অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকার উৎখাত ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে তুরস্কে আরো আট জন সেনা কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদের মধ্যে চার জন অবসর প্রাপ্ত কর্মকর্তা এবং বাকি চারজন এখনো সেনা বাহিনীতে কর্মরত আছেন। অবসরপ্রাপ্ত চারজনের মধ্যে একজন জেনারেলও আছেন।
জানা গেছে, ১৯৯৭ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি তথাকথিত ‘উত্তরাধুনিক বিপ্লব’ এর নামে সরকার উৎখাত ষড়যন্ত্রের বিষয়ে সেনা বাহিনীর আটক সন্দেহভাজনদের দ্বিতীয় একটি ব্যাচকে কৌঁসুলিরা গত শুক্রবার জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছেন। আর সে সময় তাদের যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরায়েলের সঙ্গে সামরিক সম্পর্কের ব্যাপারে অধিকতর তদন্তের কথাও ভাবা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
তুর্কি দৈনিক হুররিয়াতের খবরে জানা গেছে, শুক্রবার সন্দেহভাজন আট সেনা কর্মকর্তাকে বিচারিক কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেওয়া হয়। তখন কৌঁসুলিরা চারজনকে আটকের জন্য আদালতের কাছে আবেদন করেন যাদের বিরুদ্ধে মামলা চলচিল।
বাকি চার জনের মধ্যে দু’জন অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল গত রাত পুলিশ সদরদপ্তরে আটক ছিলেন। তারা সেখানেই রাত কাটিয়েছেন।
এখনো সেনাবাহিনীতে কর্মরত আটক চার জনের সবাই সাধারণ সৈনিক। বর্তমানে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
উল্লেখ্য, গত সপ্তাহে একই অভিযোগে ১৮ জনকে আটকের পর এখন আরো ১২ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা ঝুলছে।
আটক অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল ওজকাসনাক ‘উত্তরাধুনিক বিপ্লব’ চেষ্টার অন্যতম হোতা। প্রশাসনে সেনা বাহিনীর বাড়াবাড়ি রকমের হস্তক্ষেপের কারণেই পরে তৎকালীন (১৯৯৭ সাল) প্রধানমন্ত্রী নেকমেতিন এরবাকান পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। সেক্যুলার তুরস্ক হুমকির মুখে পড়ছে এই আশঙ্কায় সে সময় ব্যাপকভাবে প্রচারণা চালায় সেনাবাহিনী।
ওজকাসনাক সে সময় জেনারেল স্টাফের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। সেনাবাহিনীর নির্দেশনা অনুযায়ী সংবাদ পরিবেশন করতে এবং মতামত দিতে মিডিয়া মালিক, সম্পাদক এবং কলাম লেখকদের বাধ্য করেছিলেন- ওজকাসনাকের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ রয়েছে।
তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী রেচেপ তাইয়েব এরদোগান নেতৃত্বাধীন জাস্টিস অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট পার্টি ২০০২ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই দেশটির রাজনীতিতে সেনাবাহিনীর নাকগলানো বন্ধের পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
সন্ত্রাসের দায়ে তুরস্কের সেনাবাহিনীর সাবেক চিফ অব জেনারেল স্টাফ ইলকার বাসবাগের বিচার চলছে। ২০০৩ সালের তিনি এর্দোগান সরকারকে উৎখাতের চেষ্টা করেছিলেন।