ইসরাইলে প্রাকৃতিক গ্যাস রপ্তানির চুক্তি বাতিল করেছে মিসর। মিসরের ন্যাচারাল গ্যাস হোল্ডিং কোম্পানির প্রধান এক বিবৃতিতে চুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি রোববার জানান, ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পাদিত গ্যাস রপ্তানি চুক্তি বাতিলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে মিসর। চুক্তি থেকে মিসরের বেরিয়ে আসার কারণ হিসেবে ইসরায়েলকে দায়ী করেছেন তিনি। ইসরায়েল চুক্তি অনুযায়ী গ্যাসের মূল্য পরিশোধ করেনি বলে জানান তিনি।
এদিকে ইসরায়েল হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, চুক্তি বাতিলের এই ঘোষণা উভয় দেশের মধ্যে ইতিপূর্বে সম্পাদিত শান্তি চুক্তিকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
রাজনৈতিক কারণে গ্যাস চুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি বলে দাবি করেছেন গ্যাস কোম্পানির শীর্ষ কর্মকর্তা মোহামেদ শোয়েব। চুক্তি বাতিলের কারণ সম্পূর্ণ অর্থনৈতিক বলে সংবাদমাধ্যমকে জানান তিনি।
ইসরায়েলকে চুক্তির শর্ত ভঙ্গের জন্য দায়ী করে তিনি জানান গত চারমাস ধরে ইসরায়েল গ্যাসের মূল্য পরিশোধ করছে না। তবে ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইগাল পামোর এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন।
সাবেক স্বৈরশাসক মোবারকের শাসনামলে ২০০৫ সালে সম্পাদিত মিসর-ইসরায়েল গ্যাস রপ্তানি চুক্তি প্রথম থেকেই ব্যাপক সমালোচনার সম্মুখীন হচ্ছিলো। পরবর্তীতে মোবারক পদচ্যুত হলে মোবারক বিরোধী গণআন্দোলনের নেতারা এই গ্যাস চুক্তি বাতিলের দাবি জানাতে থাকে ।
সমালোচকরা দাবি করছেন ইসরায়েলকে অবৈধভাবে বাজারদরের থেকে কম মূল্যে গ্যাস দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া এই গ্যাস চুক্তিতে ইসরায়েলকে সুবিধা দেওয়ার বিনিময়ে মোবারক ব্যক্তিগত ভাবে লাভবান হয়েছেন বলেও অভিযোগ ওঠে।
মোবারক বিরোধী গণআন্দোলনের সময় মিসর-ইসরায়েল গ্যাস পাইপলাইন কমপক্ষে ১৪ বার উড়িয়ে দেওয়া হয়। ইসরায়েলের বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহৃত জ্বালানির ৪০ শতাংশই আসে মিসরের রপ্তানি করা গ্যাস থেকে। মিসরের সিদ্ধান্তে ইসরায়েলের বিদ্যুৎ উৎপাদন মারাত্মক ভাবে ব্যাহত হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।