মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সহিংসতার মুখে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের দেশে ফেরাতে জাতিসংঘের কার্যকর পদক্ষেপ চেয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আজ বুধবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি রবার্ট ডি ওয়াটকিনস বিদায়ী সাক্ষাতের সময় প্রধানমন্ত্রী এই আহ্বান জানান।
এসময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘মিয়ানমারের নাগরিকদের যাতে দেশে ফিরিয়ে নেওয়া হয়, সেজন্য জাতিসংঘকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।’
রবার্ট ওয়াটকিনস সাক্ষাতকালে প্রধানমন্ত্রীকে জানান, তাদের হিসাব অনুযায়ী এই দফায় প্রায় এক লাখ ২৬ হাজার মানুষ মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে এসেছে।
এছাড়াও মিয়ানমারের বর্তমান পরিস্থিতিতে থেকে আরও বহু মানুষ শরণার্থী হিসেবে বাংলাদেশে আসতে পারে বলে আশংকা প্রকাশ করেন জাতিসংঘের বিদায়ী আবাসিক প্রতিনিধি।
বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের বলেন, ‘মিয়ানমারের বিদ্রোহীদের কারা অর্থ ও অস্ত্র সরবরাহ করছে; তা খুঁজে বের করার কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী।’
মিয়ানমার থেকে কক্সবাজারে আশ্রয় নেওয়া বৃদ্ধ ও শিশুদের দুর্ভোগের কথা এবং এই শরণার্থীদের তালিকা তৈরি করতে বিজিবিকে নির্দেশ দেওয়ার কথাও প্রধানমন্ত্রী বৈঠকে বলেন।
রবার্ট ওয়াটকিনস প্রধানমন্ত্রীকে জানান, জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস পুরো বিষয়টি ব্যক্তিগতভাবে দেখছেন।
রাখাইনের ওই পরিস্থিতির কারণে সৃষ্ট সঙ্কটে মানবিক দিক থেকে যা করণীয় বাংলাদেশ তাই করছে বলেও মন্তব্য করেন জাতিসংঘের এই কর্মকর্তা।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে চলে আসা মিয়ানমারের নাগরিকদের চিহ্নিত করতে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর সাহায্য করতে পারে।
জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতিসংঘের এ ধরনের সহযোগিতা পেলে বাংলাদেশ তাকে স্বাগত জানাবে।
অন্যদের মধ্যে মুখ্য সচিব কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী সাক্ষাতকালে উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, মিয়ানমারে জাতিগত নিপীড়নের মুখে পালিয়ে এসে পাঁচ লাখের বেশি মানুষ গত কয়েক দশক ধরে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়ে আছে। বাংলাদেশ তাদের ফিরিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে এলেও মিয়ানমার তাতে সাড়া দেয়নি। বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়াদের নাগরিক হিসেবেও মেনে নিতে নারাজ মিয়ানমার। গত ২৪ অগাস্ট রাখাইনে পুলিশ পোস্ট ও সেনা ক্যাম্পে আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির হামলার পর সীমান্তে নতুন করে মিয়ানমার নাগরিক এই রোহিঙ্গাদের ঢল নামে।