রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ অন্যের অসুবিধা না করে ভিভিআইপিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সের (এসএসএফ) প্রতি আহবান জানিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি বুধবার সন্ধ্যায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) এসএসএফ’র ৩১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠানে বলেন, আপনাদের সতর্ক থাকতে হবে যাতে দায়িত্ব পালনের সময় সাধারণ মানুষ হয়রানির শিকার না হন। তিনি তাদের সাধারণ মানুষের সাংবিধানিক অধিকারের কথাও স্মরণ করিয়ে দেন।
রাষ্ট্রপতি হামিদ বলেন, কোন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি নিরাপত্তাজনিত কারণে যাতে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে না যায় তা আপনাদের নিশ্চিত করতে হবে। বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি ও শ্রদ্ধাভাজন ব্যক্তিরা যাতে স্বাচ্ছন্দ্যে অংশগ্রহণ করতে পারে তাও নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি নিরাপত্তা ও জনসংযোগের বিষয়টি যুগপৎভাবে মাথায় রাখার জন্য এসএসএফ সদস্যদের উপদেশ দেন।
ভিভিআইপি’দের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে এসএসএফ’র অবদানের কথা স্মরণ করে রাষ্ট্রপতি হামিদ বলেন, ১৯৮৬ সালের ১৫ জুলাই যাত্রার শুরু থেকে এ বাহিনী বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সর্বাত্মক পেশাদারিত্বসহ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি বর্তমান বিশ্ব নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে একটি বহুমুখী সমস্যা হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, ‘জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পূর্ণ নিরাপত্তা দেয়ার দায়িত্ব একই সঙ্গে চ্যালেঞ্জিং ও দুরূহ হয়ে পড়েছে।’
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ নতুন ধরনের নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় এসএসএফ সদস্যদের সতর্ক থাকা এবং সময়োপযোগী প্রশিক্ষণ গ্রহণের পাশাপাশি বাস্তবসম্মত পরিকল্পনা গ্রহণ করে সদা প্রস্তুত থাকার পরামর্শ দেন।
আবদুল হামিদ আশা প্রকাশ করেন যে, এই বাহিনী তার দায়িত্ব পালনে আরো বেশি দক্ষ হবে। কিরি নিñিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সকল সহযোগী সংস্থার সঙ্গে সুসমন্বয় করার প্রয়োজনীয়তার ওপরও গুরুত্বারোপ করেন।
তিনি এসএসএফ সদস্যদের কেবলমাত্র ভিভিআইপিদের দৈহিক নিরাপত্তায় নিয়োজিত না রেখে বরং বিভিন্ন রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক প্রক্রিয়া, গণতন্ত্র ও এর অনুশীলন, আন্তঃধর্ম ও আন্তঃসম্প্রদায় সম্পর্ক এবং বৈদেশিক সম্পর্কের বিষয়সমূহসহ অন্যান্য কাজের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার পরামর্শ দেন।
রাষ্ট্রপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘ভিশন-২০২১’ ও ‘ভিশন-২০৪১’ বাস্তবানের জন্য সকলের প্রতি আহবান জানান।
প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক এবং নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল মোহাম্মদ নিজামউদ্দিন আহমেদসহ সশস্ত্র বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। এতে রাষ্ট্রপতিকে স্বাগত জানিয়ে বক্তব্য রাখেন এসএসএফ’র মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. শফিকুর রহমান।
প্রেসিডেন্সিয়াল সিকিউরিটি ফোর্স (পিএসএফ) হিসেবে ১৯৮৬ সালে এই বিশেষ নিরাপত্তা ইউনিটের যাত্রা। পরবর্তীতে রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকার প্রধান এবং ভিভিআইপি বিদেশী সম্মানিত অতিথিদের নিরাপত্তার দায়িত্ব দিয়ে এর নামকরণ করা হয় এসএসএফ।
পরে রাষ্ট্রপতি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও নৈশভোজে অংশ নেন।