যুদ্ধাপরাধ মামলা থেকে অব্যাহতি চেয়ে সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর করা রিভিউ পিটিশন (পুনর্বিবেচনার আবেদন) ও অভিযোগ গঠন আদেশের সংশোধনীয় চেয়ে আবেদন দু’টি খারিজ করে দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।
বুধবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হকের নেতৃত্বে ৩ সদস্যের ট্রাইব্যুনাল তা খারিজ করে দেন। এসময় সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ট্রাইব্যুনালে উপিস্থিত ছিলেন।
মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে মানবতাবিরোধী অপরাধে আটক বিএনপি নেতা সাকা চৌধুরীর বিরুদ্ধে গত ৪ এপ্রিল ২৩টি অপরাধের দায়ে অভিযোগ গঠন করে ২৯ এপ্রিল থেকে মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু করতে প্রসিকিউশনকে নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।
সেদিনই ইতিপূর্বে মামলা থেকে অব্যাহতি চেয়ে সাকা চৌধুরীর করা আবেদন টাইব্যুনালের খারিজ করে দেওয়া আদেশের রিভিউ চেয়ে পিটিশন দাখিল করে তার আইনজীবী। সেই সঙ্গে অভিযোগ গঠন আদেশের সংশোধনীয় চেয়ে আরেকটি আবেদন করা হয়। পরে ১২ এপ্রিল এ আবেদন দু’টির শুনানি করার নির্দেশ দেন আদালত।
এ বিষয়ে সাকা চৌধুরীর পক্ষে তার আইনজীবী ব্যারিস্টার ফখরুল ইসলাম এবং রাষ্ট্রপক্ষে প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুম শুনানিতে অংশ নেন।
এদিকে সাকা চৌধুরী তার দাঁতের চিকিৎসার আবেদন করলে গাজীপুর হাসপাতালে চিকিৎসা করানোর জন্য জেল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।
সাকার বিরুদ্ধে গঠন করা অভিযোগের মধ্যে রয়েছে হত্যা, গণহত্যা, ধষর্ণ, দেশান্তর করা, লুটপাট, অপহরণ করে চট্টগ্রামের গুডস হিলে নির্যাতনসহ বেশ কয়েকটি অপরাধ।
এখন পর্যন্ত দ্বিতীয় ব্যক্তি হিসেবে সাকা চৌধুরীর বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ মামলায় ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। এর আগে জামায়াতের নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের পর এখন সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে।
উল্লেখ্য, ২০১০ সালের ২৬ জুন হরতালের আগের রাতে রাজধানীর মগবাজার এলাকায় গাড়ি ভাঙচুর ও গাড়ি পোড়ানোর অভিযোগে সাকা চৌধুরীর বিরুদ্ধে রমনা থানায় মামলা দায়ের করা হয়। ওই মামলায় সে বছরের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের প্রত্যুষে গ্রেফতার করা হয় তাকে। পরে ১৯ ডিসেম্বর একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে গ্রেফতার দেখানো হয় সাকা চৌধুরীকে। পরে ৩০ ডিসেম্বর আদালতের নির্দেশে প্রথমবারের মতো সাকা চৌধুরীকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।
একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ২০১১ সালের ৩ অক্টোবর তার বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দাখিল করে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত দল।
একই বছরের ১৪ নভেম্বর সাকা চৌধুরীর বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগপত্র জমা দেয় প্রসিকিউশন। ১৮ নভেম্বর আনুষ্ঠানিক অভিযোগপত্র গ্রহণ করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
৫৫ পৃষ্ঠার আনুষ্ঠানিক অভিযোগের সঙ্গে এক হাজার ২৭৫ পৃষ্ঠার আনুষঙ্গিক নথিপত্র এবং ১৮টি সিডি ট্রাইব্যুনালে জমা দেয় প্রসিকিউশন।