ঈদের ছুটিতে বৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা জোরালো

ঈদের ছুটিতে বৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা জোরালো

এখন শরৎকাল। সদ্য বিদায় নেয়া বর্ষার রেশ কাটেনি এখনও। মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকায় মাঝে-মধ্যেই বাতাসের ডানায় ভর করে চলে আসে কালো মেঘ। ঝরে ঝর ঝর বৃষ্টি।

কয়েক দিন ধরে চলা এমন পরিস্থিতি ঈদের ছুটির দিনগুলোতেও থাকতে পারে। আবহাওয়াবিদদের এমন পূর্বাভাস সত্যি হলে বৃষ্টিস্নাতই হবে এবারের ঈদ। দেশের বেশিরভাগ স্থানের মানুষ বৃষ্টির দেখা পাবেন। দেশি-বিদেশি আবহাওয়া সংস্থাগুলোও এমন আভাস দিচ্ছে।

আবহাওয়া বিভাগের (বিএমডি) কর্মকর্তা আবদুর রহমান খান বৃহস্পতিবার বিকালে যুগান্তরকে বলেন, এ মুহূর্তে মৌসুমী বায়ু দেশের ওপর মোটামুটি সক্রিয়। এটা উত্তর বঙ্গোপসাগরে দুর্বল থেকে মাঝারি অবস্থায় বিরাজ করছে। তবুও ঈদুল আজহার দিনগুলোতে মোটামুটি বৃষ্টি হবে। হয়তো এক নাগারে বা বেশির ভাগ স্থানজুড়ে হবে না, কিন্তু কোথাও হালকা থেকে মাঝারি, আবার কোথাও ভারি থেকে অতি ভারি বৃষ্টি হতে পারে। বৃষ্টিপ্রবণ এলাকার মধ্যে চট্টগ্রাম, ঢাকা ও সিলেট বিভাগ শীর্ষে। অন্য স্থানেও কম-বেশি বৃষ্টি হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের দ্য ওয়েদার চ্যানেলের আগামী ৫ দিনের পূর্বাভাসেও বৃষ্টিপাতের কথা বলা হয়েছে। চ্যানেলটির মতে, শনিবার ঢাকায় বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা শতভাগ। আজ শুক্রবার ও রোববার বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা অবশ্য ৯০ শতাংশ।

সোমবারের দিকে ঢাকায় বৃষ্টি কিছুটা কমলেও মঙ্গলবার আবার বৃষ্টির দেখা মিলবে। ঈদের দিন রাজশাহীতে বৃষ্টির আশঙ্কা ৯০ শতাংশ বলে উল্লেখ করছে এ চ্যানেলটি।

তবে আজ শুক্রবার রাজশাহীতে বৃষ্টির আশঙ্কা শতভাগ। সোমবার নাগাদ রাজশাহীতে বৃষ্টি কমবে। চট্টগ্রামে রোববার পর্যন্ত বৃষ্টির আশঙ্কা ৯০ শতাংশ। এরপর বৃষ্টির প্রবণতা সেখানে কমবে। কিন্তু বরিশালে ঈদের দিন বৃষ্টির আশঙ্কা শতভাগ। ঈদের পরদিনের আশঙ্কা ৯০ শতাংশ এবং আগের দিন ৮০ শতাংশ।

রংপুরে শুক্র, শনি, রোববার তিন দিনই বৃষ্টির আশঙ্কা শতভাগ বলে মনে করছে চ্যানেলটি। সিলেটেও একই পরিস্থিতি থাকবে। এভাবে দেশের অন্যান্য স্থানে কম-বেশি বৃষ্টির পূর্বাভাস আছে।

এদিকে বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় বিএমডি আগের ২৪ ঘণ্টার বৃষ্টিপাতের তথ্য প্রকাশ করেছে। এতে দেখা গেছে, সিলেট, খুলনা ও বরিশাল অঞ্চলের অধিকাংশ স্থানে বেশ বৃষ্টি হয়েছে। ঢাকাসহ বাকি এলাকায় দু-এক জায়গায় বৃষ্টি হয়েছে। একই পরিস্থিতি রাজশাহী বিভাগেরও। এ সময়ে সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয়েছে সিলেটে ৭৫ মিলিমিটার।

বুয়েটের পানি ও বন্যা ব্যবস্থাপনা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. একেএম সাইফুল ইসলাম বৃহস্পতিবার বলেন, একবার বৃষ্টিপাত হয়ে গেলে কিছুদিন শুষ্ক থাকে। ১৬ আগস্টের পর প্রায় ১২দিন সেই শুষ্ক সময় গেছে। এই সময়টায় বৃষ্টিপাত হয়েছে বঙ্গোপসাগরে। তখন দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চল থেকে বাতাস আর্দ্রতা নিয়ে আসে। ফলে বৃষ্টিপাতের একটি সময় এসে গেছে। আগামী সপ্তাহ জুড়েই বৃষ্টিপাত হবে। তবে শরতের বৃষ্টির প্রকৃতি যেটা থাকে, সেটাও থাকবে। এক নাগারে বৃষ্টি হবে না।

তিনি বলেন, ব্রহ্মপূত্রের উজানে আসামেও এই সপ্তাহে বৃষ্টিপাত হবে। তবে ব্রহ্মপূত্র যেহেতু এখনও বিপদসীমার ২ মিটার নীচে আছে, তাই যে বৃষ্টি হবে, তাতে বন্যা দেখা দেয়ার আশংকা খুবই কম।

বাংলাদেশ