২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা সংক্রান্ত পৃথক দুটি মামলার দায় থেকে অব্যাহতির আবেদনের ওপর শুনানি চলছে। পুলিশের সাবেক আইজি আশরাফুল হুদার অব্যাহতির আবেদনের ওপর শুনানি শুরু করেছেন তার আইনজীবী টিএম আকবর।
সোমবার ১০টা ৫৫ মিনিটে পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার সংলগ্ন অস্থায়ী আদালতে শুনানি শুরু হয়। ঢাকার এক নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন শুনানি গ্রহণ করছেন।
অব্যাহতির আবেদন করা ১৯ আসামির মধ্যে এপর্যন্ত ১৩ জনের শুনানি শেষ হয়েছে। গত ২২ নভেম্বর সাবেক উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টুসহ ২ আসামি শুনানি শেষ হয়।
২২ নভেম্বর পিন্টু তার শুনানিতে বলেন, ‘মামলার রাজসাক্ষী বানানোর প্রলোভন দিয়ে আদায় করা হয়েছে। আমার সাথে মুফতি হান্নানের যোগসাজসের অভিযোগ আনা হয়। অথচ আমি গোপালগঞ্জের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী থাকাকালিন মুফতি হান্নান গ্রেপ্তার হন। তার সাথে যোগসাজস থাকলে মুফতি হান্নান গ্রেপ্তার হতেন না। মিথ্যাচার ও অত্যাচারের উপর এ চার্জশীট তৈরী। এ চার্জশিটের ওপর ভিত্তি করে কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা যায় না।’
যে ১৩ আসামির অব্যাহতির আবেদনের ওপর শুনানি শেষ হয়েছে তারা হলেন, সাবেক প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, জামায়াত নেতা সাবেক মন্ত্রী আলী আহসান মুহাম্মাদ মুজাহিদ, হরকাতুল জিহাদ নেতা মাওলানা আবু তাহের, সাবেক আইজিপি খোদা বখশ চৌধুরী, বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার ভাগ্নে সাইফুল ইসলাম ডিউক, মাওলানা শেখ আব্দুস সালাম, মাওলানা সাব্বির, ইয়াহিয়া, মুন্সী মহিবুল্লাহ, গোয়েন্দা প্রধান আব্দুর রহিম ও আরিফ হাসান সুমন, আব্দুস সালাম পিন্টু ও আব্দুল মজিদ ভাট।
শুনানি উপলক্ষে সাবেক মন্ত্রী আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টু, জঙ্গি নেতা মুফতি হান্নান, সামরিক গোয়েন্দা অধিদফতরের (ডিজিএফআই) সাবেক পরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) সাবেক মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুর রহিম, পুলিশের তিন সাবেক আইজি আশরাফুল হুদা, শহুদুল হক ও খোদা বখশ চৌধুরী, সাবেক তিন তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির সাবেক পুলিশ সুপার রুহুল আমিন, এএসপি আবদুর রশিদ ও এএসপি মুন্সী আতিকুর রহমান, খালেদা জিয়ার ভাগ্নে কমান্ডার (অব.) সাইফুল ইসলাম ডিউকসহ ৩২ আসামিকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ৩ জুলাই গ্রেনেড হামলার মামলার সম্পুরক চার্জশিটে পুলিশের সাবেক তিন কর্মকর্তাসহ ৩০ জনকে আসামি করা হয়। পূর্বের ২২ আসামিসহ বর্তমানে আসামি সংখ্যা ৫২ জন।
সম্পুরক চার্জশিটের ৩০ আসামির মধ্যে তারেক রহমান, হারিছ চৌধুরী, কায়কোবাদসহ এখনও ১১ জন পলাতক আছেন। আসামি আরিফুল ইসলাম আরিফ জামিনে আছেন।
উল্লেখ্য ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের জনসভায় সন্ত্রাসীরা ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা চালায়। হামলায় আওয়ামীলীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা ও প্রেসিডেন্ট জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জন নির্মমভাবে নিহত হন। সাবেক বিরোধী দলীয় নেতা ও আওয়ামীলীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা অল্পের জন্য প্রানে বেঁচে যান। আহত হন শতাধিত নেতাকর্মী।
এ ঘটনায় মতিঝিল থানার উপপরিদর্শক ফারুক হোসেন, আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল জলিল ও সাবের হোসেন চৌধুরী বাদী হয়ে মতিঝিল থানায় পৃথক ৩টি এজাহার দায়ের করেন।