উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালের ফিরতি লেগে স্পেনের বার্সেলোনার সঙ্গে ২-২ গোলে ড্র করেছে ইংল্যান্ডের ক্লাব চেলসি। দশজনের দলে পরিণত হয়েও বর্তমান চ্যাম্পিয়ন বার্সাকে রুখে দিয়েছে ব্লুজরা। দুই লেগ মিলে ৩-২ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে ফাইনালের টিকিট কেটেছে রবার্তো দি মাত্তেওর দল।
বার্সেলোনা: ২ (সার্জিও বুসকেতস ৩৫মি. ও আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা ৪৩মি.)
চেলসি: ২ (রামিরেস ৪৫+১মি. ও ফার্নান্দো তোরেস ৯০+২মি.)
সেমিফাইনালের প্রথম লেগে ১-০ গোলের জয় নিয়ে নু ক্যাম্পে ফিরতি লেগে ক্লাব ফুটবলের শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট পড়া বার্সেলোনার মুখোমুখি হয় চেলসি। এগিয়ে থাকার জন্য ব্লুজরা প্রথম থেকেই যেন পণ করেছিলো বার্সার আক্রমণ রুখে দেওয়ার। এদিকে পিছিয়ে থেকে জয় পেতে মরিয়া বার্সেলোনা শুরু থেকেই একের পর আক্রমণ চালাতে থাকে।
তৃতীয় মিনিটেই সুযোগ চলে আসে স্বাগতিকদের। তবে এক্ষেত্রে মেসির শট আঘাত হানে জালের বাইরে। এরপরও একের পর এক আক্রমণ চালিয়ে যায় গার্দিওলার শিষ্যরা। যদিও চেলসির রক্ষণদুর্গ ভাঙতে পারছিলেন না মেসিরা। তবে ৩৫ মিনিটে কাক্সিক্ষত সফলতা এনে দেন মিডফিল্ডার সার্জিও বুসকেতস। আইজাক কুয়েঙ্কার পাসের বল জালে জড়িয়ে দেন বুসকেতস (১-০)।
গোল হজমের এক মিনিট পরই চেলসি শিবিরকে হতাশ হতে হয় অধিনায়াক জন টেরির লাল কার্ডের জন্য। আক্রমণ রুখতে অ্যালেক্সিস সানচেজকে আঘাত করেন টেরি।
দশজনের দলে পরিণত হওয়ার পরও রক্ষণ সামলানোর পাশাপাশি মাঝে মধ্যেই পাল্টা আক্রমণ চালিয়েছেন ফ্রাঙ্ক ল্যাম্পার্ড ও দিদিয়ের দ্রগবরা। তবে এরই মাঝে ৪৩ মিনিটে লিওনেল মেসির বানিয়ে দেওয়া বল থেকে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন ইনিয়েস্তা।
২-০ ব্যবধানে এগিয়ে যাওয়ায় বার্সা শিবিরে চলে আসে জয়ের আগাম আনন্দ। তবে এ আনন্দ বেশি সময় স্থায়ী হয়নি কাতালানদের। দ্বিতীয় গোল হজমের তিন মিনিট পরই ল্যাম্পার্ডের পাল্টা আক্রমণের বল থেকে চেলসির হয়ে ব্যবধান কমান (২-১) রামিরেস। মিডফিল্ডারের গোলটিই যেন সৌভাগ্যের ছোঁয়া লাগিয়ে দেয় সফরকারীদের।
বিরতির পর তাই যেন ভাগ্য সহায় হয় চেলসির। ৪৮মিনিটে বক্সের মধ্যে সেস ফ্যাব্রিগাসকে দ্রগবার অবৈধভাবে ট্যাকেলের জন্য পেনাল্টি পায় বার্সেলোনা। তবে স্পট কিক থেকে গোল করতে ব্যর্থ হন আর্জেন্টাই জাদুকর মেসি। তার শটটি ফিরে আসে ক্রসবারে প্রতিহত হয়ে।
এরপর গোল পেতে মরিয়া গার্দিওলার শিষ্যরা আক্রমণে যেন আরো ধার বাড়িয়ে দেয়। অপরদিকে চেলসির দশজনই যেন দায়িত্ব নেন রক্ষনদুর্গ সামলানোর। তবে এরই মাঝে গোল পেতে পারতো বার্সেলোনা যদি ভাগ্যদেবী বৈমুখ না হতেন। বার্সার শট কখনো চেলসি গোলরক্ষক দারুণ দক্ষতায় রুখে দিয়েছেন। কখনো ফিরে এসেছে গোল পোস্টে প্রতিহত হয়ে।
অতিরিক্ত সময়ে বার্সার প্রায় সব খেলোয়াড়ই চলে আসেন চেলসির রক্ষনদুর্গ ভাঙার জন্য। এই সুযোগে বার্সাকে বড় হতাশার মধ্যে ঠেলে দেন দ্রগবার বদলি ফরোয়ার্ড ফার্নান্দো তোরেস। এই স্প্যানিশ ফরোয়ার্ডের পায়ে বল আসার সঙ্গে সঙ্গে এক দৌড়ে চলে যান অপর প্রান্তে। গোলরক্ষক ভালদেসকে পরাস্ত করে জড়িয়ে দেন বার্সার জালে (৯০+২মি:)।
দ্বিতীয় গোল হজমের পর মাথা নিচু করেই মাঠ ছাড়াতে হয় মেসিদের। লা লিগার শিরোপার পথ থেকে ছিটকে যাওয়ার পর ভেঙ্গে যায় পরপর দুবার ইউরোপ সেরা হওয়ার স্বপ্ন।