যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষস্থানীয় সংবাদপত্র ওয়াশিংটন টাইমস সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের জন্য বিএনপিকে অভিযুক্ত করেছে। পত্রিকায় প্রকাশিত এক নিবন্ধে বিএনপিকে একটি সন্ত্রাসী দল হিসাবে উল্লেখ করে কানাডার একটি উচ্চ আদালতের দেয়া সাম্প্রতিক এক রুলিংয়েরও উল্লেখ করা হয়।
“বাংলাদেশে রাজনীতির নামে সন্ত্রাস” শিরোনামে ১৯ জুলাই পত্রিকায় প্রকাশিত এক বিশ্লেষণে সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের জন্য বিএনপির সমালোচনা করে বলা হয়, এই দলটি ২০১৪ সালের সাধারণ নির্বাচন বজর্ন করে সংসদে অবস্থান হারায়। তখন তারা জামায়াতে ইসলামীকে সঙ্গে নিয়ে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালায়। বিএনপি’র এই সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে দু’শতাধিক লোক প্রাণ হারায় এবং এক হাজার একশত’র অধিক লোক আহত হয়। বিএনপি’র সন্ত্রাসীরা রাজপথে হাজার হাজার গাড়ি পুড়িয়ে দেয়। এতে বলা হয়, এটি কোন বিরোধী দলের কর্মকান্ড নয়, এটি ছিল একটি সন্ত্রাসী সংগঠনের কর্মকান্ড।
নিবন্ধের শিরোনামের পাশে বিএনপি’র দলীয় পতাকা এবং বাংলাদেশের জাতীয় পতাকায় অগ্নিসংযোগের একটি ইলাস্ট্রেশনও দেখানো হয়।
বিশ্লেষণে বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সরকারের ব্যবস্থা গ্রহণের কারণে কিছু পশ্চিমা মিডিয়া ও বেসরকারি সাহায্য সংস্থার সমালোচনাকে উদ্দেশ্যপ্রনোদিত বলে উল্লেখ করা হয়েছে। নিবন্ধে বিরোধী দলের সদস্যদের এ ধরনের অপরাধমূলক কর্মকান্ডকে সম্পূর্ণ অগনতান্ত্রিক এবং আইনের শাসনের পরিপন্থি বলে উল্লেখ করা হয়।
নিবন্ধে একটি অভিবাসন মামলায় কানাডার একটি উচ্চ আদালতের দেয়া রুলিং এর উল্লেখ করে বলা হয়, বাংলাদেশে বিএনপি আবারো এ ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে লিপ্ত হতে পারে। নিবন্ধে সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়িত থাকার দায়ে কানাডায় এক বিএনপি নেতার স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি না দেয়ার সেদেশের ইমিগ্রেশন কর্মকর্তা জজ হেনরী এস ব্রাউনের সিদ্ধান্তের কথাও উল্লেখ করা হয়।
পত্রিকায় আদালতের এই রুলিংকে বাংলাদেশে বিএনপি’র সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের শিকারদের জন্য একটি সুসংবাদ হিসাবে বর্ণনা করা হয়। এতে বলা হয়, কানাডার আদালতর রুলিং এ ২০০১ সালে বাংলাদেশের সাধারন নির্বাচনে জয়লাভের পর বিএনপি’র সন্ত্রাসী ও বোমা হামলার ঘটনা বিশেষ করে ধর্মীয় সংখ্যা লঘুদের ওপর হামলার ঘটনাও উল্লেখ করা হয়। এতে বলা হয়, ২০০১ সালের সাধারন নির্বাচনে বিএনপি জয়লাভের পর প্রায় এক মাসব্যাপী হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রীষ্টাণ ও আওয়ামীলীগ সমথর্কদের ওপর বেপরোয়া সন্ত্রাস চালায়।
২০০৮ সালের সাধারন নির্বাচনে আওয়ামীলীগের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির উল্লেখ করে নিবন্ধে বলা হয়, জয়লাভের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৭১ সালের যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করান। তার এই পদক্ষেপ প্রশংসিত হয় এবং ক্ষমতায় তার টিকে থাকার ক্ষেত্রে সহায়ক শক্তি হিসাবে কাজ করে। নিবন্ধের মন্তব্যে বলা হয়, জামায়াত জোটের শরীক দল হওয়ায় এই বিচার প্রক্রিয়ায় বিএনপিকে কিছুটা বিব্রতরকর অবস্থার মুখোমুখি হতে হয়। এতে বলা হয়, ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়ে বাংলাদেশে ৩০ লাখ লোক শহীদ হয়। জামায়াতের নেতা-কর্মীরা সে সময়ে নৃশংস হত্যাকান্ডে অংশ নেয়। তারা মানবতা বিরোধী অপরাধ করে। এতে আরো বলা হয়, যুদ্ধাপরাধের বিচারের জন্য বাংলাদেশ সরকার যখন একটি আর্ন্তজাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রইবুনাল গঠন করে, তখন বিএনপি ও জামায়াত এই ট্রাইবুনালের বিচার কাজে বাধা দেয়ার চেষ্টা করে। ২০১৩ ও ২০১৪ সালে তারা দেশব্যাপী হরতাল ধর্মঘটের মতো কর্মসূচী দিয়ে অর্থনৈতিক কর্মকান্ড ক্ষতিগ্রস্থ করে।
পত্রিকায় ইউরোপীয় পার্লামেন্টে এই সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়ে জামায়াত থেকে দুরে থাকতে বিএনপির প্রতি আহবান জানিয়ে একটি প্রস্তাব গ্রহনের কথাও উল্লেখ করা হয়।
নিবন্ধে বলা হয়, বিএনপিকেই এখন সিদ্ধান্ত নিতে হবে, তারা কি জামায়াতের সঙ্গে থাকবে, না বাংলাদেশের গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রায় শামিল হবে।