১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর যুদ্ধাপরাধী ২৬১ জন কর্মকর্তার তালিকা প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ গণবিচার আন্দোলনের তথ্য অনুসন্ধান কমিটি।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি ভবনের স্বাধীনতা হলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তালিকা প্রকাশ করা হয়।
‘পাকিস্তানি যুদ্ধাপরাধী সেনা কর্মকর্তাদের অপরাধের তথ্য-উপাত্তের প্রাথমিক রিপোর্ট প্রকাশ’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে অনুসন্ধান কমিটির আহ্বায়ক মাহবুব উদ্দিন আহমদ (বীর বিক্রম) পাকিস্তানের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানসহ পাকিস্তানি কর্মকর্তাদের তালিকা তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা সাকুল্যে ২৬১ জনের বিরুদ্ধে তথ্য সংগ্রহ করেছি। এদের মধ্যে ৪৩ জন সিনিয়র পাকিস্তানি জেনারেল, মেজর জেনারেল, ব্রিগেডিয়ার, লেফটেন্যান্ট কর্নেল এবং দু’জন বেসমারিক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাও আছেন। হামুদুর রহমান (পাকিস্তানি সরকারের গঠিত) কমিশন রিপোর্টেই এদের বিরুদ্ধে অনেক সাক্ষ্য প্রমাণ পাওয়া যায়। এছাড়া পাকিস্তানি উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তাদের লিখিত পুস্তকে এই চিহ্নিত সামরিক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে অনেক সাক্ষ্য বিধৃত রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের এ অনুসন্ধান চলবে এবং যুদ্ধাপরাধীদের এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।’
অনুষ্ঠানে নৌপরিবহন মন্ত্রী ও আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ গণবিচার আন্দোলনের আহ্বায়ক শাজাহান খান বলেন, ‘আমরা একটি তদন্ত সেল গঠন করেছিলাম। সেলের প্রধান ছিলেন মাহবুব উদ্দিন আহমদ। এছাড়া সদস্য হিসেবে ছিলেন ক্যাপ্টেন সাহাবুদ্দিন (বীর উত্তম) ও হাবিবুল আলম (বীর প্রতীক)। আমরা সংগঠনের পক্ষ থেকে ২১ দফা দিয়েছিলাম। এর মধ্যে তিনটি দফা বাস্তবায়ন করতে পেরেছি।’
তালিকা প্রকাশের পর এখন কি পদক্ষেপ নেওয়া হবে জানতে চাইলে শাজাহান খান বলেন, ‘এখন আমাদের দায়িত্ব আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার প্রধান আব্দুল হান্নান খানের হাতে এটা হস্তান্তর করা। তারা এটার উপর তদন্ত করে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করবেন।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমরা তাদের এই দেশে এনে বিচার করতে পারব কি না জানি না, কিন্তু বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে এমন চেতনা সৃষ্টি করতে চাই। এই চেতনার উপর ভিত্তি করে পাকিস্তানের পক্ষে এখানে যারা সাফাই গায় তাদের বিরুদ্ধে জনরোষ সৃষ্টি করতে চাই।’