গ্রাম ও শহরে কোনো বৈষম্য থাকবে না : প্রধানমন্ত্রী

গ্রাম ও শহরে কোনো বৈষম্য থাকবে না : প্রধানমন্ত্রী

গ্রাম ও শহরের মধ্যে যেন কোনো বৈষম্য না থাকে সেদিকে খেয়াল রেখে কাজ করতে জেলা প্রশাসকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, তৃণমূলের উন্নতি আমাদের মূল লক্ষ্য। একটি মানুষও না খেয়ে থাকবে না, গৃহহীন থাকবে না, এ লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে যেতে হবে। গ্রাম ও শহরের মধ্যে বৈষম্য যাতে না থাকে সেই বিষয়টি মাথায় রেখে কাজ করবেন।

মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত তিন দিনব্যাপী জেলা প্রশাসক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। এ সম্মেলনে ২২টি অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে।

জেলা প্রশাসকদের প্রতি সন্তোষ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, উদ্ভাবনীর ওপর গুরুত্ব দেবেন। সমাজ থেকে দারিদ্র্য বিমোচনের যে চিন্তা-ভাবনা আপনারা করছেন, তাতে আমি খুশি। এ ধরনের ভাবনা দারিদ্র্য বিমোচনে সহায়ক হবে। জেলাকে ভিক্ষুকমুক্ত করতে যারা নিজেদের একদিনের বেতন দিয়ে ট্রাস্ট ফান্ড গঠন করেছেন, তা অব্যাহত রাখলে ও জনকল্যাণে কাজ করলে সেই ফান্ডে প্রধানমন্ত্রীর তহবিল থেকে আমিও সহযোগিতা করতে চাই।

তিনি বলেন, একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের গরিব-দুঃখী মানুষকে স্বাবলম্বী করতে হবে। পূর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্য বৈষম্যের কারণে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু দেশ স্বাধীন করেন। বাংলাদেশ আজ স্বাধীন বলেই আপনারা বড় পদে চাকরি করতে পারছেন।

এ মসয় প্রধানমন্ত্রী ১৯৫৬ সালের ডন পত্রিকার একটি আর্টিকেল থেকে সামরিক ও বেসামরিক ক্ষেত্রে পাকিস্তানি ও বাঙালি অফিসারদের বৈষম্যের চিত্র তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, জাতির জনক আমাদের একটি সংবিধান দিয়েছেন। এই সংবিধানেই বলে দেয়া আছে কীভাবে দেশ পরিচালনা হবে। তিনি বলেন, ৭৫-এ যদি জঘন্য হত্যাকাণ্ড না ঘটতো তাহলে ১০ বছরের মধ্যে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার একটি উন্নত দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতো। ২১ বছর ধরে বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্র হিসেবে পরিণত করার জন্য ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত দেশের মানুষ সুখের দেখা পেয়েছিল। কিন্তু এরপর আবার দেশের মানুষের জীবনে দুর্যোগ নেমে আসে।

তিনি বলেন, বিএপির লক্ষ্য ছিল দেশ যেন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ না হয়। এটা হলে বিদেশি সাহায্য পাওয়া যাবে না। তারা জাতিকে ভিক্ষুকের জাতিতে পরিণত করতে চেয়েছিল। আমরা ভিক্ষুকের জাতি হতে চাই না। নিজেরা উন্নতি করে বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে বাঁচতে চাই।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ যখন সরকার গঠন করেছে তখনই এ দেশের মানুষ কিছু পেয়েছে। গত ৮ বছর ধারাবাহিকভাবে ক্ষমতায় থাকার কারণে দেশের উন্নয়ন জনগণের চোখে পড়ছে। ২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসেই আমরা দীর্ঘ পরিকল্পনা গ্রহণ করি, তাই দেশ আজ এগিয়ে যাচ্ছে। দেশের ৫ কোটি মানুষ দরিদ্র থেকে নিন্ম মধ্যবিত্তে এসে পৌঁছেছে।

তিনি বলেন, সরকারি কর্মচারীদের ১২৩ ভাগ বেতন বাড়ানো হয়েছে। কোনো প্রকার দুর্নীতি করবেন না এবং দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেবেন না। উন্নয়ন ফান্ডের টাকা যথাযথ ভাবে কাজে লাগাবেন। দেশকে ডিজিটাল করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, উন্নয়নের জন্য একশটি শিল্পাঞ্চল করা হয়েছে। এলাকাভিত্তিক কাঁচামালের ওপর ভিত্তি করে সেই অঞ্চলে শিল্প স্থাপনের অনুমতি দিবেন। যেখানে সেখানে শিল্প স্থাপন করে জমি নষ্ট করবেন না।

সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন, জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, জনপ্রশাসনের প্রতিমন্ত্রী ইসমত আরা সাদেক,
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মূখ্যসচিব ড. কামাল আবু নাসের চৌধুরী।

এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, মন্ত্রিপরিষদসচিব শফিউল আলম, বিভাগীয় কমিশনারদের মধ্যে ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনার জিএম সালেহ উদ্দিন, জেলা প্রশাসকদের পক্ষ থেকে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক বেগম উম্মে সালমা তানজিয়া, চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক আবদুস সবুর মন্ডল, যশোরের জেলা প্রশাসক মো. আশরাফ উদ্দিন।

বাংলাদেশ