ঈদে বাড়ি ফেরার আসায় অগ্রিম টিকিট কিনতে কমলাপুরে যেন জনসমুদ্র। গত তিনদিনের তুলনায় আজ সোমবার অগ্রিম টিকিট প্রত্যাশীদের ভীড় বেশি। কাউন্টারের সামনে থেকে দীর্ঘ লাইন এঁকেবেঁকে সিঁড়ি পেরিয়ে বাইরে চলে গেছে।
সরজমিনে দেখা যায়, টিকিটের জন্য কেউ গতকাল (রোববার) রাত থেকে, কেউবা ভোর থেকে লাইনে দাঁড়িয়েছেন। লাইনের সামনে দিকে যারা ছিলেন তারা অনেকেই প্রত্যাশিত টিকিট পেয়ে আনন্দিত, উচ্ছ্বসিত। আর যারা লাইনে দাঁড়িয়ে আছের তারা শেষ পর্যন্ত টিকিট পাবেন কিনা তা নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন।
পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে আজ দেয়া হচ্ছে ৩০ আগস্টের ট্রেনের অগ্রিম টিকিট। কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের ২৩টি কাউন্টার থেকে এসব অগ্রিম টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে। যার মধ্যে ২টি কাউন্টার নারীদের জন্য সংরক্ষিত রয়েছে।
টিকিট কাউন্টারে কর্মকর্তরা জানান, আগামী ২ সেপ্টেম্বর ঈদ হওয়ার সম্ভাবনা থাকায় ৩০ আগস্টের টিকিটের চাহিদা অনেক বেশি। এ কারণে আজ (সোমবার) কমলাপুরে টিকিট প্রত্যাশীদের ভীড় গত তিনদিনের তুলনায় বেশি। তবে সবচেয়ে বেশি ভীড় হবে আগামীকাল (মঙ্গলবার)। এ দিন দেয়া হবে ৩১ আগস্টের ট্রেনের অগ্রিম টিকিট।
খুলনাগামী ট্রেনের টিকিটের জন্য লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন আরিফুল ইসলাম। তিনি বলেন, ৩০ তারিখের টিকিটের জন্য গতরাতে এসে লাইনে দাঁড়িয়েছি। দীর্ঘ লাইনের কারণে এখনও কাউন্টার পর্যন্ত পৌঁছতে পারিনি। কাউন্টারে যারা আছেন তারা খুবই ধীর গতিতে কাজ করছেন। এতে উপস্থিত টিকিট প্রত্যাশীরা বিরক্তও হচ্ছেন। আবার শুনতে পাচ্ছি ইতোমধ্যেই না কি এসি টিকিট শেষ হয়ে গেছে।
রাজশাহীগামী ট্রেনের টিকিট হাতে পেয়েছেন সাবিনা আক্তার। জাগো নিউজকে তিনি জানান, লাইনে দাঁড়িয়ে দীর্ঘ অপেক্ষার পর কাঙ্ক্ষিত টিকিট হাতে পেয়েছি। তবে এভাবে প্রতিবার ভোগান্তি নিয়ে টিকিট সংগ্রহ না করে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের উচিত সিংহভাগ টিকিট অনলাইনে দেয়া। এতে টিকিট প্রত্যাশীদের ভোগান্তি কিছুটা হলেও কমবে।
লাইনে দাঁড়িয়ে কাউন্টার পর্যন্ত পৌঁছানোর আগেই টিকিট শেষ বলে -এমন সংবাদে ক্ষোভ প্রকাশ করেন টিকিট প্রত্যাশী সিরাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, টিকিট পেতে প্রতিবারই মানুষের ভোগান্তি পোহাতে হয়। যেন এর কোনো সমাধান নেই। অফিস কামাই (বাদ) করে লাইনে দাঁড়িয়েও শেষ পর্যন্ত কাঙ্ক্ষিত টিকিট পাইনি।
কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ম্যানেজার সীতাংশু চক্রবর্তী বলেন, আজ (সোমবার) প্রায় সাড়ে ২৫ হাজার টিকিট বিক্রি হবে। এ ছাড়া অন্যান্য চলতি ট্রেন মিলিয়ে টিকিট বিক্রি হবে ৫০ হাজার। আমাদের সম্পদ সীমিত, লাইনে যতজন দাঁড়িয়েছেন সবাইকে হয়তবা টিকিট দিতে পারব না। বেশিরভাগ ট্রেনেই অতিরিক্ত কোচ সংযোজন করা হয়েছে।
ট্রেনের টিকিটের মধ্যে ২৫ শতাংশ অনলাইন, ৫ শতাংশ ভিআইপি এবং ৫ শতাংশ রেলওয়ে কর্মকর্মতা-কর্মচারীদের জন্য বরাদ্দ। বাকি ৬৫ শতাংশ টিকিট কাউন্টার থেকে বিক্রি হয়।
তিনি আরও বলেন, ট্রেনে যাতায়াতে স্বাচ্ছন্দবোধ করার কারণে রেলের টিকিট প্রত্যাশীদের সংখ্যা বাড়ছে। যাত্রীরা সুশৃংঙ্খলভাবে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট কাটতে পারছেন।
এদিকে, গতকাল (রোববার) টাঙ্গাইলে রেল সেতুর মাটি সরে যাওয়ায় এখন পর্যন্ত (সোমবার বিকেল) রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক হয়নি। এ কারণে বন্ধ রয়েছে ঢাকা থেকে উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলগামী একতা, ধুমকেতু, সুন্দরবন, নীলসাগর, রংপুর এক্সপ্রেস, সিল্কসিটি, লালমণি, পদ্মা, দ্রুতযান এক্সপ্রেস। বন্ধ রয়েছে মৈত্রী এক্সপ্রেসও।