টানা উত্থানের পর ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে কিছুটা মূল্য সংশোধন হয়েছে। মঙ্গলবার দরপতনের মাধ্যমে উভয় বাজারে টানা দুই কার্যদিবস মূল্য সূচক কমেছে। আর শেষ ১৪ কার্যদিবসের মধ্যে দরপতন হলো তিনদিন।
মঙ্গলবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) দরপতন হলেও বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ। তবে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) লেনদেনও কমেছে। ডিএসইতে লেনদেন আগের দিনের তুলনায় বেড়েছে ৫১ কোটি ১৩ লাখ টাকা। আর সিএসইতে লেনদেন কমেছে ১২ কোটি ৪২ লাখ টাকা।
অপরদিকে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় কমেছে ১ পয়েন্ট। আর সিএসইতে সার্বিক মূল্য সূচক সিএসসিএক্স কমেছে ২০ পয়েন্ট।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, মঙ্গলবার ডিএসইতে প্রধান সূচক ডিএসইএক্স’র বড় উত্থানের মাধ্যমে লেনদেন শুরু হয়। লেনদেনের প্রথম ১৫ মিনিটেই ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ২২ পয়েন্ট বেড়ে যায়। তবে আধাঘণ্টার ব্যবধানেই নিম্নমুখী হয়ে পড়ে সূচক। যা দিনের শেষ পর্যন্ত অব্যহত থাকে।
ফলে সূচকের ঋণাত্মক অবস্থায় লেনদেন শেষ হয়। দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ১ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ১৪৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আগের দিন এ সূচকটি কমে ছিল ১৬ পয়েন্ট।
প্রধান মূল্য সূচকের পাশাপাশি কমেছে অপর দুটি মূল্য সূচক। এর মধ্যে ডিএসই-৩০ সূচক ৮ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ২০০ পয়েন্টে। আর ডিএসই শরিহ্ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৬ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৩৬৫ পয়েন্টে।
শেয়ারবাজার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পরপর দুই কার্যদিবস মূল্য সূচক পতনের কারণে বিনিয়োগকারীদের ভয় পাওয়ার কিছু নেই। মূলত ঈদের আগ থেকেই মূল্য সূচক টানা ১০ দিনের ওপরে বাড়েছে। যে কারণে দরপতন দেখা দিয়েছে। এর মাধ্যমে শেয়ারবাজারে কিছুটা মূল্য সংশোধন হয়েছে।
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সাবেক চেয়ারম্যান মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, এ দরপতন স্বাভাবিক। টানা উত্থানের কারণেই এ দরপতন হয়েছে। এ নিয়ে চিন্তার কিছু নেই।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. বখতিয়ার হাসান বলেন, শেয়ারবাজারে উত্থান-পতন থাকবে এটাই স্বাভাবিক। তবে টানা উত্থান বা টানা পতন কোনোটায় ভালো নয়। কোরবানি ঈদের এক সপ্তাহ আগ থেকেই শেয়ারবাজারে টানা মূল্য সূচক বেড়েছে। এমন টানা উত্থানের কারণেই এখন কিছুটা দরপতন দেখা দিয়েছে। এটা স্বাভাবিক মূল্য সংশোধন।
তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, মঙ্গলবার ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ২০৩ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ১ হাজার ১৫২ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন বেড়েছে ৫১ কোটি ১৩ লাখ টাকা। লেনদেন হওয়া ১২৭টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের দাম আগের দিনের তুলনায় বেড়েছে। অপরদিকে কমেছে ১৫৭টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৪৮টির দাম।
টাকার অঙ্কে ডিএসইতে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে লংকাবাংলা ফাইন্যান্সের শেয়ার। এদিন কোম্পানির ৭৩ কোটি ৬৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। লেনদেনে দ্বিতীয় স্থানে থাকা এমজেএল বাংলাদেশের ২৯ কোটি ৩২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ২৫ কোটি ৬৮ টাকার শেয়ার লেনদেনে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ফাস ফাইন্যান্স।
লেনদেনে এরপর রয়েছে- প্রিমিয়ার ব্যাংক, গ্রামীণ ফোন, সিটি ব্যাংক, মার্কেন্টাইল ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক, স্কয়ার ফার্মা এবং লাফার্জ সুরমা সিমেন্ট।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে সিএসসিএক্স সূচক ২০ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১১ হাজার ৫১২ পয়েন্টে। বাজারে লেনদেন হয়েছে ৫৮ কোটি ৭১ লাখ টাকা। লেনদেন হওয়া ২৫৪টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে ১০৮টির দাম আগের দিনের তুলনায় বেড়েছে। অপরদিকে কমেছে ১২০টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৬টির দাম।
এমএএস/এএইচ/এ