আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েনের বিপক্ষে মত দিয়েছে ঐক্যবদ্ধ নাগরিক আন্দোলন। তবে বিশেষ জরুরি অবস্থায় বিজিবিসহ অন্যান্য বাহিনী নিয়োগ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে মতবিনিময়ে এ প্রস্তাব দেয় দলটি। সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা বজায় রাখার জন্য বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনেই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন চান তারা।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে রোববার সকালে অনুষ্ঠিত ইসির সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এসব দাবি করেন ঐক্যবদ্ধ নাগরিক আন্দোলন’র নেতারা।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদার মতিবিনিময় সভার সভাপতিত্ব করেন। ঐক্যবদ্ধ নাগরিক আন্দোলন’র ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জাহানারা বেগম আলোর নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধিদল এতে অংশ নেন।
রোববার বিকেল ৩টায় বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি’র সঙ্গে মতবিনিময় করবে ইসি। এনিয়ে ১১টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ শেষ করল সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি।
জাতীয় নির্বাচন নিয়ে ঐক্যবদ্ধ নাগরিক আন্দোলন’র লিখিত ১০ দফা সুপারিশের মধ্যে রয়েছে- কালো টাকা, সন্ত্রাস ও পবিত্র ধর্মের অপব্যবহারমুক্ত নির্বাচনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা; দলীয় প্রচারে কোনো অবস্থায় দলসমূহ ধর্মীয় বিষয়কে ভোট সংগ্রহের জন্য ব্যবহার করতে না দেয়া; ধর্মের নামে রাজনীতি করে এমন দলকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ না দেয়া; এমন দলের নিবন্ধন বাতিল করা এবং ভবিষ্যতে নিবন্ধন না দেয়া; নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষভাবে সম্পাদনের জন্য সকল দলের জন্য সমান সুযোগ তৈরি করা; সুষ্ঠু নির্বাচন উপযোগী পরিবেশ তৈরি করা যাতে সকল দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারে এবং জনগণ যাতে নির্ভয়ে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে সে ব্যবস্থা করা।
ভোটার সংখ্যা অনুপাত এবং প্রশাসনিক এরিয়া বিবেচনায় রেখে সংসদীয় এলাকার সীমানা নির্ধারণ করা; নির্ভুল ও স্বচ্ছ ভোটার তালিকা করার জন্য পর্যাপ্ত দক্ষ লোকবল নিয়োগ করে খসড়া তালিকা তৈরির পর প্রতিটি ওয়ার্ডের একাধিক উপযুক্ত স্থানে জনসম্মুখে খসড়া তালিকা উপস্থাপন করা এবং উপস্থিত এলাকার জনগণের মাধ্যমে পুনঃযাচাই সাপেক্ষে নির্দিষ্ট সময় পরে (কমপক্ষে ১৫ দিন সময় দিয়ে) ভোটার তালিকা চূড়ান্ত করা।
নিবন্ধিত দল যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী কিন্তু নানা কারণে নির্বাচনে কখনও অংশগ্রহণ করেনি সে সমস্ত দলের নিবন্ধন চলমান রাখা অর্থাৎ বাতিল করা যাবে না যদি না কোনো দল দেশদ্রোহী কাজে লিপ্ত হয়, নির্বাচনপূর্ব এবং নির্বাচনোত্তর পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে মাঠে রাখতে হবে যেন ধর্মীয় সংখ্যালঘু এলাকাসহ সকল ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় স্বাভাবিক অবস্থা বজায় থাকে; একই দিনে ৩০০ আসনে নির্বাচন সম্পন্ন করা এবং একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র অনলাইনে জমা দেয়ার সুযোগ নিশ্চিত করা।
প্রসঙ্গ, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে অংশীজনদের সঙ্গে সংলাপ শুরু করেছে ইসি। এরই ধারাবাহিকতায় এ বৈঠক। গত ৩১ জুলাই সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, ১৬ ও ১৭ আগস্ট গণমাধ্যম প্রতিনিধির সঙ্গে মতবিনিময় করে ইসি। ২৪ আগস্ট থেকে দলগুলোর সঙ্গে মতবিনিময় শুরু হয়েছে।