অঝরে ঝরছে বৃষ্টি। আকাশ জুড়ে অন্ধকার। প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস, বাস, মোটরসাইকেলসহ সব ধরনের যানবাহন চলছে বাতি জ্বালিয়ে। এ দৃশ্য রাতের নয়, আজ (সোমবার) সকাল পৌনে ৮টার। সকাল ৭টা থেকেই রাজধানীতে মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হয়। বৃষ্টিস্নাত দিনে সাতসকালেই নগরজুড়ে রাতের আবহ নেমে আসে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েন অফিসগামীরা।
আবহাওয়া অধিদফতরের আবহাওয়া সহকারী আবদুল আলিম জাগো নিউজকে জানান, সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত রাজধানীতে ৬৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে রাজধানীতে থেমে থেমে বৃষ্টিপাত আরও দুই-তিনদিন হতে পারে।
আবহাওয়া অধিদফতর অবশ্য গতকালই (রোববার) এমন পূর্বাভাস দিয়েছিলো। বলা হয়, মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে সোমবার বৃষ্টি হবে। তবে সেই বৃষ্টিপাত সাতসকালেই শুরু হবে এমনটা অনেকেরই ধারণা ছিল না। ফলে জীবিকার প্রয়োজন, স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকরা বাইরে বের হয়ে বিপাকে পড়েন। মুষলধারে বৃষ্টির কারণে নগরীর বিভিন্ন রাস্তায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।
মুষলধারের বৃষ্টিতে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে গার্মেন্টস ও নিম্নআয়ের নারী ও পুরুষদের। ছাতা না নিয়ে বের হওয়ায় তাদের অধিকাংশকই বৃষ্টিতে ভিজে পথ চলতে দেখা যায়। এ ছাড়া সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরিজীবীদেরও বাসের জন্য বিভিন্ন জায়গায় অপেক্ষা করতে দেখা যায়।
লালবাগ খাজে দেওয়ান লেনের বাসিন্দা আজগর আলী প্রতিদিন সকাল ৭টায় ভিকারুননিসা নূন স্কুল আজিমপুর শাখায় মেয়েকে নামিয়ে দিয়ে হেটে সোহরোওয়ার্দী উদ্যানে আসেন। যথারীতি আজও মেয়েকে নামিয়ে দিয়ে উদ্যানে আসতেই কাক ভেজা হয়ে যান। তিনি বলেন, বৃষ্টির বাগড়ায় আজ হাঁটাটাও ঠিকমতো হলো না।
সকাল সাড়ে ৮টায় রাজধানীর নিউমার্কেটের সামনে দাঁড়িয়ে বৃষ্টিতে ভিজছিলেন গার্মেন্টস কর্মী শাহনুর। কামরাঙ্গীরচর থেকে পায়ে হেটে প্রতিদিন এলিফ্যান্ট রোডের গার্মেন্টেসে যান তিনি।
জানান, আজিমপুর কবরস্থান গেটের কাছ থেকে নিউমার্কেট এক নম্বর গেটের সামনে পর্যন্ত হাঁটু পানি জমে যাওয়ায় যাবেন কি না মনস্থির করতে অপেক্ষা করছিলেন। পরে এক পর্যায়ে ভিজেই রওনা দেন।
প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে শাহনুর আরও জানান, বৃষ্টি নামলেই তাদের মতো নিম্ন আয়ের মানুষের দুর্ভোগ চরমে ওঠে। আধাঘণ্টা টানা বৃষ্টি হলেই নিউমার্কেটের সামনে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। আমাদের ভিজেই কর্মস্থলে যেতে হয়।
নিউমার্কেটের অদূরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশ্বদ্বারের সামনে কাঁচামাল বিক্রেতা দোকান বন্ধ করে পাশে দাঁড়িয়ে আছেন। তিনি বলেন, বৃষ্টিতে ব্যবসার ক্ষতি হয়ে গেল। অন্যান্য দিন এ সময়ে বেচাকেনা জমজমাট থাকলেও বৃষ্টির কারণে আজ কোনো ক্রেতাই নেই।