উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টির পানিতে পদ্মানদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় রাজবাড়ী সদর, পাংশা, কালুখালী ও গোয়ালন্দ উপজেলার নদী তীরবর্তী ও বাঁধের ভিতরে বসবাসরত নিম্নাঞ্চলের হাজার হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে গোয়ালন্দ দৌলতদিয়া গেজ স্টেশন পয়েন্টে পদ্মার পানি বিপদসীমার ৯২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানা গেছে। এতে করে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৬ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে।
গত কয়েকদিন ধরে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ দৌলতদিয়া গেজ স্টেশন পয়েন্টে পানি হু হু করে বেড়ে বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হতে শুরু করেছে। আর এতে করেই প্লাবিত হতে শুরু করেছে নিম্নাঞ্চলের বসবাসরত পরিবার, মাছের ঘের ও ফসলি জমি। পানিবন্দি ওইসব পরিবার তাদের সন্তান ও গৃহপালিত পশু নিয়ে পড়েছে চরম বিপাকে।
জানা গেছে, রাজবাড়ী সদর উপজেলার বরাট, মিজানপুর, চন্দনী ও খানগঞ্জ, পাংশার হাবাসপুর ও বাহাদুরপুর, কালুখালীর রতনদিয়া ও কালিকাপুর, গোয়ালন্দের দেবগ্রাম, দৌলতদিয়া, উজানচর ও ছোট ভাকলা ইউনিয়নের হাজার হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। জেলা প্রশাসনের তালিকা প্রস্তুত হওয়া মাত্রই ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার গুলোকে চাল অথবা নগদ অর্থ দেওয়া হবে।
পানিবন্দি রায়হান শিকদার, আব্দুল ওহাব, শাহেদা বেগম, রাহেলা, নাছিমা, বিউটি বেগম জানিয়েছেন, নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তারা চরম দুর্ভোগের মধ্যে রয়েছেন। বাড়িতে পানি ওঠায় রান্না করতে পারছেন না। গবাদী পশু নিয়ে তারা বিপাকে পড়েছেন। তাছাড়া চারপাশে পানি হওয়াতে হাতে নেই কোনো কাজও, আবাদী জমিগুলো তলিয়ে রয়েছে পানিতে। তাদের এমন চরম দুঃসময়ে এখনো পর্যন্ত চেয়ারম্যান-মেম্বারসহ কেউ কোনো সাহায্যে সহযোগিতা করনি।
রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক মো. শওকত আলী বলেন, রাজবাড়ীর পাঁচটি উপজেলার চারটি উপজেলায় বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এগুলোর বেড়ি বাঁধের বাইরে যে সমস্ত এলাকা আছে তার বেশির ভাগই তলিয়ে গেছে। কিছু কিছু স্থানে আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে।
তিনি বলেন, গোয়ালন্দ উপজেলার মানুষ সবচেয়ে বেশি বন্যায় আক্রান্ত হয়েছে। সেখানকার প্রায় ১৬ হাজার ৯০০ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। প্রতিটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ইউনিয়নের চেয়ারম্যানরা ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করছে। পানিবন্দি পরিবারগুলোকে সাহায্যের জন্য তাদের সকল ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে, শুধু ওইসব পরিবারের তালিকা প্রস্তুতের আপেক্ষায় রয়েছেন। তালিকা প্রস্তুত হওয়া মাত্রই তাদেরকে চাল দেওয়া হবে।