অস্ট্রেলিয়ার মত পরাশক্তি দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর আসছে। কিন্তু যে মাঠে প্রস্তুতি ম্যাচ দিয়ে শুরু হবে তাদের সফর, সেই ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়াম খেলার জন্য তৈরি নয়। মাঠের বাইরে ও ভেতরে বৃষ্টি, সোয়ারেজ ও গার্মেন্টস ফ্যাক্টরির পানিতে সয়লাব। এ ব্যর্থতার দায় কার? কেন মাঠের এ বেহাল অবস্থা?
খালি চোখে ব্যর্থতার সব দায়-দায়িত্ব বর্তায় বিসিবি তথা গ্রাউন্ডস কমিটির। কিন্তু বিসিবি পরিচালক ও গ্রাউন্ডস কমিটির চেয়ারম্যান হানিফ ভূঁইয়া পরিষ্কার বুঝিয়ে দিয়েছেন, এখানে বিসিবির বিশেষ করে গ্রাউন্ডস কমিটির কোনই দায় নেই। কারণ সমস্যাটা মাঠের ভেতরের নয়। বাইরের। তাও একদম স্টেডিয়ামের বাইরে থেকে আসা সোয়ারেজ, আশেপাশের গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিগুলোর পানি এবং বৃষ্টির পানি মিলে মিশে একাকার। সেই পানি নিষ্কাশনের কোন ভালো ব্যবস্থা নেই। যে কারণে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। সেটা বিসিবির একার পক্ষে সে পানি নিষ্কাশন করা সম্ভব নয়।
পুরো বিষটি পরিষ্কার করতে গিয়ে হানিফ ভূঁইয়া জাগো নিউজকে বলেন, আসলে মাঠের মালিক, পরিচালনা ও পরিচর্যার দায়িত্বটা আমাদের মানে বিসিবির নয়। এটা জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের। যদি আমাদের এখতিয়ারে থাকতো তাহলে আমরা বহু আগেই মাঠ থেকে পানি সরানোর কাজে হাত দিতাম। কিন্তু জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ কিছুই করেনি। তারা ব্যর্থ। আর সবচেয়ে বড় কথা হলো, সমস্যাটাতো আর ফতুল্লা স্টেডিয়ামের আউটফিল্ডে নয়। মাঠ ঠিক ছিল। এমন নয় যে, একটু বৃষ্টিতেই মাঠের ভিতরে হাটু পানি জমে যাচ্ছে। তাতো নয়। মাঠতো ঠিকই আছে। ড্রেনেজ ব্যবস্থাও বেশ ভালো। সমস্যা হচ্ছে মাঠের বাইরে আউটার স্টেডিয়াম ও প্রবেশ দ্বার থেকে মাঠে ঢোকার জায়গায় পানি জমে যায়। সেটা মূলত বৃষ্টির পানি। সঙ্গে আশেপাশের গার্মেন্টস ও সোয়ারেজের পানি। যেহেতু ঐ এলাকায় পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা ভালো না, তাই ঐ পানি সরেনা। জমে থাকে। এখন সেটার দায় দায়িত্বও আর বিসিবির গ্রাউন্ডস কমিটির না। আমাদের পক্ষে তা ভালো করাও সম্ভব নয়। তারপরও যেহেতু অস্ট্রেলিয়ার মত বিশ্ব মানের দলের সঙ্গে প্রস্তুতি ম্যাচ, তাই আমরা সাধ্যমত চেষ্টা করবো পানি সরিয়ে মাঠকে খেলা উপযোগি করে তুলতে। আগের দিন (সোমবার) বিসিবি সিইও, হেড কিওরেটর গামিনি ডি সিলভা ও গ্রাউন্ড কমিটির ম্যানেজার আব্দুল বাতেন গিয়ে ফতুল্লা স্টেডিয়ামের আউট ফিল্ড পরিদর্শন করে এসেছেন। আমি নিজেও আজ (মঙ্গলবার) সকালে সড়েজমিনে গিয়ে দেখে এসেছি। কিওরেটর বেলাল আমাকে আশ্বস্ত করেছেন, ২২ আগষ্টের আগে মাঠে থাকা পানি সড়িয়ে খেলার উপযোগি করা সম্ভব।’
এ দিকে হানিফ ভুঁইয়ার দেয়া তথ্য অনুযায়ী, ‘পিচ শতভাগ অক্ষত। সম্পূর্ণ ভালো ও খেলার উপেযোগি। তার এতটুকু ক্ষতি হয়নি। কোন রকম বাড়তি পরিচর্যার দরকার নেই। আউটফিল্ডের ৪০ গজ বেশ ভালো আছে। তার বাইরে কোথাও কোথাও পানি জমা। সেটা পাম্প মেশিন বসিয়ে বাইরে ফেলার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিওরেটর বেলাল আসাকে আশ্বস্ত করেছেন, মাঠ তৈরি করে দিবেন। মোটর দিয়ে মাঠের ভিতরের পানি পাম্প করে বেড় করার পর কয়েকদিনের পরিচর্যায় খেলা উপযোগি হয়ে যাবে মাঠ।
কিন্তু চিন্তাটা অন্য জায়গায়। মূল প্রবেশদ্বার ও আউটার স্টেডিয়ামের পানি বের করতে হবে। বৃষ্টি, গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি ও সোয়ারেজের পানি আউটার স্টেডিয়ামে ঢোকা বন্ধ করতে হবে। মূল সমস্যা সেটাই। ঐ পানি আউটার স্টেডিয়ামে ঢোকা বন্ধ করতে না পারলে আবার সেই পুরোন অবস্থাই হবে। যখন টিম বাস ঢুকবে তখন বাসের চাকায় পানি লাগবে। এজন্য জেলা প্রশাসন, টিএনও’র সঙ্গে কথা হয়েছে। স্থানীয় গার্মেন্টস ব্যবসায়ীদের সঙ্গেও বৈঠক করা হয়েছে। আমরা যখন মোটর দিয়ে পাম্প করবো তখন যে বাঁধ আছে, ওটা যাতে ভেঙ্গে ফেলা না হয়, সেজন্য পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গেও বৈঠক হয়েছে। জমে থাকা পানি বাইরে ফেলা যাচ্ছে না। রাস্তার পানিটা আউটার স্টেডিয়ামের বাইরে ফেলে আউটার স্টেডিয়ামের চারিদিকে বালির বাঁধ দেয়া হবে। তবেই পরিস্থিতির ইতিবাচক সমাধান সম্ভব।’