প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহা বলেছেন, বিচারকরা তো ইলিশের গন্ধ পায় না। বুধবার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত (মোবাইল কোর্ট) পরিচালনা সংক্রান্ত আপিলের শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের উদ্দেশ্যে এ কথা বলেন প্রধান বিচারপতি।
এ সময় মোবাইল কোর্ট অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেয়া রায় স্থগিতের মেয়াদ ফের আগামী ১০ অক্টোবর পর্যন্ত বৃদ্ধির আদেশ দেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
বুধবার প্রধান বিচারপতি নেতৃত্বে ছয় বিচারপতির আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন।
প্রধান বিচারপতি ভ্রাম্যমাণ আদালত প্রসঙ্গে বলেন, মোবাইল কোর্ট আইন সিআরপিসির (ফৌজদারি কার্যবিধি) কয়েকটি ধারার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। আমরা আপনাকে (অ্যাটর্নি জেনারেল) এর একটি তালিকা দেব। এগুলো ঠিক হওয়া উচিত। আমরা আইনের অধীনেই বিচার করব। আইনের বাইরে যাব না।
গত ২১ মে এক আদেশে ভ্রাম্যমাণ আদালত প্রসঙ্গে দেশের সর্বোচ্চ আদালত ২ জুলাই পর্যন্ত হাইকোর্টের রায় স্থগিত করেছিলেন। পরে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আরও কয়েক দফা এ স্থগিতাদেশের মেয়াদ বাড়ানো হয়। সর্বশেষ মেয়াদ ছিল মঙ্গলবার পর্যন্ত।
এ অবস্থায় বুধবার অ্যাটর্নি জেনারেল হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের শুনানি আগামী ৩ অক্টোবর পর্যন্ত মুলতবি রাখার আবেদন জানান। তিনি বলেন, প্রস্তুতির জন্য এ সময় দরকার।
আদালতে অ্যাটর্নি জেনারেল আরও বলেন, মোবাইল কোর্ট তো বেশকিছু ভাল কাজ করেছে। কারেন্ট জালের বিরুদ্ধে তাদের কাজ প্রশংসিত হয়েছে। কিন্তু এখনও কারেন্ট জাল বন্ধ হয়নি।
এ সময় প্রধান বিচারপতি বলেন, আমরা তো কারেন্ট জাল নিষিদ্ধ করে আদেশ দিয়েছি।
জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, আমার বাড়ি পদ্মার পাড়ে। এখনও নদীতে কারেন্ট জাল দিয়ে মাছ ধরা হয়। আদালতের আদেশের পর কারেন্ট জাল দিয়ে মাছ ধরা বন্ধ হয়েছিল। জাটকা নিধন বন্ধ হওয়ায় দেশে ইলিশের উৎপাদন বেড়েছে।
প্রধান বিচারপতি বলেন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যদি তৎপর না হয় তাহলে আমাদের কী করার আছে? তিনি আরও বলেন, আমরা বিচারকরা তো ইলিশের গন্ধ পাই না।
অ্যাটর্নি জেনারেলের উদ্দেশ্যে প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, ‘শুনেছি, আপনি জাতীয় সংসদ নির্বাচন করতে যাচ্ছেন। আপনি আপস করে চলছেন। মনে রাখবেন, যত তাড়াতাড়ি এটা (মোবাইল কোর্ট নিয়ে শুনানি) করবেন ততই সরকারের লাভ।’