বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি বিকৃত করার অভিযোগে ৫ কোটি টাকার মানহানির মামলায় বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার সাবেক নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) গাজী তারিক সালমন জামিন পেয়েছেন। এর আগে সকালে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বরিশালের আদালত।
বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বরিশাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করেন গাজী তারিক সালমন।
আদালতের বিচারক মো. আলী হোসাইন তখন তার জামিনের আবেদন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এরপর দুপুর দেড়টার দিকে গাজী তারিক সালমনের আইনজীবী মো. মোখলেসুর রহমান জামিনের বিষয়টি পুনর্বিবেচনার জন্য আবেদন করেন।
আদালতের বিচারক মো. আলী হোসাইন আবেদনটি গ্রহণ করে বিবেচনায় আগামী ২৩ জুলাই মামলার পরবর্তী দিন ধার্য করে তার অন্তবর্তীকালীন জামিন মঞ্জুর করেন। গাজী তারিক সালমন বর্তমানে বরগুনা সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।
গত ৭ জুন একই আদালতে জেলা আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক ও জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট সৈয়দ ওবায়েদ উল্লাহ সাজু বাদী হয়ে এ মামলা করেন। মামলাটি তখন আমলে নিয়ে নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) গাজী তারিক সালমনের বিরুদ্ধে সমন জারির নির্দেশ দেন আদালত।
মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী শেখ আ. কাদের মামলার আরজির বরাত দিয়ে জানান, গত ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে উপজেলা প্রশাসন যে কর্মসূচির আয়োজন করে আমন্ত্রণপত্র ছাপানো হয়। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি সংবলিত ওই আমন্ত্রণপত্রের কার্ডে বঙ্গবন্ধুর যে ছবি ব্যবহার করা হয় তা ছিল বিকৃত এবং কার্ডের শেষের পাতায়।
ওই আমন্ত্রণপত্র হাতে পাওয়ার পর সর্বত্র নিন্দার ঝড় উঠে তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) গাজী তারিক সালমনের বিরুদ্ধে। ছবি বিকৃত করে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি অসম্মানিত করা হয়েছে। এ ঘটনায় ৫ কোটি টাকার মানহানির মামলা করা হয়।
মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী শেখ আ. কাদের , ইউএনও গাজী তারিক সালমন পরিকল্পিতভাবে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। তার জামিনের সিদ্ধান্ত বিচার অঙ্গনের ওপর থেকে সাধারণ মানুষের আস্থা হারাবে। বিষয়টি নিয়ে জেলা ও দায়রা জজের সঙ্গে কথা বলা হবে।
আদালতের বেঞ্চ সরকারী (পেশকার) শাখাওয়াত হোসেন জানান, আসামি পক্ষের আইনজীবী শুনানির সময় প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও প্রমাণাদি আদালতে উপস্থাপন করতে না পারেননি। এ কারণে কিছু সময়ের জন্য আদালত তার জামিন না মঞ্জুর করেন। পরে উপযুক্ত প্রমাণাদি উপস্থাপন করায় আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেন।
এ বিষয়ে ইউএনও গাজী তারিক সালমন জানান, গত ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ১৭ মার্চ উপজেলা প্রশাসন শিশু শিক্ষার্থীদের নিয়ে বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ নামে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন করে।
চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার পুরস্কৃতদের হাতে আকা ছবি ব্যবহার করে ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণপত্র ছাপানোর ঘোষণা দেয়া হয়েছিল। সে অনুযায়ী পুরস্কৃতদের হাতে আকা ছবি ব্যবহার করে ওই আমন্ত্রণপত্র ছাপানো হয়।
এই মামলার পর সমালোচনার মুখে এক মাস আগে আগৈলঝাড়ার ইউএনও গাজী তারিক সালমানকে বরগুনা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার পদে বদলি করা হয়।