। তাদের প্রতিষ্ঠিত হওয়ার জন্য যা কিছু করার দরকার আমি করে যাবো।

একজন শিশু শিল্পী হিসেবে সুচরিতা চলচ্চিত্রে প্রথম অভিনয় করেন ১৯৬৯ সালে, যখন তার নাম ছিল বেবী হেলেন। নায়িকা হিসেবে সুচরিতা প্রথম অভিনয় করেন ১৯৭২ সালে আজিজুর রহমান পরিচালিত ‘স্বীকৃতি’ ছবিতে। ১৯৭৭ সালে আবদুল লতিফ বাচ্চু পরিচালিত ‘যাদুর বাঁশি’ ছবির মাধ্যমে তিনি তুমুল জনপ্রিয়তা পান। মায়াময় ফটোজেনিক চেহারা আর আকর্ষণীয় দেহবল্লরী তাকে শক্ত ভীত গড়ে দেয় ঢালিউডে। আশির দশক পর্যন্ত তিনি ছিলেন  দেশের প্রথম সারির নায়িকা।

সুচরিতা অভিনীত উল্লেখযোগ্য ছবির মধ্যে রয়েছে- ‘দি ফাদার’, ‘বদলা’, ‘জীবন নৌকা’, ‘আসামী’, ‘নদের চাঁদ’ ‘কথা দিলাম’, ‘গাদ্দার’, ‘জনি’, ‘নাগরদোলা’, ‘হাঙ্গর নদী গ্রেনেড’ প্রভৃতি।

প্রায় দুই দশক বিরতির পর সম্প্রতি ফিরে এসে বেশ কয়েকটি ছবিতে কাজ করেছেন। ইদানিং সময়ের চলচ্চিত্রে নায়ক-নায়িকার মা-খালার গুরত্বপূর্ণ ভূমিকায় অভিনয় করতে বেশি দেখা যায়।

বিনোদন