সংলাপে নাগরিক সমাজের পরামর্শ শুনল ইসি

সংলাপে নাগরিক সমাজের পরামর্শ শুনল ইসি

অংশগ্রহণমূলক একাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে নাগরিক সমাজের সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করেছে নির্বাচন কমিশন। সোয়া দুই ঘণ্টার আলোচনায় উঠে আসা সুপারিশগুলো লিপিবদ্ধ করেছে তারা। এগুলো পরে পুস্তিকা আকারে প্রকাশ করে অংশীজনদের এবং সরকারকে দেয়া হবে। তবে যারা আলোচনায় অংশ নিয়েছন তারা পরে লিখিত আকারে আরও বিস্তারিত পরামর্শ দিতে পারবেন।

এদিকে জানা গেছে, নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে সংলাপে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় সেনাবাহিনী মোতায়েনের সুপারিশ করেছেন সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা। আজ সোমবার বেলা ১১টার দিকে সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের থেকে সংলাপ শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদার সভাপতিত্বে এই সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়।

এতে অংশ নিতে বিভিন্ন শ্রেণি পেশায় প্রতিষ্ঠিত মোট ৬০ জনকে আমন্ত্রণ জানায় নির্বাচন কমিশন। তবে এদের মধ্যে বিশিষ্ট কলাম লেখক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক আাবুল মকসুদ সংলাপে অংশ না নিয়ে একট চিঠি দেন নির্বাচন কমিশনের সচিবকে।

সংলাপের জন্য সুশীল সমাজের ৫৯ জন প্রতিনিধিকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও ৩০ জনের মতো উপস্থিত ছিলেন। সেখানে উপস্থিত দুইজন ছাড়া বাকিরা নির্বাচনের সময় সেনা মোতায়েনের পক্ষে ছিলেন। একই সঙ্গে ‘না’ ভোটের কথাও বলেছেন তারা।

বৈঠক শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুল সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।

তিনি বলেন, ‘সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের পক্ষ থেকে বলা হয় ইসির ইমেজ পুনরুদ্ধার করতে। এ ছাড়া গত জাতীয় নির্বাচনের মতো যেন এবার এমনটি না হয় তার জন্য ইসিকে কঠোর অবস্থান নিতে হবে। এ ছাড়া নির্বাচনে না ভোট রাখার পক্ষে মত দেন অধিকাংশরা। নির্বাচনের সময় পোলিং এজেন্টরা যেন স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারেন এবং তাদের নিরাপত্তা দেওয়া হয় সে কথাও বলা হয়েছে।’

গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানিত ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য সংলাপ শেষে বেরিয়ে এসে বলেন, ইসির প্রথম কাজ আস্থা অর্জন। সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে সেনা মোতায়েন করতে হবে। ‘না’ ভোটের বিধানও রাখতে হবে।

তিনি সংলাপে একটি বিশেষ আইনের প্রস্তাব করেছেন বলে জানালেও ওই আইনের বিষয়ে সাংবাদিকদের কিছু বলেননি।

আজ সোমবার বেলা ১১টা থেকে শুরু হওয়া এই সংলাপ চলে বেলা সোয়া একটা পর্যন্ত। সংলাপে নির্বাচন কমিশনের ভাবমূর্তি ফিরিয়ে এনে আস্থার সম্পর্ক তৈরি, নির্বাচনের সময় সেনাবাহিনী মোতায়েন, নির্বাচনী আইন সংস্কার, নির্বাচন কমিশনের আইনি ক্ষমতার প্রয়োগ, না ভোট ফিরিয়ে আনা, ভোটার তালিকা সংশোধনের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা, নির্বাচনী আসনের সীমানা পুনর্নিরাধারণসহ নানা বিষয়ে বক্তব্য তুলে ধরেন অংশীজনেরা। তবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বা অন্য কোনো কমিশনার এ সময় কোনো কথা বলেননি।

সংলাপ থেকে বের হওয়ার পর পরামর্শ দাতারা তারা কী বলেছেন, সেটা গণমাধ্যমকর্মীদেরকে জানান। পরে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা ব্রিফিং করেন। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নের জবাব দেন।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা গণমাধ্যম কর্মীদেরকে বলেন, সংলাপে আসা বিশিষ্টজনরা তাদের নানা বক্তব্য তুলে ধরেছেন। তবে সেখানে কোনো বিতর্ক হয়নি।

এর আগে সংলাপ থেকে বের হয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক তারেক শামসুর রেহমান বলেন, সংলাপে গুরুত্ব পেয়েছে নির্বাচনের সময় সেনা মোতায়েন প্রসঙ্গ। বেশিরভাগ অংশীজন বলেছেন, নির্বাচনে যদি সেনাবাহিনী মোতায়েন করা না হয় তাহলে নির্বাচনটা হয়ত সুষ্ঠু হবে না। এর বাইরে নির্বাচনী ব্যয় নিয়ন্ত্রণ, নির্বাচন কমিশনের আস্থার সম্পর্ক তৈরি করাসহ নানা বিষয়ে কথা হয়েছে।

Featured বাংলাদেশ শীর্ষ খবর