বিএনপি নেতা এম ইলিযাস আলীর জন্মস্থান সিলেটের বিশ্বনাথে সোমবার পুলিশ-জনতা সংঘর্ষের ঘটনায় জাকির হোসেন (৩০) নামে আরও একজন আহত ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে।
বুধবার ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে সিলেট ওসমানী মিডেক্যল কলেজ হাসপাতলের দ্বিতীয় তলার ১১ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। বর্তমানে জাকিরের লাশ হাসপাতাল মর্গে রাখা আছে। ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে তা হস্তান্তর করা হবে।
সিলেট জেলা পুলিশ সুপার শাখাওয়াত হোসনে ও লামা বাজার ফাঁড়ি ইনচার্জ ফখরুল আলম বাদল বুধবার সকালে বাংলানিউজকে তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
নিহত জাকির সম্পর্কে স্থানীয় সূত্র জানায়, জাকির বিশ্বনাথের নরসিংহপুর কলোনিতে থাকতেন। তার গ্রামের বাড়ি সুনামগঞ্জের দোয়ারা উপজেলার দোয়ারগাঁও। তার বাবার নাম ভুট্টো মিয়া। বিশ্বনাথে তিনি রিকশা চালাতেন।
তার বাবা-মা জানান, সে বিএনপির একজন সক্রিয় সমর্থক ছিল। তারা দিন আনে দিন খায় এমন একটি পরিবার।
ঘটনার দিন সংঘর্ষের সময় তার মৃত্যু সম্পর্কে প্রত্যক্ষদর্শী সংবাদকর্মী, স্থানীয় জনতা ও পরে ভিডিও ফোটেজে দেখা জানা যায়, বিশ্বনাথ বাজারের বাসিয় নদীর উপর ব্রিজে বিক্ষুব্ধ জনতার সঙ্গে জাকির ছিল। বার বার সে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুঁড়তে থাকে।
পুলিশের গুলিতে তার সঙ্গে থাকা জনতা পিছু হঠলেও সে তখনও ঐ ব্রিজের উপর থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুঁড়ছিল। এক পর্যায়ে পুলিশ কাছাকাছি চলে আসে। তখন সরাসরি তার পেটে পুলিশ গুলি করলে ওই ব্রিজের উপরই লুটিয়ে পড়ে সে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ফুটেজ সূত্রে আরও জানা যায়, এরপরই পুলিশের সঙ্গে যোগ দেওয়া স্থানীয় আওয়ামী লীগ কর্মীরা তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে। এসময় সে সজ্ঞাহীন অবস্থায় ব্রিজের উপর পড়েছিল।
পরে আহত অন্যান্য পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে তাকে ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
হাসপাতালে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, যখন তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তখন তার পেটের নাড়িভুড়ি বেরিয়ে পড়েছিল।
এর আগে সোমবারের এ ঘটনায় সেলিম আহমদ (৩০) ও মনোয়ার হোসেন (২৮) নামের আরও দু’জনের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় পুলিশসহ আহত হয় আরও অর্ধশতাধিক। এদের মধ্যে বেশ কয়েকজন আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন।