রোহিঙ্গা সংক্রান্ত এজেন্ডা সিপিসি সম্মেলনে নেই : স্পিকার

রোহিঙ্গা সংক্রান্ত এজেন্ডা সিপিসি সম্মেলনে নেই : স্পিকার

ঢাকায় অনুষ্ঠেয় ৬৩তম কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি কনফারেন্সে (সিপিসি) রোহিঙ্গা সংক্রান্ত সুনির্দিষ্ট কোনো এজেন্ডা এখন পর্যন্ত নেই বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের স্পিকার ও সিপিসি’র নির্বাহী কমিটির চেয়ারপার্সন ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।

তবে এত বড় একটি মানবিক বিপর্যয় কোনো না কোনো সেশনে কেউ না কেউ আলোচনায় আনবেন বলে অভিমত ব্যক্ত করেন তিনি।

ঢাকা অনুষ্ঠেয় সিপিসি সম্মেলন উপলক্ষে মঙ্গলবার জাতীয় সংসদের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।

আগামী ১-৮ নভেম্বর এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। সিপিএ বাংলাদেশ ব্রাঞ্চ ও বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ যৌথভাবে এ সম্মেলনের আয়োজন করেছে।

স্পিকার বলেন, সিপিসি সম্মেলন উপলক্ষে সকল রিজিয়ন ও ব্রাঞ্চের কাছে চিঠি পাঠিয়ে এজেন্ডার বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়। এরপর নির্বাহী কমিটির সভায় এজেন্ডা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা শেষে নির্ধারণ করা হয় কোন কোন বিষয়ে আলোচনা হবে। ঠিক একই প্রক্রিয়ায় এ সম্মেলনের বিষয়গুলো ইতোপূর্বে নির্ধারিত হয়েছে। তখন রোহিঙ্গা সমস্যা ছিল না। কিন্তু এরপরও বিভিন্ন ধরনের জাতিসত্তা নিয়ে ওয়ার্কশপ আছে। সেখানে রোহিঙ্গা বিষয়টি প্রাসঙ্গিক। তাই হয়তো বা সেখানে ইস্যুটি উত্থাপিত হতে পারে।

তিনি বলেন, ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বী মিয়ার নেতৃত্বে বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধি দল এতে অংশ নেবে। তারা বাংলাদেশের কোনো বিষয়ের ওপরে আলোকপাত কিংবা উত্থাপন করতে চান তাহলে সে সুযোগ অবশ্যই তাদের রয়েছে।

এ বিষয়ে সিপিএ’র সেক্রেটারি জেনারেল আকবর খান বলেন, যদিও এটি আমাদের এজেন্ডায় নেই তবে আমি নিশ্চিত বিষয়টি জীবন্তভাবেই সম্মেলনে উঠে আসবে। রোহিঙ্গাদের ওপর যে অমানবিক নির্যাতন চলছে সদস্য রাষ্ট্রের কেউ না কেউ তা তুলবেন।

পাকিস্তানের অংশগ্রহণ সম্পর্কে স্পিকার বলেন, তারাও এ সম্মেলনে অংশ নেবে বলে আমরা আশা প্রকাশ করছি। কেননা তারা সম্ভবত নিবন্ধন করেছে।

নিরাপত্তার বিষয়ে তিনি বলেন, নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার মধ্যে আমাদের অতিথিরা আসবেন এবং আমরা সম্মেলন সফলভাবে সম্পন্ন করতে পারব। কমনওয়েলথভুক্ত হাইকমিশন ও তাদের প্রতিনিধিদের সোমবার নিরাপত্তার বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে। নিরাপত্তা নিয়ে তাদের মধ্যে কোনো প্রশ্ন নেই।

এর আগে স্পিকার তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, আন্তর্জাতিক এই কনফারেন্সে কমনওয়েলথভুক্ত ৫২টি দেশ ও ১৮০টি জাতীয় ও প্রাদেশিক সংসদের স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, সংসদ সদস্য এবং অন্যান্য প্রতিনিধিসহ প্রায় ছয় শতাধিক প্রতিনিধি অংশ নেবেন।

এছাড়া জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিগণও এই কনফারেন্সে অংশ নেবেন।

৬৩তম সম্মেলনের প্রতিপ্রাদ্য বিষয় হচ্ছে, ‘Continuing to enhance the high standards of performance of Parliamentarians’।

১ নভেম্বর সম্মেলন শুরু হলেও ৫ নভেম্বর জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন সিপিসি’র ভাইস প্যাট্রন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৃটেনের রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথ সিপিএ’র প্যাট্রন। আর স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।

সম্মেলনে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে নির্বাহী কমিটির সভা, কমনওয়েলথ ওমেন পার্লামেন্টারি স্টিয়ারিং কমিটির সভা, স্মল ব্রাঞ্চেস কনফারেন্স, বিভিন্ন সাব কমিটির সভা, রিজিওনাল গ্রুপ মিটিং, জেনারেল অ্যাসেম্বলি ও ৮টি কর্মশালা অনুষ্ঠিত হবে।

সিপিএ কমনওয়েলথ পার্লামেন্টসমূহের সমন্বয়ে গঠিত একটি ঐতিহ্যবাহী আন্তর্জাতিক সংগঠন। ১৯১১ সালে প্রতিষ্ঠিত এ সংগঠন থেকে সংসদীয় গণতন্ত্রকে সুসংহত ও সমুন্নত করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। বিশ্বের ৫২টি স্বাধীন রাষ্ট্র নিয়ে কমনওয়েলথ গঠিত। উন্নত ও উন্নয়নশীল উভয় প্রকারের রাষ্ট্রসমূহ কমনওয়েলথের সদস্য।

কমনওয়েলথ ২.২ বিলিয়ন জনসমষ্টির প্রতিনিধিত্ব করে যার শতকরা ৬০ ভাগ ৩০ বছরের তরুণ।

বাংলাদেশ