আদালত অবমাননার দায়ে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রাজা গিলানিকে দোষী সাব্যস্ত করেছে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট।
দীর্ঘ তিনমাসের আইনি যুক্তি-তর্ক এবং সাক্ষ্য প্রমাণ উপস্থাপন শেষে আদালত বৃহস্পতিবার চূড়ান্ত রায় প্রদান করেন । পাকিস্তানের ইতিহাসে নজিরবিহীন এই রায়ে আদালতের নির্দেশ অমান্য করার দায়ে দোষী সাব্যস্ত হন গিলানি।
তবে দোষী সাব্যস্ত হলেও কোনো সাজা ভোগ করতে হবে না গিলানিকে। রায় ঘোষণা শেষে আদালত স্থানত্যাগ না করা পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থাকার প্রতীকি সাজা দেওয়া হয় তাকে। ফলে তার সাজার মেয়াদ স্থায়ী হয় মাত্র ৩০ সেকেন্ড। যদিও এই অপরাধে সর্বোচ্চ ছয়মাসের কারাদণ্ড হওয়ার সম্ভাবনা ছিলো গিলানির।
বিচারপতি নাসিরুল মুলকের নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের একটি বেঞ্চ স্থানীয় সময় সকাল ৯ টা ৩৫ মিনিটে রায় ঘোষণা করেন। সংবিধানের ৬৩/১ ধারা অনুযায়ী তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয় বলে ঘোষণা করে আদালত।
তবে নিজের বিরুদ্ধে আনা সকল অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন গিলানি। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি বর্তমান প্রেসিডেন্ট জারদারির বিরুদ্ধে দুর্নীতি মামলার কার্যক্রম পুনরায় আরম্ভ করতে ইচ্ছাকৃতভাবে ব্যর্থ হয়েছেন। এর আগে এই মামলার কার্যক্রম শুরু করতে সরকারকে নির্দেশ দিয়েছিলো আদালত।
তবে গিলানি দাবি করেন সংবিধানের বাধ্যবাধকতার কারণেই আদালতের এই নির্দেশ মানতে বাধ্য নন তিনি। কারণ সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ প্রধান হিসেবে জারদারি সব ধরনের বিচারের উর্দ্ধে।
আদালতে হাজির হওয়ার সময় কেবিনেটের সদস্য, আইনজীবি, সমর্থক ও মিডিয়াকর্মী পরিবেষ্টিত অবস্থায় ছিলেন গিলানি। এসময় তাকে ফুলের পাপড়ি ছিটিয়ে বরণ করে নেয় দলীয় সমর্থকরা।
রায় ঘোষণার অল্প সময় পরই সঙ্গীদের নিয়ে আদালত ভবন ত্যাগ করেন প্রধানমন্ত্রী। তবে এই রায়ের ফলে তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করার বৈধতা হারাতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।