আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ঘোষিত প্রায় ১০০ কোটি ডলারের (৯৮ কোটি ৭০ লাখ ডলার) সুদবিহীন ঋণের প্রথম কিস্তি মঙ্গলবার পাওয়ার কথা থাকলেও তা পাচ্ছে না বাংলাদেশ। আগামীকাল বুধবার আইএমএফ এ অর্থ ছাড় দেবে বলে জানা গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার এ ঋণের প্রথম কিস্তি ছাড় দিয়ে আইএমএফ প্রতিনিধি দল অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সঙ্গে দেখা করার কথা ছিল। কিন্তু পরে এ সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে আগে অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করবে আইএমএফ প্রতিনিধি দল। পরে এ ঋণের অর্থ ছাড় করা হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকে সরকারের হিসাবে প্রথম কিস্তির ১৪ কোটি ১০ লাখ ডলার যোগ হবে। সেই অর্থ সরকার চাহিদা মতো পরে উত্তোলন করতে পারবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও আইএফএফ ঢাকা অফিস সূত্র সোমবার জানিয়েছিল, ১২ এপ্রিল আইএফএমের বোর্ড সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এ ঋণের অনুমোদন করা হয়। আগামী ২৫ এপ্রিল আইএফএফ আনুষ্ঠানিকভাবে এ অর্থ ছাড়ের কথা গণমাধ্যমকে জানাবে।
প্রসঙ্গত, আইএমএফ থেকে ১০ বছরের জন্য এ ঋণ পাচ্ছে বাংলাদেশ। সাড়ে ৫ বছর গ্রেস পিরিয়ড। আর পরের সাড়ে চার বছর তা পরিশোধ করতে হবে। দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক চাপ কাটাতে আইএমএফের বর্ধিত ঋণ প্রকল্পের আওতায় সংস্থাটি এ ঋণের অনুমোদন দিয়েছে।
সূত্র জানায়, অনুমোদিত এ ঋণের অর্থ নিজের প্রয়োজনমতো ব্যবহার করতে পারবে বাংলাদেশ। অবকাঠামো উন্নয়ন, অর্থনৈতিক চাপ মোকাবেলা করে স্থিতিশীলতা আনা, বাজেট বাস্তবায়ন, মুদ্রানীতি বাস্তবায়ন, ৬ষ্ঠ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনাসহ সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে এ অর্থ ব্যবহার করা যাবে।
সূত্র মতে, প্রতি কিস্তিতে ১৪ কোটি ১০ লাখ ডলার করে মোট ৭ কিস্তিতে তিন বছর ধরে ১০০ কোটি ডলারের এ ঋণ দেওয়া হবে।
জানা গেছে, অনুমোদিত এ ঋণের জন্য ১৮ মাস আলোচনার পর আইএমএফ সিদ্ধান্ত নেয়।
আইএমএফ ঢাকা অফিস সূত্র বলছে, দীর্ঘ এই সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর ড. আতিউর রহমান এ ঋণের জন্য আইএমএফের সঙ্গে জোর আলোচনা করে যান। তিনি আইএফএফ ঢাকা অফিসসহ বোর্ডের চাওয়া তথ্যাদি যৌক্তিকভাবে উপস্থাপনও করেন। যার ফলে বাংলাদেশকে এ ঋণ দেওয়া হয়েছে।
একই তথ্য দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর সচিবালয়েল মহাব্যবস্থাপক এএফএম আসাদুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘আইএমএফ থেকে ঋণ পাওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর তৎপর ছিলেন বলেই এটি পাওয়া সম্ভব হয়েছে।’
আইএমএফের বর্ধিত ঋণের আওতায় এটি সবচেয়ে বড় ঋণ, যা ২৪ সদস্যের বোর্ড সভায় সর্বসম্মিতিক্রমে অনুমোদিত হয়।