মন্ত্রী পরিষদ বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব (প্রাক্তন আগৈলঝাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা) গাজী তারিক সালমনের বিরুদ্ধে দায়ের করা মানহানি মামলা ও এর জের ধরে তাকে কারাগারে পাঠানোর ঘটনায় আইনের কোনো ব্যত্যয় হয়েছে কি না সেটা খতিয়ে দেখতে ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি বরিশালে কাজ শুরু করেছে।
বরিশালের প্রাক্তন জেলা প্রশাসক গাজী সাইফুজ্জামান ও প্রাক্তন বিভাগীয় কমিশনার মো. গাউসসহ সংশ্লিষ্টদের কার কী ভূমিকা ছিল তা জানতেই এ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে।
রোববার সকালে তদন্ত কমিটির প্রধান মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব এম বজলুল করিম চৌধুরীরর নেতৃত্বে কমিটির অন্য সদস্যরা বরিশাল এসে পৌঁছেন। এ কমিটিতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ, আইন ও বিচার বিভাগ এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একজনকরে যুগ্মসচিব রয়েছেন।
এরপর সকাল ১০টায় বরিশাল সার্কিট হাউজে যান ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি। সেখানে প্রত্যাহার হওয়া মামলার বাদী জেলা আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক (বর্তমানে সাময়িক বহিষ্কৃত) ও জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট ওবায়েদুল্লাহ সাজু, গাজী তারিক সালমনের আইনজীবী মো. মোখলেসুর রহমান খান ও ঘটনার দিন মেট্রো আদালতে দায়িত্ব পালন করা ৬ পুলিশ সদস্যের সঙ্গে সাক্ষাতের কথা রয়েছে।
বরিশাল জেলা প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমান জানান, তদন্ত কমিটির বরিশালে আসার কথা মন্ত্রী পরিষদ বিভাগ থেকে আগেই তাকে জানানো হয়েছিল। সে অনুযায়ী প্রত্যাহার হওয়া মামলার বাদী অ্যাডভোকেট ওবায়েদুল্লাহ সাজু, গাজী তারিক সালমনের আইনজীবী মো. মোখলেসুর রহমান খান ও ঘটনার দিন মেট্রো আদালতে দায়িত্ব পালন করা ৬ পুলিশ সদস্যকে আজ সার্কিট হাউজে উপস্থিত থাকতে অবগত করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমান আরো জানান, প্রয়োজন মনে করলে তদন্ত কমিটি এর বাইরেও যেকারো সঙ্গে কথা বলতে পারেন।
মেট্রোপলিটন পুলিশের সিনিয়র সহকারী কমিশনার (এসি প্রসিকিউসন) মো. আব্দুর রব জানান, সেদিন মেট্রো আদালতে দায়িত্ব পালন করা ৬ পুলিশ সদস্যকে বরিশাল সার্কিট হাউজে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। তারা এখন সেখানে অবস্থান করছেন।
মন্ত্রী পরিষদ বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব (প্রাক্তন আগৈলঝাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা) গাজী তারিক সালমন জানান, গত ১ আগস্ট মন্ত্রী পরিষদ বিভাগের কনফারেন্স রুমে ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি তার কাছ থেকে সেদিন কী ঘটেছিল শুনেছেন। এর বাইরে বেশি কিছু বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন গাজী তারিক সালমন।
স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণপত্রে বঙ্গবন্ধুর ‘বিকৃত ছবি’ ছাপানোর অভিযোগ এনে গত ৭ জুন আগৈলঝাড়ার সাবেক ইউএনও তারিক সালমনের বিরুদ্ধে পাঁচ কোটি টাকার মানহানির মামলা করেন বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক (বর্তমানে সাময়িক বহিষ্কৃত) ও জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট ওবায়েদুল্লহ সাজু।
বরিশাল সিএমএম আদালতের বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে সমন জারি করে ২৭ জুলাইয়ের মধ্যে আসামিকে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন। আদালতে হাজির হলে তারিক সালমনের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছিলেন বিচারক মো. আলী হোসাইন। দুই ঘণ্টা পর ওই মামলায় বরিশাল সিএমএম আদালত থেকে জামিন পান তারিক সালমন।