রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার সেনাবাহিনীর চলমান অভিযান নিয়ে বিশ্বব্যাপী নিন্দার ঝড় অব্যাহত রয়েছে। তবে এখনও অভিযানের পক্ষেই সাফাই গাইছেন দেশটির সেনাপ্রধান মিন অং হিলাইং।
রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে আন্তর্জাতিক চাপের প্রেক্ষাপটে দেশবাসীর প্রতি ঐক্যের ডাক দিয়েছেন তিনি। তবে রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের কেউ নয়, তারা বাঙালি বলেই আবারও দাবি করেছেন হিলাইং।
‘ক্লিয়ারেন্স অপারেশন’ নামে চলা সেনা অভিযানে নির্বিচারে হত্যা ও নির্যাতনের অভিযোগের প্রেক্ষাপটে আন্তর্জাতিক চাপ ক্রমেই বাড়তে থাকার মুখে ঐক্যের ডাক দিলেন প্রকৃত অর্থে মিয়ানমারের সর্বময় ক্ষমতাধর সেনাপ্রধান হিলাইং। খবর- এএফপির।
১৬ সেপ্টেম্বর নিজের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে এক স্ট্যাটাসে এ আহ্বান জানান তিনি। এরআগে সেনা অফিসারদের একটি প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে রোহিঙ্গা ইস্যুতে কথা বলেন তিনি।
ফেসবুক স্ট্যাটাসে মিয়ানমার সেনাপ্রধান বলেন, ২৫ আগস্ট রাখাইনে ‘চরমপন্থী বাঙালিরা’ হামলার মাধ্যমে সহিসংতা শুরু করে। তারা রোহিঙ্গা হিসেবে স্বীকৃতি চায়, যারা কখনোই মিয়ানমারের জাতিগোষ্ঠী ছিল না। বাঙালি ইস্যু একটি জাতীয় বিষয়, এ সত্য প্রতিষ্ঠায় আমাদের ঐক্যবদ্ধ হওয়া প্রয়োজন।
তিনি আরও বলেন, দেশের প্রতি ভালোবাসা থেকে প্রতিটি নাগরিকের ঐক্যবদ্ধ হওয়া উচিত, গণমাধ্যমের ঐক্যবদ্ধ হওয়া উচিত।
এছাড়া দেশের উন্নয়নে নাগরিকদের সংগ্রাম করতে ও অংশগ্রহণেরও আহ্বান জানান তিনি।
এদিকে, রাখাইনে চলমান অভিযানের পক্ষে সাফাই গেয়ে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী বলছে, রাখাইনে প্রদেশ থেকে ‘রোহিঙ্গা জঙ্গিদের’ উচ্ছেদই তাদের লক্ষ্য; যারা বিভিন্ন পুলিশ পোস্টে হামলা চালিয়েছে।
গত ২৫ আগস্ট রাতে পুলিশ পোস্টে হামলার পর থেকেই বিভিন্ন রোহিঙ্গা গ্রামে নির্বিচারে হত্যা-ধর্ষণ ও নিপীড়ন শুরু করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। এতে প্রাণ বাঁচাতে এরইমধ্যে অন্তত ৪ লাখ রোহিঙ্গা সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে এসেছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।
পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা বলছে, সেনা সদস্যরা বিভিন্ন রোহিঙ্গা বসতিতে গিয়ে পুরুষদের গলা কেটে হত্যা, নারীদের ধর্ষণ করছে। এছাড়া পুরো গ্রাম জ্বালিয়ে দিচ্ছে।
জাতিসংঘ মহাসচিব মিয়ানমার সেনাবাহিনীর এ অভিযানকে ‘জাতিগত নিধন’ উল্লেখ করে বলেছেন, রাষ্ট্রহীন এসব মানুষ দীর্ঘদিন ধরে দমন-নিপীড়ন সহ্য করে আসছেন।
রাখাইনের এ সংখ্যালঘু মুসলিমদের বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশকারী হিসেবে গণ্য করে থাকে সংখ্যালঘিষ্ট বৌদ্ধরা। তারা রোহিঙ্গাদের রাখাইনের অধিবাসী হিসেবে না মেনে বাঙালি হিসেবে দাবি করে আসছে।